চলছে কর্মসূচি। নিজস্ব চিত্র
ফেসবুকে শুধুই আড্ডা বা স্টেটাস আপডেট নয়। বরং এই ‘গ্রুপে’র সদস্যেরা এই প্রচলিত ফেসবুক-আলাপের থেকে বেরিয়ে আসানসোলের কয়েক জন পরিকল্পনা করেছিলেন, অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য শীতবস্ত্র-সহ নানা ধরনের পোশাক সংগ্রহের। তার পরে রবিবার সকালে তা বিলিয়ে দেওয়া হল সাধারণ মানুষকে। গোটা পরিকল্পনাটির পোশাকি নাম, ‘ব্রাত্যজনের সুখের হাট।’
অর্ক মণ্ডল, প্রিয়াঙ্কা দত্ত, নব সেন-সহ সত্তর জন নানা বয়সের, নানা পেশার মানুষ ফেসবুকে তৈরি করেছেন ‘ইমোশন’ নামে একটি ‘গ্রুপ’। এঁদের কেউ কলেজ পড়ুয়া, কেউ সদ্য চাকরি পেয়েছেন, কেউ বা আবার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী। ওই গ্রুপের সদস্যরা এ দিন সকাল হতেই বার্নপুরের বারি ময়দানে ম্যারাপ বেঁধে সামনের টেবিলে সাজিয়ে রাখেন নানা ধরনের পোশাক। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভিড়় জমে গেল। লাগোয়া নানা বস্তি থেকে বাসিন্দারা লাইন দিলেন। আট থেকে আশি, সকলকেই দেখা গেল, পছন্দসই পোশাক বেছে নিতে। তাঁদেরই কয়েক জন জানালেন, শীতে খুব কষ্ট পাচ্ছিলেন। এই উদ্যোগের ফলে কিছুটা হলেও সমস্যা মিটল।
কাপড় গোছানোর ফাঁকে প্রিয়াঙ্কা, অর্করা জানান, ফেসবুকের মাধ্যমেই দিন পনেরো আগে সকলে যোগাযোগ করেন। গ্রুপের সদস্যরা এক জায়গায় হন। ঠিক হয়, পোশাক সংগ্রহ করতে হবে। অর্ক বলেন, ‘‘আমরা নিজেরাই গাড়ি নিয়ে পরিচিত বন্ধু, আত্মীয়দের বাড়়ি থেকে পুরনো, কিন্তু ব্যবহারযোগ্য পোশাক সংগ্রহ করেছি। অনেকে আবার নিজেরাই খবর পেয়ে দিয়ে গিয়েছেন’’। কর্মসূচি চলার মাঝেই বেশ কিছু পোশাক নিয়ে এলেন অদিতি মুখোপাধ্যায়। বার্নপুরের রিভারসাইডের বাসিন্দা অদিতিদেবী বলেন, ‘‘পড়শির কাছে খবর পেয়েই ছুটে এসেছি।’’ কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুতে থাকা, সরকারি চাকুরে ব্রতীন বসুও বলেন, ‘‘আজকের এই কর্মসূচিতে যোগ দিতেই ছুটে এসেছি’’।
কী ভাবে শুরু হল ‘ইমোশন’-এর পথচলা? ‘গ্রুপে’র প্রবীণতম সদস্য ষাটোর্ধ্ব নব সেন জানান, প্রথমে কয়েক জন পরিচিত মিলে ২০১৩ সালে ‘আসানসোল’ নামে একটি গ্রুপ তৈরি করা হয়। দিন কয়েক পরে ভাবলেন, সমাজের জন্য কিছু করা দরকার। সঙ্গে গ্রুপের নাম বদলে হয়, ‘ইমোশন’। তার পরে কখনও শহর সাফাই, কখনও বা এ ভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো, সবেতেই এগিয়ে আসেন গ্রুপের সদস্যরা।
ফেসবুক-সহ সোশ্যাল মিডিয়াকে এ ভাবে কাজে লাগানোয় খুশি শহরের নাগরিকেরাও। এর আগে পথশিশুদের মুখে শুধু খাবার তুলে দেওয়ার লক্ষ্যে খাবারের অপচয় বন্ধের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করেছিলেন আসানসোলের একটি কলেজের শিক্ষক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy