জট তো কাটলই না, উল্টে এজলাস বয়কটের পাশপাশি জামিনদার হিসেবে সই না করার সিদ্ধান্ত নিলেন বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীরা। বৃহস্পতিবার বার কাউন্সিলের প্রতিনিধিদের সামনে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, সিজেএম সঞ্জয়রঞ্জন পাল বারে অসে দুঃখপ্রকাশ করলে তবেই অচলাবস্থা কাটার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি সিজেএম।
শুনানি পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ৩০ অগস্ট থেকে সিজেএমের এজলাস বয়কট করছেন আইজীবীরা। সিজেএমের কর্মপদ্ধতি ও ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ তুলে জেলা জজ ও বার কাউন্সিলকে চিঠিও পাঠান তাঁরা। বুধবার জেলা জজ কুন্দনকুমার কুমাই দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন। তারপরে এ দিন রাজ্য বার কাউন্সিলের সঙ্গে বৈঠকে মনে হয়েছিল অচলাবস্থা কেটে যাবে। কিন্তু দুপুরে বার কাউন্সিলের সহ-সভাপতি প্রসূন দত্তের নেতৃত্বে পাঁচ জনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আড়াই-তিন ঘণ্টা বৈঠকের পরেও সমাধান মিলল না। এ দিন বৈঠকে হাজির ৭৫ শতাংশ আইনজীবীর মত মেনে, সিজেএমর এজলাস বয়কটের সিদ্ধান্তে অটল থাকে বার অ্যাসোসিয়েশন।শুধু তাই নয়, আইনজীবীরা সিজিএম এজলাসে ‘বেল বন্ড’ পেশ করবেন না বলেও সিদ্ধান্ত নেন। এর ফলে, বিদ্যুৎ-মাদক সংক্রান্ত বিশেষ আদালত এবং জজ কোর্টে জামিন পাওয়া অভিযুক্তরাও ‘জামিনদার’ না-পেয়ে জেলেই আটকে থাকবেন।
জানা গিয়েছে, এ দিন সিজেএম আদালতের অচলাবস্থা কাটিয়ে ফেলতে আইনজীবীদের অনুরোধ করেন বার কাউন্সিলরের প্রতিনিধিরা। আইনজীবীদের অধিকাংশই তাঁদের জানান, বুধবার জেলা জজের সঙ্গে বৈঠকের পরেও সিজেএম একই আচরণ করে চলেছেন। এজলাসে অপমানিত করার জন্য কলকাতা ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তাঁকে টানা কয়েক মাস বয়কট করে রেখেছিলেন আইনজীবীরা। এ রকম অবস্থায় সিজেএমকে বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কয়েকজন প্রবীণ আইনজীবী অবশ্য সিজেএমকে আরও কিছু দিন সময় দেওয়ার দাবি তোলেন। কিন্তু বেশির ভাগ আইনজীবীদের মতের কাছে প্রবীণদের দাবি চাপা পড়ে যায়। বার কাউন্সিলরের সহ সভাপতি প্রসূন দত্ত জানান, সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের বাইরে তাঁরা যেতে পারেন না। এরপর জেলা জজ ও সিজেএমের কাছে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনজীবীদের আপত্তিতে শেষ পর্যন্ত বিচারকদের সঙ্গে দেখা করেননি তিনি। বৈঠক শেষে প্রসূনবাবু বলেন, ‘‘সিজেএমের ব্যবহার নিয়ে আইনজীবীদের মনে ক্ষোভ রয়েছে। সেখান থেকেই এজলাস বয়কটের ঘটনা ঘটেছে। আমি বার অ্যাসোসিয়েশনকে বয়কট তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।’’
কিন্তু আদালতকে কার্যত ‘অচল’ করে বিচারপ্রার্থীদের হয়রান করছেন না আইনজীবীরা? বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা এ নিয়ে কোনও কথাই বলতে চাননি। তবে কয়েকজন আইনজীবীর দাবি, ‘‘আমরা আর্থিক ক্ষতি মেনে নিয়ে বিচারপ্রার্থীদের স্বার্থেই বয়কটের রাস্তায় যেতে বাধ্য হয়েছি।’’ রাজ্য ল’ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশনকেও চিঠি দিয়ে সহযোগিতা করার আবেদন জানানো হবে বলে জানান তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy