Advertisement
০৫ মে ২০২৪

পাঁচ দিন বিদ্যুৎহীন রূপনারায়ণপুর

মাস ছয়েক আগে পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়েছে কেবল্‌স কারখানা। তবে আবাসনে রয়ে গিয়েছেন প্রাক্তন কর্মী-পরিবারের প্রায় সতেরোশো বাসিন্দা।

বিদ্যুৎহীন: রূপনারায়ণপুরে হিন্দুস্থান কেবলসের আবাসন। —নিজস্ব চিত্র ।

বিদ্যুৎহীন: রূপনারায়ণপুরে হিন্দুস্থান কেবলসের আবাসন। —নিজস্ব চিত্র ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৭ ০১:৫২
Share: Save:

পাঁচ দিন ধরে এলাকা বিদ্যুৎহীন। পাম্প না চলায় জলের সঙ্কট। দোকানপাট, ব্যাঙ্ক, ডাকঘরও কার্যত বন্ধ। সন্ধে নামলেই ঘুটঘুটে অন্ধকার। পশ্চিম বর্ধমানের রূপনারায়ণপুরে হিন্দুস্তান কেবল্‌স কারখানার আবাসন এলাকায় এখন এমনই পরিস্থিতি।

মাস ছয়েক আগে পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়েছে কেবল্‌স কারখানা। তবে আবাসনে রয়ে গিয়েছেন প্রাক্তন কর্মী-পরিবারের প্রায় সতেরোশো বাসিন্দা। ওই আবাসন ঘিরে গড়ে ওঠা বাজার, সাতটি প্রাথমিক ও দু’টি মাধ্যমিক স্কুলে ডিভিসি-র মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করেছিল কারখানাই। কিন্তু সংস্থার প্রায় ১৬৮ কোটি টাকা বিল বকেয়া। বকেয়া না পেয়ে গত শুক্রবার ভোরে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে দেয় ডিভিসি। তার পর থেকে এলাকা নিষ্প্রদীপ।

এই অবস্থায় রূপনারায়ণপুর থেকে চিত্তরঞ্জন রেল কলোনি যাওয়ার একমাত্র রাস্তায় সন্ধ্যা নামলে সমাজবিরোধীদের উৎপাতের ভয় পাচ্ছেন বাসিন্দারা। স্কুলগুলিতে ক্লাস চলছে গরমের মধ্যেই। একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক গোবিন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ছাত্রেরা জল পাচ্ছে না। সমস্যা কবে মিটবে, জানি না।’’ কর্মী আবাসনে থাকেন অনেক শিক্ষকও। তাঁদেরই এক জন অরুণকুমার দুবে বলেন, ‘‘আবাসনে জল নেই। বহু টাকা দিয়ে জল কিনে খেতে হচ্ছে। এ ভাবে অন্ধকারেও থাকা সম্ভব নয়। ভাড়া বাড়িতে উঠে যাচ্ছি।’’

পরিষেবা বন্ধ ব্যাঙ্ক, ডাকঘরেও। পাঁচ দিন ধরে এটিএম বন্ধ। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার কৌশলকিশোর মিশ্র জানান, সমস্যার কথা জানিয়ে বিকল্প ব্যবস্থার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন। ডাকঘরের আসানসোল ডিভিশনের সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট অমিত লাহিড়িও জানান, ওই কারখানা চত্বরের ডাকঘরটি তাঁরা অন্যত্র সরাবেন।

কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে কর্তৃপক্ষের কেউ এলাকায় নেই। কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প প্রতিমন্ত্রী তথা এলাকার সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় বলেন, ‘‘কারখানাটি মৃত। তার আবাসনে অনেকে বেআইনি ভাবে আছেন। সংযোগ তো কাটা হবেই।’’

আবাসনের বাসিন্দারা প্রশাসনের কাছে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সংযোগের ব্যবস্থা করার আবেদন জানিয়েছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সে জন্য ডিভিসি কর্তৃপক্ষের ‘নো-অবজেকশন’ শংসাপত্র প্রয়োজন। পশ্চিম বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ব্যাপারটা নিয়ে ডিভিসি-র সঙ্গে কথা বলেছি। ওরা ‘নো-অবজেকশন’ দিয়ে দেবে বলেছে। তবে নতুন করে বিদ্যুৎ আসার প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE