বিশ্ববঙ্গ সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
দু’দিনের বিশ্ববঙ্গ সম্মেলন (বিজিবিএস) শেষে রাজ্যে সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে বলে ইতিমধ্যে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৮৮টি মউ-চুক্তি হয়েছে। রাজ্যেকে শিল্পের জন্য ‘উর্বর ক্ষেত্র’ বলেও দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় এনটিপিসির হাতে থাকা তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য নেওয়া জমির ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। জমিদাতাদের দাবি, ১৭ বছর ধরে জমি পড়ে রয়েছে। বিনিয়োগের এত বড় ক্ষেত্র থাকলেও তা নিয়ে কোনও দিশা দেখা যাচ্ছে না।
এনটিপিসির দাবি, রাজ্যে বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম বা পিডিসিএলের কাছ থেকে ৫৮৭ একর জমি পাওয়া গিয়েছিল। দেড় দশক পার হওয়ার পরেও রাজ্যের জমি-নীতি মেনে সরাসরি জমি কেনায় বাধা পড়েছে, আবার কোন খনি থেকে কয়লা পাওয়া যাবে তা নিয়েও সংস্থা অনিশ্চিত। সে জন্য ওই জমিতে আর তাপবিদ্যুৎ গড়তে পর্ষদ আর আগ্রহী নয় বলে জানিয়েছে। জমি ফেরত চেয়ে রাজ্যের তরফে এনটিপিসিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। জমির দাম-সহ নানা বিনিয়োগ নিয়ে ৩৭২ কোটি টাকা চেয়েছে এনটিপিসি। তার পরে যৌথ ভাবে জমির চৌহদ্দি মাপা হয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়াও ধীরে চলছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এনটিপিসির এক কর্তা বলেন, “লগ্নির টাকা সুদ সহ ফেরত চাওয়া হয়েছে। সেই টাকা নিয়েই দর কষাকষি চলছে।” রাজ্য সরকার এ নিয়ে এনটিপিসিকে এখনও প্রশাসনিক কোনও জবাব দেয়নি।
প্রস্তাবিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকার জমিদাতাদের বড় অংশের দাবি, শিল্প গড়ে উঠবে, এই আশাতেই ১৭ বছর আগে জমি দেওয়া হয়েছিল। এনটিপিসির মতো সংস্থা আগ্রহ হারানোর পরে রাজ্য সরকার জমি নেওয়ার বার্তা দেয়। এ বার শিল্প সম্মেলনে কাটোয়া তাপবিদ্যুতের জায়গা নিয়ে দিশা দেখা যাবে বলে তাঁরা আশা করেছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা জীবনকৃষ্ণ সাহা, লালু ঘোষ, অনিল চন্দ্র দাসরা বলেন, “এ রাজ্যে শিল্পে প্রচুর টাকা বিনিয়োগ হবে বলে সংবাদমাধ্যমে দেখলাম। আমাদের এখানে শিল্পের জন্য জমি পড়ে রয়েছে। সে নিয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে বলে জানি না। আমরা চাই, ফাঁকা জমিতে কিছু একটা হোক। তাহলে কর্মসংস্থানও হবে।”
নবান্ন সূত্রে জানা যায়, ওই জমি এখনও রাজ্যের হাতে আসেনি। স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে বিনিয়োগকারীদের লগ্নি করা নিয়ে আহ্বান করা অসুবিধার। তবে কয়েক মাস আগে, কারিগরি শিক্ষা সংক্রান্ত বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কাটোয়ার মতো জনপ্রিয় জায়গায় ফাঁকা জমিতে বড় শিল্প গড়া নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, বর্ধমানের উপর দিয়ে দু’টি জাতীয় সড়ক পরস্পরের উপর দিয়ে যাবে। হলদিয়া-মোরগ্রাম আর্থিক করিডরের থেকে কাটোয়া বেশি দূরত্ব নয়। এই অবস্থায় কাটোয়ার ওই জমি বড় শিল্পের সহায়ক হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy