Advertisement
১৮ মে ২০২৪

বিপিএল না হলেও মিলবে বাড়ি

বিপিএল তালিকাভুক্ত নন অথচ মাটির বা অস্থায়ী বাড়ি রয়েছে, এমন প্রত্যেকেই সরকারের কাছ থেকে পাকা বাড়ি তৈরির টাকা পেতে পারেন এ বার। কেন্দ্র সরকার ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্প তুলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্প নতুন ভাবে নিয়ে এসেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৬ ০৬:৪০
Share: Save:

বিপিএল তালিকাভুক্ত নন অথচ মাটির বা অস্থায়ী বাড়ি রয়েছে, এমন প্রত্যেকেই সরকারের কাছ থেকে পাকা বাড়ি তৈরির টাকা পেতে পারেন এ বার। কেন্দ্র সরকার ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্প তুলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্প নতুন ভাবে নিয়ে এসেছে। সেই প্রকল্পেই এই সুবিধে মিলবে এ বার।

রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে আমরা দেশের মধ্যে প্রথম হয়েছিলাম। নতুন প্রকল্পেও আমরা অন্য রাজ্যের চেয়ে এগিয়ে থাকব। আমরা চাই, গ্রামাঞ্চলের যত বেশি সম্ভব পরিবারের হাতে পাকা বাড়ি তুলে দিতে। সেই মতো জেলায় জেলায় নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।’’

রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৩ মার্চ কেন্দ্র মন্ত্রীসভায় সিদ্ধান্ত হয়, শহরের মতো গ্রামাঞ্চলেও ‘হাউস ফর অল ২০২২’ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত করতে হবে। ওই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ‘ইন্দিরা আবাস যোজনা’ প্রকল্পটিকে বন্ধ করে দিয়ে ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ) চালু করা হবে। চলতি বছরে গোটা দেশে এক কোটি বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ঠিক হয়, ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে দারিদ্রসীমার নীচে থাকা পরিবারগুলিই একমাত্র পাকা বাড়ির সুবিধা পেতেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে কোনও নির্দিষ্ট সীমারেখা থাকবে না। মাটির বাড়ি বা অস্থায়ী বাড়ি রয়েছে এমন পরিবারের বাসিন্দারাই এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। শুধু তাই নয়, ইন্দিরা আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির জন্য তিনটে পর্যায়ে উপভোক্তারা ৭০ হাজার টাকা পেতেন। পার্বত্য, সুন্দরবন ও জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের জন্য টাকার পরিমাণ ছিল ৭৫ হাজার। নতুন প্রকল্পে টাকার পরিমাণ বেড়ে হবে যথাক্রমে ১ লাখ ২০ হাজার ও ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ইন্দিরা আবাস যোজনার মতো এই নতুন প্রকল্পের সঙ্গেও একশো দিনের কাজকে যুক্ত করা হয়েছে। বাড়ি তৈরির জন্য ৯০ দিনের মজুরি ১০০ দিনের কাজ থেকেই দেওয়া হবে।

তাহলে উপভোক্তাদের চিহ্নিতকরণ হবে কী ভাবে? রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আর্থ সামাজিক ও জাতি-শ্রেণিভুক্ত গণনার রিপোর্টে গ্রামস্তর পর্যন্ত কাঁচা বাড়ি ও অস্থায়ী বাড়ির তথ্য রয়েছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী উপভোক্তারা নতুন প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। তালিকাটি খুব তাড়াতাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে পাঠিয়ে দেবে রাজ্য প্রশাসন। কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন দফতরের যুগ্ম সচিব রাজীব সদানন্দন জানিয়েছেন, (মেমো নম্বর জে-১১০১৪/১/২০১৪-আরএইচ তারিখ ১৩ এপ্রিল, ২০১৬), প্রতি মাসে ‘গ্রাম উদয় সে ভারত উদয়’ নামে গ্রাম সংসদের সভায় ওই তালিকা পেশ করতে হবে। সেখানেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি করতে হবে। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রায় দু’মাস ইন্দিরা আবাস যোজনার কাজ আটকে গিয়েছে। গোটা রাজ্য জুড়ে টাকা আটকে রয়েছে। আগামী দু’মাসের মধ্যে এই প্রকল্প দ্রুততার সঙ্গে চালু হয়ে যাবে। তার মধ্যে ইন্দিরা আবাস যোজনার টাকা খরচ না হলে ফেরৎ চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”

প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় গত তিন বছরে অর্ধেকেরও বেশি পঞ্চায়েতে গ্রাম সংসদ গঠন হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী, গ্রাম সংসদ গঠন না হলে উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি করে নির্দিষ্ট জায়গায় পাঠানো সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে কী হবে? বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু থেকে বীরভূমের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “সর্বত্র গ্রাম সংসদ গঠন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়ে গিয়েছে। একই সঙ্গে ইন্দিরা আবাস যোজনার কাজ যাতে দ্রুততার সঙ্গে করা হয়, সে দিকেও নজর দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BPL Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE