Advertisement
০৬ মে ২০২৪

জাঁকজমক দেখে বিস্মিত কেশরীনাথও

কোথাও দেবী-দর্শন করতে গেলে পেরোতে হবে যজ্ঞের আগুনের ভিতর দিয়ে। কোনও মণ্ডপে আবার দর্শক ফিরে পাবেন শৈশবের ‘কোটি টাকার’ দিনগুলো। দর্শকের ভিড়ে একে অপরকে টেক্কা দিতে এ ভাবেই থিমের লড়াইয়ে নেমেছেন আসানসোলের পুজো উদ্যোক্তারা।

আসানসোলের মণ্ডপে রাজ্যপাল। নিজস্ব চিত্র।

আসানসোলের মণ্ডপে রাজ্যপাল। নিজস্ব চিত্র।

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৬ ০০:১৬
Share: Save:

কোথাও দেবী-দর্শন করতে গেলে পেরোতে হবে যজ্ঞের আগুনের ভিতর দিয়ে। কোনও মণ্ডপে আবার দর্শক ফিরে পাবেন শৈশবের ‘কোটি টাকার’ দিনগুলো। দর্শকের ভিড়ে একে অপরকে টেক্কা দিতে এ ভাবেই থিমের লড়াইয়ে নেমেছেন আসানসোলের পুজো উদ্যোক্তারা।

প্রথমেই কোর্ট রোডের পুজো মণ্ডপে যাওয়া গেল। সেখানে ঢুকতেই এক উদ্যোক্তা বলেন, ‘‘আমাদের কোটি টাকার পুজো নয়। মাথার উপরে ড্রোনও চক্কর কাটবে না। তবু চ্যালেঞ্জ করছি, আমাদের মণ্ডপ তাক লাগাবে সকলকেই।’’ — এটা যে নেহাত ফাঁকা বুলি নয়, সেটা বোঝা গেল মণ্ডপে ঢুকেই। শিল্পীরা জানিয়ে দিলেন, এ বারের থিম ‘দুর্গার অসুর নিধন যজ্ঞ’। কী রকম সেটা? গোটা মণ্ডপটিই হোমকুণ্ড। দাউ দাউ করে জ্বলছে যজ্ঞের আগুন। প্রতিমা দেখতে সেই আগুনের ভিতর দিয়েই হেঁটে যাবেন দর্শকেরা! প্রতিমা দেখেও তাক লেগে যাবে বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। কারণ প্রতিমার একশোটি হাত ও সাতটি মাথা থাকবে। পুজোকমিটির কার্যকরী সভাপতি সুব্রত দত্তের দাবি, ‘‘শিল্পাঞ্চলে এতো উন্নত প্রযুক্তির মণ্ডপ কখনও হয়নি। এটি সম্পূর্ণ নিরাপদও।’’

প্রযুক্তির পাল্টা ‘কোটি টাকা’র পুজো নিয়ে হাজির রবীন্দ্রনগর উন্নয়ন সমিতি। এ বার তারা ৫০ বছরে পা দিয়েছে। তাদের থিম, ‘ফিরিয়ে দিলাম শৈশব।’ ঘুড়ি, লাটাই, বেলুন প্রভৃতি উপকরণেই সাজছে মণ্ডপ। উদ্যোক্তাদের দাবি, তাঁদের মণ্ডপের আলোকসজ্জা আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আসর অন্য পুজোকে টেক্কা দেবে। মঙ্গলবারই পুজোর উদ্বোধন করে গিয়েছেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। রাজ্যপাল বলেন, ‘‘এখানে আসার আগে জানতামই না আসানসোলে এত বড় ও চমৎকার পুজো হয়।’’ উদ্যোক্তাদের দাবি, চমকের এখনও অনেক বাকি। তাঁরা বলে রাখলেন, সোমবার থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হবে।

জাঁকজমক আর প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিতে এ বার ‘ময়ূরপঙ্খী বজরাতে দেবী’কে আবাহন জানিয়েছেন কল্যাণপুর আদি দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তারা। তাঁদের দাবি, মণ্ডপে থাকছে পিতল, অ্যালুমিনিয়াম ও ডোকরা-শিল্পের নজরকাড়া কাজ। কল্যাণপুর স্কিম দুইয়ের পুজোর থিম ‘পুরুলিয়ার ছৌগ্রাম’। উদ্যোক্তারা জানান, মণ্ডপের সঙ্গে রয়েছে মানানসই প্রতিমা। শুধু তাই নয়, পুজোর ক’দিন মণ্ডপে থাকবে ছৌয়ের আসর। অন্যদের টেক্কা দিতে কল্যাণপুর কে সেক্টরের পুজোর বাজি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কারুশিল্প। উদ্যোক্তারা জানান, অসম ও মেঘালয়ের মুলি বাঁশ দিয়ে সাজানো হয়েছে মণ্ডপ। শিল্পীরাও মেঘালয়ের।

সবাই নিজের নিজের তুরুপের তাস নিয়ে তৈরি। অপেক্ষা আর মাত্র কয়েক দিন। তারপরেই প্রমাণ হয়ে যাবে দর্শকদের বিচারে শেষ হাসি হাসবে কারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kesarinath tripathi Governor puja pandal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE