Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বর্ষায় জল পড়ে রোগীদের গায়ে

আকাশে মেঘ দেখলে বুক কেঁপে ওঠে ডাক্তার থেকে রোগী, সকলেরই। কারণ, বৃষ্টি হলেই ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। ভিজে যায় বিছানা ও মেঝে। স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্বেগ শুরু হয়ে যায়, ছাতা মেলে ধরতে হবে রোগীদের মাথায়।

বরাকর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। —নিজস্ব চিত্র।

বরাকর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। —নিজস্ব চিত্র।

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ০২:১২
Share: Save:

আকাশে মেঘ দেখলে বুক কেঁপে ওঠে ডাক্তার থেকে রোগী, সকলেরই। কারণ, বৃষ্টি হলেই ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। ভিজে যায় বিছানা ও মেঝে। স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্বেগ শুরু হয়ে যায়, ছাতা মেলে ধরতে হবে রোগীদের মাথায়। এমনই হাজারো সমস্যা নিয়ে চলছে বরাকরের সরকারি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হাল ফেরাতে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে বারবার দরবার করেও লাভ হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিযোগ, বর্ষায় ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। শর্ট সার্কিট হয়ে মাঝে-মধ্যেই বিদ্যুৎ চলে যায়। নেই পানীয় জলের ব্যবস্থাও। পুরসভার পাঠানো দিনে একটি মাত্র ট্যাঙ্কারের জলই ভরসা। তাঁদের আবাসনগুলিও বেহাল বলে অভিযোগ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। কেন্দ্রটির আধিকারিক অনির্বাণ রায়ের ক্ষোভ, ‘‘সমস্যার মধ্যেই কাজ করছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সবটাই জানেন।’’

সমস্যা আরও রয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছ’জন নার্সের প্রয়োজন থাকলেও বর্তমানে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে সেই সংখ্যা মাত্র চার। দু’জন ফার্মাসিস্ট থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন এক জন। এমনকী, তিন জন সাফাইকর্মী থাকার কথা। কিন্তু রয়েছেন দু’জন। অথচ, প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ চিকিৎসা পরিষেবার জন্য এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উপরে নির্ভর করেন। এখন তিন জন চিকিৎসক রয়েছেন। তাঁদেরও অভিযোগ, দিনে গড়ে তিনশো রোগী সামলাতে হিমসিম খেতে হয় সকলকে। কেন্দ্রটির আধিকারিক অনির্বাণ রায়ের দাবি, ‘‘এর পরেও এখানে বছরে গড়ে ১১০০ জনের প্রসব করানো হয়।’’

প্রশাসনের তরফে বারবার কেন্দ্রটির হাল ফেরানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে জানান বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, বছর পাঁচেক আগে আসানসোলকে স্বাস্থ্যজেলা ঘোষণার পরে এবং দু’বছর আগে বৃহত্তর আসানসোল পুরসভা তৈরির সময়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি সংস্কার ও পরিকাঠামো উন্নয়নের আশ্বাস দেওয়া হয়। ‘ন্যাশনাল আরবান হেলথ মিশনে’র আওতায় এই কেন্দ্রটির উন্নয়ন করা হবে, এমন প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’বার কেন্দ্রটির সংস্কার ও উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রায় এক কোটি টাকার অনুমোদনও হয়েছিল। কিন্তু কাজ এগোয়নি।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস হালদার অবশ্য বলেন, ‘‘সরকারের কাছে এই কেন্দ্রটিকে ‘ন্যাশনাল আরবান হেলথ মিশনে’র আওতায় আনার পরামর্শ দিয়েছি। আশা করি এ বার সমস্যা মিটবে।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি রাজ্যের ৪২টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উন্নয়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বরাকরও সেই তালিকায় রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Centre Rainy Season
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE