এমনিতেই গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার তৃণমূল। মেমারি, আউশগ্রামের মতো কিছু জায়গায় সিপিএমও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। তার সঙ্গে উপ-নির্বাচনেও জুটেছে নির্দলের কাঁটাও। জেলা প্রশাসনের আশঙ্কা, সব মিলিয়ে গোলমাল বাধতে পারে আজ, শনিবারের ভোটে।
বিশেষ করে রায়না ২ পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে, কাইতি গ্রাম, আউশগ্রাম ও কালনার একটি করে আসনে সিপিএম ও তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষ বাধার সম্ভাবনা রয়েছে। তৃণমূল শিবিরের খবর, মেমারি বিজুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের জ্যোৎরাম ও ভাতারের মহাচান্দা গ্রামের আসনটির জন্য নির্দলেরা ঝাঁপাবেন। ফলে নির্দলদের সামনে রেখে গোষ্ঠী-সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “নির্বিঘ্ন ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ৫৩টি বুথকেই স্পর্শকাতর ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিটি বুথেই থাকবে সশস্ত্র পুলিশ। এ ছাড়াও বেশ কিছু বুথে ভিডিও রেকর্ডিং ও সিসি ক্যামেরা থাকবে বলে জানা গিয়েছে। জেলা পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিটি থানা এলাকায় এক জন করে ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার দায়িত্বে থাকবেন। রায়না ও খণ্ডঘোষে গোলামালের আশঙ্কা থাকায় শুক্রবার বিকেলে বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) দ্যুতিমান ভট্টাচার্য, এসডিপিও (বর্ধমান) কার্তিক মণ্ডলের নেতৃত্বে রুট মার্চ হয়। রাতভর পুলিশ টহলের পরে শনিবার সকালেরও রুট মার্চ হবে বলে পুলিশের দাবি।
কোথাও পঞ্চায়েত সদস্য পদত্যাগ করেছেন, কোথাও পঞ্চায়েত সদস্য বা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মারা গিয়েছেন কিংবা সদস্যপদ খারিজ হয়েছে এমন ৩৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পাঁচটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে আজ, শনিবার উপ-নির্বাচন হবে। এর মধ্যে ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও একটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল জিতে গিয়েছে। ফলে কার্যত ২৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও চারটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে উপ-নির্বাচন হবে। বেশির ভাগ আসনেই তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএমের সরাসরি লড়াই হবে। ১৫টি আসনে বিজেপি ও তিনটি আসনে কংগ্রেসও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তার মধ্যে সিপিএমের সঙ্গে সরাসরি লড়াই হচ্ছে এ রকম বেশ কয়েকটি আসনে নির্দল প্রার্থীরা দাঁড়িয়ে যাওয়ায় নেতাদের মাথা ব্যথা শুরু হয়ে গিয়েছে বলেও তৃণমূল সূত্রের খবর।
মেমারি ২ ব্লকের বিজুর ২ পঞ্চায়েতের জ্যোৎরাম গ্রামে যেমন তৃণমূলের পাশাপাশি নির্দল প্রার্থীও দাঁড়িয়েছেন। দলের স্থানীয় সভাপতি মহম্মদ ইসমাইলের অভিযোগ, “এখানকার নির্দল প্রার্থী দেওয়াল লিখেছেন কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল, অথচ তিনি তৃণমূলের একটা গোষ্ঠীর সঙ্গে ওঠা-বসা করছেন।” তবে যাঁর মদতে এই নির্দল প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন বলে দাবি সেই মেমারি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমল বাগ এ ব্যাপারে কোনও কথা বলেন নি। খণ্ডঘোষের কৈসর কিংবা ভাতারে মাহাচান্দা গ্রামের মতো বেশ কয়েকটি আসনেও বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতাদের মদতে কেউ কেউ নির্দল প্রার্থী হয়েছেন। ওই সব এলাকায় নির্দলদের সঙ্গে গোলমালের শঙ্কাও করছে তৃণমূল। যদিও সরকারিভা বে তৃণমূলের নেতারা নির্দলদের গুরুত্ব দিতে নারাজ। দলের তরফে খণ্ডঘোষ-রায়নার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা, জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত বলেন, “নির্দলদের গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই। মানুষ তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে তৃণমূল প্রতীকে ভোট দেবেন।” আর সিপিএমের রায়নার বিধায়ক বাসুদেব খাঁ বলেন, “স্বচ্ছ ও নির্বিঘ্নে ভোট হলে আমরা ভাল করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy