Advertisement
E-Paper

ছেলেকে ভাতার টাকা পাঠিয়ে অনাহারে বৃদ্ধা

মঙ্গলাদেবী জানান, ছেলে সুশান্ত গুরুগ্রামের চকারপুরে একটি কারখানায় কাজ করেন। সপরিবারে সেখানেই থাকেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২০ ০৩:৫৪
মঙ্গলা রুইদাস। নিজস্ব চিত্র

মঙ্গলা রুইদাস। নিজস্ব চিত্র

ছেলে আটকে রয়েছেন হরিয়ানার গুরুগ্রামে। ফোনে তাঁর কাজ বন্ধ, আধপেটা থাকার কথা শুনে বিধবা ভাতার সিংহভাগ টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন অশীতিপর মা। এখন অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন জামালপুরের বেরুগ্রামের রুইদাসপাড়ার ওই বৃদ্ধাও। প্রতিবেশীদের দাবি, একবেলা মুড়ি খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন মঙ্গলা রুইদাস। অভুক্ত থাকায় অসুস্থও হয়ে পড়েছেন।

রবিবার ওই বৃদ্ধার কথা শুনে জামালপুরের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন, “যা শুনছি, তাতে ওই বৃদ্ধার রেশন কার্ড থাকলেও খাদ্যসামগ্রী আনতে দোকান পর্যন্ত যেতে পারবেন না। ওই বৃদ্ধা কোথায় থাকেন, বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’ কিন্তু বিডিও সাহায্যের আশ্বাস দিলেও এত দিন পঞ্চায়েতের তরফে কেউ এগিয়ে এল না কেন, উঠেছে সে প্রশ্ন। জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খানের যদিও দাবি, “এখন প্রশ্ন তোলার সময় নয়। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সময়। ওই বৃদ্ধাকে কী ভাবে সাহায্য করা যায় দেখছি।’’

মঙ্গলাদেবী জানান, ছেলে সুশান্ত গুরুগ্রামের চকারপুরে একটি কারখানায় কাজ করেন। সপরিবারে সেখানেই থাকেন তিনি। কিন্তু ‘লকডাউন’-এ জেরে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। সুশান্তবাবুর কথায়, ‘‘২৪ মার্চের পর থেকেই কাজ নেই। রোজগারও নেই। ছেলে-বউ নিয়ে আতান্তরে পড়েছি। কী খাব, কবে বাড়ি ফিরব কিছুই জানি না। মায়ের জন্যও চিন্তা বাড়ছে।’’ ওই বৃদ্ধার দাবি, তিন মাস আগে বিধবা ভাতার টাকা ঢুকেছিল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। ছেলের দুর্দশার কথা শুনে লোকজনের সাহায্য নিয়ে কোনও রকমে ব্যাঙ্কে গিয়ে ভাতার বেশির ভাগটাই তাঁকে পাঠিয়ে দেন তিনি। তার পর থেকে বাড়িতে হাঁড়ি চড়ছে না তাঁরও।

এ দিন বাড়ির দাওয়ায় বসে ওই বৃদ্ধা বলেন, ‘‘ছেলে দেখত, টাকা পাঠাত। কিন্তু এখন কিছুই করতে পারছে না। ওদেরই সংসার চলছে না। বন্দি করে রেখে দিয়েছে। ওদের চিন্তা নিজের পেটের জ্বালাও ভুলিয়ে দিচ্ছে।’’ এ দিনও সকাল থেকে কিছু খাবার জোটেনি তাঁর। জিজ্ঞাসা করায় বলেন, ‘‘চেয়েচিন্তে চলছে। কেউ ইচ্ছা হলে খেতে দেয়। আবার কেউ দেয় না।’’

পড়শি লক্ষ্মী রুইদাস জানান, একে পেটে খাবার নেই, তার উপরে ছেলের জন্য চিন্তায় এক দিন মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন মঙ্গলদেবী। তাঁর আশা, ‘‘ছেলেরা বাড়ি ফিরলে দু’মুঠো ভাত পাবেন। হয়তো বেঁচেও যাবেন ওই বৃদ্ধা।’’ ব্লক প্রশাসনের আশ্বাস, দ্রুত ওই বৃদ্ধার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।

India Lockdown Starvation Gurugram
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy