পুরসভার উদ্যোগে রোগীদের বিনামূল্যে পরিষেবা দিতে আগেই এগিয়ে এসেছিলেন চিকিৎসকেরা। এ বার ডায়াগনিস্টিক সেন্টার ও প্যাথলজিক্যাল ল্যাবগুলিও সাড়া দিয়েছে এই উদ্যোগে। তাদের দাবি, পুরসভার ক্লিনিক থেকে যাঁরা পরিষেবা পাবেন তাঁদের থেকে প্রয়োজনে নির্ধারিত অর্থের অর্ধেকে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেবেন তাঁরা।
কালনার ১৮টি ওয়ার্ডে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ রয়েছেন। তাঁদের অনেকেই নামী চিকিৎসকের ভিজিটের বন্দোবস্তো না করতে পেরে সমস্যায় পড়েন। আবার নোট বাতিলের পরিস্থিতিতে খুচরো টাকায় চিকিৎসকের ফি দিতেও মুশকিলে পড়েছেন অনেকে। সবদিক ভেবেই বিভিন্ন বিভাগের জনা পনেরো নামী চিকিৎসককে বিনামূল্যে পুরসভার ক্লিনিকে রোগী দেখার আবেদন জানায় পুরসভা। পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ জানান, মেডিসিন, শল্য, হাড়, স্নায়ু, স্ত্রীরোগ, শিশু বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার পরেই পুরসভা ভবনের সামনে রবীন্দ্রভবনে ১২ লক্ষ টাকা খরচ করে রোগী দেখার ঘর, রোগীদের বসার জায়গা-সহ নানা পরিকাঠামো গড়ে দেওয়া হয়। ১২ নভেম্বর থেকে ১০ জন চিকিৎসক পালা করে পরিষেবা দিতে শুরু করেন। পরে এগিয়ে আসেন আরও পাঁচ চিকিৎসক। কোন দিন, কোন চিকিৎসককে কতক্ষণ পাওয়া য়াবে সে তালিকাও শহরে ফ্লেক্স টাঙিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়।
পুরসভার দাবি, প্রতিদিন দেড়শোরও বেশি মানুষ পরিষেবা নিচ্ছেন। বহু ওষুধও দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা পুতুল মুখোপাধ্যায়, বিপাশা মির্ধারা বলেন, ‘‘সকালে নাম লিখিয়ে যে সমস্ত চিকিৎসকদের কাছে দেখাতে দেখাতে বিকেল গড়াত, এখন তাঁদের সহজেই পাওয়া যাচ্ছে।’’ কালনা মহকুমা হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসুতি বিভাগের প্রাক্তন চিকিৎসক অমিয়কান্তি তাঁ বলেন, ‘‘এই শহর থেকে অর্থ, খ্যাতি অনেককিছু পেয়েছি। তাই পুরসভা যখন বিনা পারিশ্রমিকে রোগী দেখার প্রস্তাব দেয় সম্মতি দিতে দু’বার ভাবিনি।’’
চিকিৎসকদের কাছে ভাল সাড়া মেলার পরে পুরসভার তরফে ক্লিনিক্যাল ল্যাব এবং ডায়গনিস্টিক সেন্টারগুলির মালিকদের কাছেও প্রস্তাব পাঠানো হয়। এ দিন কালনা নার্সিংহোম অ্যান্ড ডায়গনিস্টিক সেন্টার ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সম্পাদক অরবিন্দ ঘোষ বলেন, ‘‘পুরসভা যাঁদের পরিষেবা দিচ্ছে তাঁরা মূলত গরিব পরিবারের। পুরসভার পাশে থাকতে আমরাও জানিয়েছি এখানকার রোগীদের কাছে বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য অর্ধের টাকা নেওয়া হবে।’’ পুরপ্রধান বলেন, ‘‘সকাল হতেই বিনা পয়সায় স্বাস্থ্য পরিষেবা নিতে সাধারণ মানুষ নাম লেখাচ্ছেন। পুরসভা চিকিৎসক, ক্লিনিক্যাল ল্যাব, ডায়াগনিস্টিক কেন্দ্রগুলির প্রতি কৃতজ্ঞ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy