জল আর আবর্জনার গাড়ির রাজস্ব দিতে সকাল থেকে ঠায় লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন কাটোয়ার সাহেববাগানের তাপসকুমার চক্রবর্তী। কিন্তু টেবিলের কাছে পৌঁছে পকেট থেকে পাঁচশো টাকার নোট বের করতেই কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে বচসা বেধে গেল। একই ঘটনা ঘটল পুরসভায় মিউটেশনের কাজে আসা কাটোয়ার আর এক বাসিন্দার সঙ্গেও। প্রত্যেকেরই অভিযোগ, পুরসভার তরফে পুরনো নোট না নেওয়ার কোনও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। অথচ কর্মীরা খুচরো ছাড়া নিচ্ছেন না। ফলে সপ্তাহের শুরুর দিন থেকেই চরম ভোগান্তির শিকার কাটোয়বাসী।
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পর থেকেই পুরসভায় কোনও ধরনের করের ক্ষেত্রেই পাঁচশো, হাজারের পুরনো নোট নেওয়া হচ্ছে না। অথচ রাজস্ব নেওয়ার সময়সীমা, আগামী মার্চ আসতে আর বেশি দিন বাকি নেই। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও প্রায় ৩০ শতাংশ রাজস্ব নেওয়া বাকি রয়েছে। রাজস্ব দিতে এলেও তা ফিরিয়ে দেওয়ায় টান পড়ছে পুরসভার ভাঁড়ারেও। এমন অবস্থায় প্রতিদিনই রাজস্ব দেওয়ার লাইনে অধিকাংশ বাসিন্দাদের সাথে বচসা বেধে যাচ্ছে পুরকর্মীদের। এমনকী, পুরসভা পরিচালিত শ্মশানেও পাঁচশো-হাজারের নোট দেখলে শবযাত্রীদের ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে আকছার। শুক্রবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের জন্য আবর্জনা গাড়ির রাজস্ব দিতে এসেছিলেন পানুহাট পশ্চিমপাড়ার পরেশ দেবনাথ। তাঁর অভিযোগ, পাঁচশো টাকার নোট দিতেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ঘন্টাখানেক পরে সেই নোট ভাঙিয়ে খুচরো এনে কর দেন তিনি। তাঁর মতোই মুশকিলে পড়েছেন চরঘোষহাটের প্রাণনাথ দাস। নতুন দোকানের জন্য ট্রেড লাইসেন্স নিতে এসেছিলেন তিনি। নোট খুচরো করতে না পেরে অগত্যা ফিরেই যেতে হয় তাঁকে। একই অবস্থা শ্মশানেও। পলসোনা, কানাইডাঙা থেকে শবদেহ দাহ করতে এসে অসুবিধায় পড়েন দুই পরিবার। কানাইডাঙার নবকুমার ঘোষের পরিজনেরা বলেন, ‘‘শবদেহ নিয়ে বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারছিলান না। অগত্যা নিজেদের পকেট হাতড়, চেয়েচিন্তে খুচরোর ব্যবস্থা করতে হয়।’’
পুরসভার কোষাধক্ষ্য অলোককুমার দাসের দাবি, ‘‘বাসিন্দাদের অসুবিধা হচ্ছে বুঝেও পাঁচশো-হাজারের নোট নিতে বারণ করায় নিতে পারছি না।’’ পুরসভার এগ্জিকিউটিভ অফিসার সৌমেন্দ্রনাথ কোলের যদিও দাবি বিষয়টি জানা নেই তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভার আয় এতে কমে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে পুরপ্রধানের সঙ্গে কথা বলব।’’ আর পুরপ্রধান অমর রামের যুক্তি, ‘‘পাঁচশো-হাজারের নোট নেওয়ার জন্য কর্মীদের মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছে। শীঘ্রই লিখিত ভাবে জানানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy