—ফাইল চিত্র।
মহাত্মা গাঁধীর জন্ম সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে ছ’খণ্ডের একটি পূর্ণাঙ্গ গাঁধী রচনাবলি তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কাজে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর। উৎসাহ জুগিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গাঁধী ও সাংসদ সুগত বসু। তাঁরা রচনাবলিটি সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করবেন বলেও জানিয়েছেন। মঙ্গলবার থেকেই এ নিয়ে প্রাথমিক কাজ শুরু হবে বলে জানান ইংরেজি বিভাগের প্রধান সজল ভট্টাচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৬৯ সালে রাজ্য সরকার মহাত্মা গাঁধীর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে একটি ছ’খণ্ডের রচনাবলি প্রকাশ করেছিল। সেটিই পরিমার্জন ও পরিবর্ধন করে নবরূপে প্রকাশের উদ্যোগ হয়েছে বলে জানান ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকেরা। সেই সময় সতীশচন্দ্র দাসগুপ্ত, শৈলেশকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, বাসন্তী দেবী, ভবানীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের মতো গাঁধী অনুরাগী বইটিতে লিখেছিলেন। ষাটের দশকের দ্বিতীয়ার্ধে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্লচন্দ্র সেনের নতৃত্বে গঠিত একটি বিশেষ কমিটি ওই রচনাবলি তৈরি থেকে প্রকাশ, পুরোটাই করেছিল। কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান সজলবাবু জানান, এর পরে এত সমৃদ্ধ ও বড় কলেবরে গাঁধী সম্পর্কিত রচনাবলি আর প্রকাশ হয়নি। ওই খণ্ডগুলিও এখন আর বাজারে পাওয়া যায় না। সজলবাবু বলেন, ‘‘ওই মণীষীদের রচনা সমৃদ্ধ গাঁধীর জীবন দর্শন এখনকার প্রজন্মকে জানানো প্রয়োজন। তাই উদ্যোগী হয়েছি।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সজলবাবু ও তাঁর বিভাগের শিক্ষক শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি সরকারের সংগ্রহশালা থেকে এই খণ্ডগুলি উদ্ধার করেন। তাঁরা জানান, রচনাবলির লেখকদের মূল ভাবধারাকে অটুট রেখে আজকের প্রজন্মের কাছে রচনাগুলি মনোগ্রাহী করে তুলতে ভাষার সামান্য পরিবর্তন করা হচ্ছে। যোগ করা হচ্ছে গাঁধী সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মের চিন্তা ও তাঁদের গবেষণাধর্মী কাজ।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মে মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দিয়ে তিনি এই রচনাবলি সম্পর্কিত বিশদ প্রকল্প জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন শিক্ষকদের। সজলবাবু বলেন, ‘‘আমরা তা জমা দিয়েছি। শিক্ষামন্ত্রীর থেকে কাজ শুরুর সম্মতিও পেয়েছি।’’ তিনি জানান, রচনাবলিটি আরও সমৃদ্ধ করতে সাহায্যের আবেদন করা হয় প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গাঁধী ও রাজ্যের সাংসদ তথা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষক সুগত বসুর কাছে। তাঁরা সম্পাদকমণ্ডলীর উপদেষ্টা হওয়ার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন।
শিক্ষকেরা জানান, রচনাবলিতে গাঁধীর সম্প্রীতি রক্ষা বিষয়ক প্রবন্ধগুলি বেশি করে স্থান পাচ্ছে। রাখা হচ্ছে গাঁধীর নোয়াখালি ডায়েরি, বিহার ডায়েরি, দিল্লি ডায়েরির মতো প্রবন্ধ। প্রায় তিন হাজার পাতার ছ’খণ্ডের রচনাবলিটি আগামী বছরের গোড়ায় প্রকাশ করার ভাবনা রয়েছে বইয়ের অন্যতম সম্পাদক শান্তনুবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy