Advertisement
E-Paper

সন্ধ্যা নামলেই রাস্তায় বেরনো বন্ধ

মাসখানেক আগেই রাস্তায় নিরাপত্তার অভাব, নিয়মিত কটূক্তি, উত্যক্ত করার কথা জানিয়ে অভিযোগ করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তারাবাগ ক্যাম্পাসের এক দল ছাত্রী। অভিযোগ পেয়ে রাস্তায় পুলিশ কিয়স্ক বসায় থানা। কিন্তু আলো না থাকায় সন্ধ্যে নামলেই অন্ধকার রাস্তায় যেন ওঁত পেতে থাকে বিপদ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩৪
হেডলাইটের আলোয় ভরসা তারাবাগ থেকে গোলাপবাগে। নিজস্ব চিত্র।

হেডলাইটের আলোয় ভরসা তারাবাগ থেকে গোলাপবাগে। নিজস্ব চিত্র।

মাসখানেক আগেই রাস্তায় নিরাপত্তার অভাব, নিয়মিত কটূক্তি, উত্যক্ত করার কথা জানিয়ে অভিযোগ করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তারাবাগ ক্যাম্পাসের এক দল ছাত্রী। অভিযোগ পেয়ে রাস্তায় পুলিশ কিয়স্ক বসায় থানা। কিন্তু আলো না থাকায় সন্ধ্যে নামলেই অন্ধকার রাস্তায় যেন ওঁত পেতে থাকে বিপদ।

ওই ক্যাম্পাস তো বটেই, এলাকার বাসিন্দাদেরও দাবি, শহরের গোলাপবাগ মোড় থেকে তারাবাগ মোড় পর্যন্ত রাস্তায় বেশ কয়েকমাস ধরেই আলো নেই। ফলে সন্ধ্যেয় যাতায়াত বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। এ দিকে, শহরের অন্যত্র ত্রিফলা বসিয়ে সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা হলেও এই রাস্তায় আলো বসানো নিয়ে তরজা শুরু হয়েছে বর্ধমান পুরসভা ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। দু’পক্ষেরই দাবি, রাস্তায় আলো বসানো, হাল ফেরানোর দায় অন্য পক্ষের।

ওই রাস্তার এক পাশে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের লহর, অন্য পাশে ঝোপঝাড়, রমলাবাগানের বড় পাঁচিল। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, গোলাপবাগ মোড় থেকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ক্যাম্পাস ও রমলাবাগানের পাশ দিয়ে অন্ধকারের মধ্যেই আসাযাওয়া করতে হয়। আঁধার কাটাতে ভরসা গাড়ির হেডলাইট। পথচারীরাও জানান, টর্চ জ্বালিয়ে আন্দাজে হাঁটতে হয়। একটু অসাবধান হলেই দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে।

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, অন্ধকার কাটাতে দুটো উচ্চ বাতিস্তম্ভ বসানো হয়েছিল ওই রাস্তায়। কিন্তু, গোলাপবাগের ক্যাম্পাসের দ্বিতীয় গেটের বাতিস্তম্ভটি দীর্ঘদিন ধরেই খারাপ। আর বিধানচন্দ্রর মূর্তির কাছে দ্বিতীয় বাতিস্তম্ভটিও কখনও জ্বলে, কখনও জ্বলে না। এর সঙ্গে ওই রাস্তায় পথবাতিও নেই। ফলে, ঘুটঘুটে অন্ধকারেই যেতে হয় পথচারী, সাইকেল আরোহীদের।

মে মাসেই রাস্তায় বেরোলেই দিনের পর দিন এক দল দুষ্কৃতী তারাবাগ ক্যাম্পাস এবং পথচলতি মহিলাদের উত্যক্ত করত বলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন ছাত্রীরা। বর্ধমান থানায় নিরাপত্তা চেয়ে স্মারকলিপিও দেন তাঁরা। তারপরেই ওই এলাকায় পুলিশ কিয়স্ক বসে। সেখানে সিভিক ভলেন্টিয়ারেরা রাত ৯টা পর্যন্ত থাকেন। ১০টা থেকে তারাবাগ এলাকায় পুলিশের টহল থাকে। কিন্তু অরক্ষিত থেকে যায় গোলাপবাগ। ওই পথে মেয়েকে নিয়ে যাতায়াতকারী সুবল ঘোষ বলেন, “এত অন্ধকার যে মেয়েকে একা ছাড়তে ভয় লাগে।” টোটো চালক শেখ নূর মহম্মদ কিংবা স্থানীয় বাসিন্দা রঞ্জনা সেনও বলেন, “সন্ধ্যার পর ওই রাস্তায় গেলে মনে হয় জঙ্গলে চলে এসেছি। গাড়িও ঠিক বোঝাও যায় না।” তারবাগ ক্যাম্পাসের ছাত্রী সায়নী রায়, রিমঝিম দাশগুপ্ত, জুলফা খাতুনদরাও বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ। তাঁদের কথায়, “ওই রাস্তা দিয়ে গেলেই কিছু দুষ্কৃতী উত্যক্ত করে। অন্ধকারে কিছু বুঝতেও পারতাম না। এখন পারতপক্ষে সন্ধ্যার পরে ওই রাস্তা দিয়ে যাই না।’’ কয়েকমাস কেটে গেলেও পুরসভা বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা কেন করতে পারল না, সে প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদের সহ সভাপতি প্রদীপ বাজপেয়ীও বলেন, “ওই রাস্তায় নিয়মিত ভাবে ছাত্রীদের কিছু দুষ্কৃতী উত্যক্ত করত। আমরাও যেতে বারণ করেছি।’’

স্থানীয় কাউন্সিলর তথা বর্ধমানের উপপুরপ্রধান খোন্দেকার বলেন, “আলো নেই? মানতে পারছি না। নিজে সরেজমিন দেখার পর বলব।” পাশে বসে থাকা পুরপিতা পরিষদের সদস্য (আলো) সাহাবুদ্দিন খানের দাবি, “ওই এলাকাটা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের। তাঁদেরই আলো লাগানোর কথা। তবে পথচারীদের স্বার্থে আমরা উচ্চ বাতিস্তম্ভ লাগিয়েছিলাম। সেগুলি ঠিক করে দেওয়া হবে।” পাল্টা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ২০১৩ সাল থেকে তারাবাগ থেকে রবীন্দ্রভবন পর্যন্ত রাস্তায় বারবার ছাত্রীদের সুবিধার জন্য আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু আলো লাগানোর কিছুদিনের মধ্যেই কে বা কারা তা ভেঙে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবকুমার পাঁজা বলেন, “বিষয়টি খুবই সমস্যার। পুরসভাকে আলোর ব্যবস্থা করার জন্য চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা হবে।”

streets road safety
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy