প্রতীকী ছবি।
নয়ের দশকে বাসস্ট্যান্ড তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। তৎকালীন সিপিএম পরিচালিত মেমারি পুরসভা বাসস্ট্যান্ড তৈরিও করেছিল। কিন্তু জমির দামে সন্তুষ্ট না হয়ে শহরের আনন্দবাজার এলাকার পাঠক পরিবার বাজারমূল্যে জমির দাম চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। দীর্ঘ দু’দশক মামলা চলার পরে বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক মহম্মদ রেজার এজলাসে ২ কোটি ৩ লক্ষ ৩০ হাজার ৩৩৩ টাকার চেক জমা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। জমিদাতাদের চিঠি দিয়ে জানানো হলেও তাঁদের দাবি, প্রাপ্য মূল্যের অর্ধেক টাকা জমা করা হয়েছে।
মেমারিতে বাসস্ট্যান্ড তৈরির জন্য ১৯৯২ সালে ২ একর ৮৪ শতক জমি অধিগ্রহণ করে জেলা প্রশাসন। যার মধ্যে শম্ভুনাথ পাঠকের ৪৮ শতক, বিষ্ণুনারায়ণ পাঠক ও মধুসূদন পাঠকের ১.২৮ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। সরকার নির্ধারিত দামে জমিদাতাদের টাকাও মিটিয়ে দেয়। কিন্তু পাঠক পরিবারের তিন ভাই সরকারের দামে খুশি হননি। তাঁরা বর্ধমানের অতিরক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (প্রথম) এজলাসে বর্ধিত জমির দাম চেয়ে মামলা করেন। ২০১১ সালের ১৪ জুলাই বিচারক বর্ধিত দাম ৯০ দিনের মধ্যে মেটানোর জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়। প্রশাসন ওই নির্দেশ মানেনি বলে জমিদাতারা ফের ২০১২ সালে মামলা করেন। ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল আদালত ৪৮ শতকের জন্য ৯০ লক্ষ ৮১ হাজার ৫০ টাকা ও ১ একর ২৮ শতকের জন্য ২ কোটি ৪২ লক্ষ ৯ হাজার ৭০০ টাকা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
তারপরেও টাকা না মেটানো হওয়ায় জমির মালিকরা আদালতে মেমারি ১ ব্লক অফিস ও জেলাশাসকের বাংলো নিলামে তুলে জমির মূল্য মেটানোর আবেদন করেন। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করলে গত ১৫ মার্চ নিলাম হবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। ওই দিন বেলা ২টো নাগাদ ঘন্টা বাজিয়ে নিলাম পর্ব শুরুও হয়। কিন্তু নিলামে কেউ অংশ নেয়নি বলে ওই দফতর দুটি বিক্রি হয়নি। এরপরেই সরকারি লাভ-লোকসানের (পিএল) অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার জন্য আদালতে আবেদন করেন জমিদাতারা। ওই আবেদনের শুনানির আগে গত সপ্তাহে জেলাশাসক দুটি চেকে ২ কোটি ৩ লক্ষ ৩০ হাজার ৩৩৩ টাকার চেক জমা দেন। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানান, আদালতের নির্দেশ মেনে জমির মূল্য বাবদ ওই টাকা জমা দেওয়া হয়েছে।
বর্ধমানের গোদা এলাকায় স্বাস্থ্য উপনগরীর জন্য জমি দান করে বর্ধিত মূল্যের দাবি করে টানা আট বছর আইনি লড়াই চালান আব্দুল আলিম। এ মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলা প্রশাসন ৭১ লক্ষ টাকা আদালতে জমির বর্ধিত মূল্য হিসেবে জমা দেয়। ওই টাকা পেয়ে আব্দুল আলিম খুশি হলেও মেমারির পাঠক পরিবার কিন্তু খুশি নন। শম্ভুনাথবাবুর দাবি, “২০১৮ সালের ১৫ মার্চ পর্যন্ত দুটি জমি মিলিয়ে তাঁদের পাওনা প্রায় চার কোটি টাকা। সেখানে অর্ধেক টাকা আদালতে জমা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন কী হিসাবে ওই টাকা জমা করল বুঝতে পারছি না।’’ চেক দুটি এখনও আদালতেই জমা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy