নারীসম্মান যাত্রা উপলক্ষে বিজেপি-র মোটরবাইক মিছিল। আসানসোলে তোলা নিজস্ব চিত্র।
শোনা গিয়েছিল, মাধুরী দীক্ষিত আসছেন। আসা প্রায় পাকা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির। উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছিল বিজেপি-র নিচুতলার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। কিন্তু দিন দুয়েক ধরেই বিজেপির রাজ্য এবং জেলার শীর্ষ নেতারা জানতে পারছিলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিংবা রুপোলি পর্দার ওই নায়িকার সফর কিঞ্চিৎ অনিশ্চিত।
ইতিমধ্যে অবশ্য আসানসোল-দুর্গাপুরের খনি এলাকা জুড়ে মাধুরী-স্মৃতিতে ভেসে পড়েছেন দলীয় কর্মীরা। নারী সম্মান যাত্রায় কর্মীদের উৎসাহ দেখে সেই ‘অনিশ্চয়তা’র কথা আর তাই ভাঙেননি নেতারা। দলের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দিল্লি থেকেই সরাসরি এসে নারীসম্মান যাত্রার কয়েকটি সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। যা দেখে স্মৃতির আসানসোল আসা নিয়েও আশাবাদী ছিলেন অনেকে।’’ তবে তিনি জানান, মাধুরীর সফর কখনওই নিশ্চিত ছিল না। আজ, বুধবার তাঁর কলকাতায় আসার কথা থাকলেও মাধুরীর সফরসূচিতে এই শিল্পাঞ্চল ছিল না। এ দিন বিকেলেই দলের কর্মী-সমর্থকদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়, তাঁরা কেউ আসছেন না। সভায় ভিড় বাড়ানোর জন্যই কি আগে থেকে এ কথা জানানো হয়নি, প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি সমর্থকেরা।
দিন কয়েক আগে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ দুর্গাপুরে এসে জানিয়েছিলেন, নারী সম্মান যাত্রার র্যালি ২৪ জুন কলকাতা পৌঁছবে। থাকবেন মাধুরী দীক্ষিত। মঙ্গলবার তা এসে পৌঁছবে দুর্গাপুরে। এ দিন দুপুর সওয়া ২টো নাগাদ ঝাড়খণ্ড থেকে এ রাজ্যে ঢোকে ওই র্যালি। জাতীয় সড়ক ধরে কুলটি হয়ে তা আসানসোলে পৌঁছয়। আসানসোলে এই উপলক্ষে আয়োজিত সভায় ছিলেন স্থানীয় বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। তিনি বক্তব্য রাখেন। তবে র্যালি সভাস্থলে পৌঁছনোর খানিক আগে তিনি বেরিয়ে যান। সন্ধ্যায় আসানসোল থেকে রওনা হয়ে রাতে দুর্গাপুরে পৌঁছয় এই যাত্রা।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যাত্রা শিল্পাঞ্চলে আসছে, এ কথা ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই বিজেপি-র স্থানীয় নেতা-কর্মীরা প্রচার শুরু করেন, দুর্গাপুরে দু’টি সভা করা হবে। একটি গোপালমাঠে, অন্যটি ডিএসপি টাউনশিপের ভারতী মোড়ে। সেখানে থাকবেন মাধুরী দীক্ষিত। সোমবার থেকে আবার যোগ করা হয় স্মৃতি ইরানির নাম। এমনকী, মঙ্গলবার দুপুরেও গাড়ি নিয়ে এলাকায় এই র্যালির যে প্রচার হয় তাতে মাধুরী ও স্মৃতি আসবেন বলে জানানো হয়। বিজেপি সূত্রের খবর, তত ক্ষণে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, দু’জনের কেউই আসবেন না। এমনকী, আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ও দুর্গাপুরে আসছেন না। সন্ধ্যার আগেই তা জেনে যাওয়ায় অনেকেই সভার দিকে আর যাননি। বিকেলের পরে অঝোরে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় দুর্গাপুরের দু’টি সভাই বাতিল করেন বিজেপি নেতারা।
বিজেপি সমর্থদের অভিযোগ, স্থানীয় নেতারা আগে থেকেই জানতেন যে মাধুরী বা স্মৃতি আসবেন না। কিন্তু তা জানানো হয়নি। ডিএসপি টাউনশিপের বিজেপি সমর্থক দেবাশিস রায়চৌধুরী, জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়দের ক্ষোভ, ‘‘আমাদের নেতারা কোথা থেকে এমন তথ্য পেয়েছিলেন তা তাঁরাই জানেন। মাঝখান থেকে আমাদের বিভ্রান্ত করা হল। আমরাও পরিচিতদের মধ্যে তা প্রচার করে এখন লজ্জায় পড়েছি।’’
দলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি অখিল মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘‘প্রথমে আমাদের কাছে খবর ছিল মাধুরী দীক্ষিত ও স্মৃতি ইরানি আসবেন। কিন্তু তাঁরা আসছেন না জানার পরেই সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়।’’ সভা বাতিল করা প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘টানা বৃষ্টিতে মানুষজন বেরোতে পারবেন না। সে কথা ভেবেই সভা বাতিল করতে হয়।’’ বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর সিটি সেন্টারে একটি হোটেলে রাত্রিবাসের পরে সকালে কলকাতা রওনা হবে ওই যাত্রা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy