Advertisement
০৭ মে ২০২৪

সেতু-রাস্তা ভাঙা, যাব কী ভাবে

পঞ্চায়েত সমিতির দফতরে সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন কালনা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আলমগির সাত্তার। বাসিন্দাদের দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশা ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন কেদারনাথ ভট্টাচার্য। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।৮ এবং ১৩ নম্বর রুটের সংযোগকারী মোরাম রাস্তাটি অত্যন্ত বেহাল। আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই, বিশেষত বৃষ্টির দিনে। রাস্তাটি পাকা হলে এলাকার বহু মানুষ উপকৃত হবেন।

গার্ডওয়াল ভেঙে, পিলার ক্ষয়ে বেহাল টোলা গ্রামের সেতু। তার মধ্যেই যাতায়াত। —নিজস্ব চিত্র।

গার্ডওয়াল ভেঙে, পিলার ক্ষয়ে বেহাল টোলা গ্রামের সেতু। তার মধ্যেই যাতায়াত। —নিজস্ব চিত্র।

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:২৩
Share: Save:

• ৮ এবং ১৩ নম্বর রুটের সংযোগকারী মোরাম রাস্তাটি অত্যন্ত বেহাল। আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই, বিশেষত বৃষ্টির দিনে। রাস্তাটি পাকা হলে এলাকার বহু মানুষ উপকৃত হবেন।

কাজল পণ্ডিত, কল্যাণপুর

সভাপতি: ওই রাস্তাটি যাতে পাকা হয় তার জন্য এলাকার মানুষ জেলা প্রশাসনের কর্তাদের নজরে এনেছেন বিষয়টি। পঞ্চায়েত সমিতিও বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আনবে।

• এলাকার ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা দূর করতে বছর খানেক আগে রাহাতপুর গ্রামে একটি উচ্চবিদ্যালয় চালু হয়। বর্তমানে স্কুলটিতে একটি মাত্র শ্রেণিকক্ষ। ক্লাসঘর ও শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ানো গেলে ভাল হয়।

হানিফ শেখ, রাহাতপুর

সভাপতি: রাহাতপুর-সহ ব্লকের বেশ কয়েকটি জায়গায় স্কুল খোলার জন্য পঞ্চায়েত সমিতির তহবিলে এক দশকের বেশি সময় ধরে টাকা পড়েছিল। একএকটি স্কুলকে ভবন তৈরির জন্য ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরিকাঠামো তৈরিতে তা পর্যাপ্ত নয়। প্রত্যেক বছর যাতে এই স্কুলগুলির ঘরের সংখ্যা বাড়ে সেদিকে খেয়াল রাখছে পঞ্চায়েত সমিতি। তবে শিক্ষক পাওয়ার সমস্যা সত্যিই রয়েছে।

• ব্লকের কেলনই সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে ভাঙা। ভারী যানবাহন চলাচল একরকম বন্ধই। অথচ সেতুটি দিয়ে যাতায়াত করেন এলাকার অন্তত ৩০টি গ্রামের মানুষ। ভাঙা সেতুর পাশ দিয়ে একটি বাইপাস রাস্তা তৈরি হয়েছিল। বর্ষায় সেটিও ভেঙে গিয়েছে। এলাকার মানুষের ভোগান্তি দূর করতে বাইপাস রাস্তার পাশাপাশি সেতুটি নতুন করে তৈরির প্রয়োজন রয়েছে।

ইয়াসিন শেখে, মালিকেলনই

সভাপতি: কেলনই সেতুটি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, ভূমি এবং প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ দেখে গিয়েছেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে সেচ দফতরের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। সেতুটির পাশের রাস্তাটি অবশ্য জেলা পরিষদ ফের তৈরি করে দেবে।

• এলাকায় গৃহপালিত পশু রয়েছে প্রচুর। তাদের চিকিৎসার জন্য আগে এলাকায় ছিল প্রাণী স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছিল। সম্প্রতি সেটি উঠে গিয়েছে। ফলে গরু, ছাগলের চিকিৎসা করাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। প্রাণিবন্ধুদের দিয়ে নিয়মিত গ্রামে গ্রামে পরিষেবা দেওয়ার বিষয়ে পঞ্চায়েত সমিতি কিছু ভাবেছে?

সুজয় ঘোষ, বড় দরিয়াটন

সভাপতি: প্রাণিবন্ধুদের দিয়ে নিয়মিত এই পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। তবে এলাকায় পশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি উঠে যাওয়ার বিষয়টি লিখিত আকারে জানালে পঞ্চায়েত সমিতি বিষয়টি খতিয়ে দেখে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবে। তবে গ্রামেগঞ্জের গৃহপালিত পশুদের যাতে চিকিৎসা সংক্রান্ত অসুবিধা না হয় তার জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় শিবির করা হয়।

• এলাকায় বহু স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। গোষ্ঠীগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক ঋণের সুবিধা পাচ্ছে না। গ্রুপগুলির উন্নত মানের প্রশিক্ষেণেরও অভাব রয়েছে।

সুচরিতা কুণ্ডু, বৈদ্যপুর

সভাপতি: এমন অভিযোগ ঠিক নয়। শালপাতার ঠোঙা, আচার তৈরি-সহ নানা বিষয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। উৎপাদিত দ্রব্য বিক্রির ব্যাপারেও তাদের পথ দেখানো হয়। তবে কিছু কিছু গোষ্ঠীর ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে স্বদিচ্ছার অভাব রয়েছে।

• শিরিষতলা এলাকা থেকে শুইপাড়া পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার রাস্তার হাল অত্যন্ত খারাপ। গোটা রাস্তাটি খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। ফলে যানবাহন চলাচলে মুশকিল হচ্ছে। এ ছাড়াও তেহাট্টা থেকে সুলতানপুর হাসপাতাল পর্যন্ত কিলোমিটার তিনেক রাস্তাটি পাকা হলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবেন।

একতিয়ারউদ্দিন মণ্ডল, হবিবপুর

সভাপতি: এই মুহূর্তে পঞ্চায়েত সমিতির তহবিল তলানিতে। তবুও এলাকার মানুষ লিখিত আকারে বিষয়টি জানালে পঞ্চায়েত সমিতি রাস্তাদু’টির ব্যাপারে ভাবনা চিন্তা শুরু করবে।

• এলাকায় জাঁকজমক করে দোল উৎসব পালিত হয়। উৎসব উপলক্ষে হাজার হাজার মানুষ আসেন। সে সময় শৌচাগার নিয়ে সমস্যা হয়। পঞ্চায়েত সমিতি যদি এই সময় কিছু অস্থায়ী শৌচাগার বসায় ভাল হয়। পাশাপাশি সিঙেরকোন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কোনও বিশ্রামাগার নেই।

রাসবিহারী প্রামাণিক, সিঙেরকোন

সভাপতি: অস্থায়ী শৌচাগারটি নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতি পদক্ষেপ করবে। তবে সিঙেরকোন এলাকায় বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী প্রতিক্ষালয় তৈরির ব্যাপারে সমস্যা হচ্ছে জায়গা না পাওয়া। এলাকার মানুষ জায়গা দিলে দ্রুত প্রতীক্ষালয় গড়ার কাজ শুরু করবে পঞ্চায়েত সমিতি।

• তালা মোড় থেকে টোলা সেতু পর্যন্ত রাস্তাটির দশা এতটাই খারাপ যে যানচলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। টোলা সেতুটিরও জীর্ণ দশা। যে কোনও সময় এই সেতু থেকে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

অশোক মণ্ডল, তালা

পুরপ্রধান: টোলা সেতুর দুর্দশার কথা পঞ্চায়েত সমিতির অজানা নয়। সেতুটি সংস্কারের ব্যাপারে জেলা পরিষদের সঙ্গে কথাও বলা হয়েছে। রাস্তাটিও সংস্কারের চেষ্টা চলছে।

• এলাকায় বহু মানুষ এখনও ডিজিটাল রেশন কার্ড পাননি। তাঁদের সমস্যা কবে সমাধান হবে? এ ছাড়া পাতিলপাড়া থেকে সিঙেরকোন এলাকার ক্যানেল পর্যন্ত একটি দেড় কিলোমিটার কাঁচা নালা রয়েছে। নালাটি কাঁচা হওয়ায় পাতিলপাড়া, দলুইপাড়া, সেনপুকুর পাড়া, হাটতলা এলাকায় বর্ষার সময় জল উপচে সমস্যা তৈরি হয়। নালাটি পাকা করার প্রয়োজন রয়েছে।

পার্থ কুণ্ডু, সিঙেরকোন

সভাপতি: ডিজিটাল রেশন কার্ড যাতে সবাই দ্রুত পান সে ব্যাপারে খাদ্য দফতরের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। চেষ্টা চলছে দ্রুত সমাধান করার। এলাকার মানুষ কাঁচা নালাটি পাকা করার জন্য আবেদন জানালে পঞ্চায়েত সমিতি ভেবে দেখবে।

• এলাকায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের প্রকল্প রয়েছে। তবে সে প্রকল্পের জল বাড়ি বাড়ি পৌঁছয় না। ফলে পানীয় জলের সমস্যা রয়ে গিয়েছে। বহু ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্য কারিগরির কল দূরে থাকায় জল আনতেও সমস্যা হয়।

কাসেম শেখ, পূর্ব সাহাপুর

সভাপতি: বিষয়টি জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের। তবে ভবিষ্যতে ওই এলাকায় বাড়ি বাড়ি যাতে জলের সংযোগ পৌঁছয় সে ব্যাপারে চেষ্টা চালাচ্ছে পঞ্চায়েত সমিতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Municipality Chairman Local Problems
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE