সশরীরে পঞ্চায়েতে গিয়ে নয়। এ বার ঘরে বসেই ‘অ্যাপ’, ‘ই-মেল’ কিংবা টোল ফ্রি (১৮০০২০০০৮৬৪) নম্বরে ফোন করে পঞ্চায়েতের পরিষেবা সংক্রান্ত কিংবা অন্য কোনও নালিশ সরাসরি জানাতে পারবেন বাসিন্দারা। প্রশাসন সূত্রের খবর, মার্চের ১৫ তারিখ থেকেই রাজ্যজুড়ে এই ব্যবস্থা চালু হয়ে গিয়েছে এই ব্যবস্থা। এর পোশাকি নাম ‘গ্রিভেন্স রেড্রেসাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’। চলতি কথায় ‘পঞ্চায়েতের প্রতিকার’।
মাস দু’য়েক আগেই পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ‘জিআরএমএস’ নামে অ্যাপটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। গুগল প্লে-স্টোর থেকে অ্যাপটি প্রথমে ডাউনলোড করতে হবে। তারপরে ভাষা নির্বাচন করে নাম, মোবাইল নম্বর, ইমেল আইডি দিয়ে জেলা এবং গ্রাম নির্বাচন করতে হবে। তারপরে লিখতে হবে ঠিক কী অভিযোগ। শুধু অভিযোগ দায়ের নয়, তার প্রেক্ষিতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে অভিযোগকারী জানতে পারবেন তা-ও।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ জানানোর পরপরই অভিযোগকারীর মোবাইলে এসএমএস-এর মাধ্যমে অথবা ই-মেলে একটি নম্বর আসবে। ওই নম্বর দিয়েই পরে জানা যাবে অভিযোগের প্রেক্ষিতে কী ধরণের পদক্ষেপ হয়েছে। পাশাপাশি পঞ্চায়েতে কিংবা ব্লকে এসে অভিযোগ জানানোর সাবেক নিয়মও থাকবে। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অফিস থেকেই অনলাইনে অভিযোগ নথিভুক্ত করতে হবে। পঞ্চায়েতস্তরে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নির্বাহী সহায়কদের। প্রকল্পের বর্ধমান জেলার কো-অর্ডিনেটর অনির্বাণ রায় জানান, পঞ্চায়েতের প্রাতিষ্ঠানিক সশক্তিকরণ প্রকল্প বা আইএসজিপি এ ব্যাপারে ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের এই পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
পঞ্চায়েতস্তরে সরকারি পরিষেবা নিয়ে অনেক সময়েই নানা অভিযোগ ওঠে। কোথাও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে তহবিল আত্মসাৎ, কোথাও আবার নিম্নমানের কাজের অভিযোগ। রাজনৈতিক রং অনুযায়ী পদক্ষেপ করার নালিশ তো রয়েছেই। ওই সব অভিযোগের সুরাহা নিয়ে প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিয়েছে, আদৌ ভেবেছে কি না— সে সবও অভিযোগকারীর কাছে ধোঁয়াশাই থেকে যায়। সে দিক থেকে নতুন এই পদক্ষেপে উন্নততর প্রশাসন পৌঁছে দেওয়ার ইচ্ছে দেখছেন আউশগ্রামের একটি স্কুলের শিক্ষক সীতাংশু ঘটক, অন্নদাচরণ মিশ্রেরা।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তার আশা, ‘‘নতুন পদ্ধতিতে হয়রানি কমবে। স্বচ্ছ্বতা ও দ্রুততার সঙ্গেও কাজ হবে।’’ পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রযুক্তি নির্ভর এই পদ্ধতিতে যে কোনও অভিযোগের ন্যূনতম চার থেকে সাত দিনের মধ্যে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা আছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ব্লক থেকে রাজ্যস্তর পর্যন্ত একটা কমিটি থাকবে। সেই কমিটি প্রতি মাসে পর্যালোচনা বৈঠক করে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy