Advertisement
১৭ মে ২০২৪

নগদে টান, বছর শেষের উৎসব আয়োজনে ভাটা

বছরের শেষ দিন। কিন্তু প্রতি বছর বড়দিন থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত যে ছবিটা দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজারে দেখা যেত, এ বার তাতে বিস্তর ফারাক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:১৯
Share: Save:

বছরের শেষ দিন। কিন্তু প্রতি বছর বড়দিন থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত যে ছবিটা দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজারে দেখা যেত, এ বার তাতে বিস্তর ফারাক। উপহার থেকে খাওয়াদাওয়া— শহরের প্রায় সব দোকানেই বিক্রির হার গত বছরের তুলনায় বেশ কম বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

নোট বাতিলের পরে ৫০ দিন পার হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যেই বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার যে আশ্বাস কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দেওয়া হয়েছিল, তা হয়নি বলেই দাবি ব্যবসায়ীদের। তাঁরা জানান, প্রতি বারই বড়দিন থেকে শহরের মানুষ উৎসবে মেতে উঠতেন। সব্জি বাজার, মাংসের দোকানে লম্বা লাইন দিয়ে চলত কেনাকাটা। ভিড় উপচে পড়ত শহরের বিভিন্ন রেস্তোরাতে। নতুন বছরের শুরুতে প্রিয়জনকে উপহার দিতে ভিড় জমানো বিভিন্ন বয়সের ক্রেতাদেরও দেখা নেই এ বার। কোথাও আবার টাকার অভাবে অনেক ব্যবসায়ী চাহিদা মতো জিনিসের যোগান রাখতে পারেননি দোকানে। সব মিলিয়ে নোটের চোটে বছর শেষে শহরের ছোটবড় ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি নেই।

শহরের মামরা বাজার এলাকায় উপহার সামগ্রীর দোকান রয়েছে উৎপল প্রামাণিকের। তিনি জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে কার্ডের চাহিদা কমেছে। কিন্তু নতুন বছরে উপহার কেনার ভিড়টা প্রতি বছরই বাড়ছিল। কিন্তু এ বার তা প্রায় নেই বলেই জানান উৎপলবাবু। একই কথা সিটিসেন্টার, দুর্গাপুর বাজার, বেনাচিতি বাজার-সহ বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীদের। একই দাবি মাংস বিক্রেতাদের। শহরের তানসেনের গুড্ডু খান, কাঁকসার আড়রারা শহিদ শেখের মতো মাংস বিক্রেতারা জানান, প্রতি বছর ২৫ ডিসেম্বর থেকে মাংসের বিক্রি অনেক বেড়ে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দোকানের সামনে লাইন দিয়ে থাকতেন ক্রেতারা। কিন্তু এ বার উল্লেখযোগ্য ভাবে বিক্রি কমে গিয়েছে। গুড্ডু খান জানান, আগের বছর এই দিনগুলিতে গড়ে ১৫-২০টি করে ছাগল কাটা হতো। কিন্তু এ বার প্রতিদিন ৩-৪টি ছাগল কাটা হচ্ছে।

এ বার ভিড় কম শহরের বিভিন্ন পার্কেও। অন্যান্য বছর এই সময় উপচে পড়া ভিড় দেখা যেত শহরের বিভিন্ন পিকনিকের জায়গাগুলিকে। ভিড় কম হওয়ায় বিক্রি কমেছে ওই সব জায়গার ব্যবসায়ীদের। সিটিসেন্টারের একটি পার্কের বাইরে দোকান রয়েছে তপন দে-র। তিনি জানান, এ বার বড়দিনে ভাল ব্যবসা হয়নি। নতুন বছরের প্রথম দিনে কী হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

নোট বাতিলের জেরে ব্যবসায়ীদের মতো বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষও। স্বদেশ সাহা, সুমন রায়, শুভদীপ সাহারা জানান, হাতে টাকা না থাকায় এ বার বন্ধুরা মিলে পিকনিকে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে। বছরের প্রথম দিনটা তাই এ বার আর পাঁচটা দিনের মতোই কাটাতে হবে বলে জানান তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

New Year celebration Notes Scrapping
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE