আরও এক সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন বাম সদস্যেরা। কালনার বড়ধামাস, মন্তেশ্বরের জামনা পঞ্চায়েতের পরে মঙ্গলবার দেনুড় পঞ্চায়েতের সাত সদস্যও বিডিও-র কাছে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। ব্লক প্রশাসনের দাবি, শীঘ্রই আস্থা ভোট করানো হবে।
টানা ৩৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পরে এ বার বামেদের হাতছাড়া হয় মন্তেশ্বর বিধানসভা। পঞ্চায়েতের ভোটের পর থেকেই হাওয়া যদিও তৃণমূলের দিকে ঘুরছিল। এই ব্লকের ১৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১০টিতে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। জামনা, দেনুড় এবং বাঘাসন পঞ্চায়েতে থাকে বামেদের হাতে। বিধানসভা ভোটের পর থেকেই এই তিন পঞ্চায়েত দখলে আনতে মরিয়া হয়ে পড়ে তৃণমূল। সম্প্রতি ১৮টি আসনের জামনা পঞ্চায়েতে ১৪ জন সদস্য অনাস্থা আনেন। তাঁদের মধ্যে প্রধান-সহ সাত জন সিপিএমেরই সদস্য। জামনার পরে এ দিন ব্লক অফিসে দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন দেনুড় প়ঞ্চায়েতের সাত সদস্য। দশটি আসনের দেনুড় পঞ্চায়েতে দুটি আসন ছিল তৃণমূলের। সাতটি ছিল সিপিএমের এবং একটি আসনে জিতেছিলেন এআইইউডিফ প্রার্থী। এ দিন অনাস্থায় যে সাত জন সই করেন তাঁদেরর মধ্যে রয়েছেন ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে নির্বাচিত উপপ্রধান কৃষ্ণারানি ঘোষ, তিন সিপিএম সদস্য কাশীনাথ দে, শিখা বাগ এবং মকদুম হোসেন, দুই তৃণমূল সদস্য এবং এআইইউডিফ থেকে নির্বাচিত জালাল শেখ।
বিডিওকে লেখা চিঠিতে পঞ্চায়েত সদস্যেরা অভিযোগ করেছেন, প্রধান পঞ্চায়েত পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারিতা করছেন। সদস্যদের মতামত ছাড়াই নানা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, যা অগণতান্ত্রিক। এ ছাড়াও প্রধান নিয়মিত পঞ্চায়েতে আসেন না, ফলে সাধারণ মানুষ বিভিন্ন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হন বলেও তাঁদের দাবি। পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প সঠিক সময়ে রূপায়িত হচ্ছে না বলেও তাঁদের অভিযোগ। চিঠির শেষ অধ্যায়ে তাঁরা জানিয়েছেন, এই সমস্ত কারণেই প্রধানের অপসারণ চান তাঁরা। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই বলে দাবি করেছেন সিপিএম থেকে নির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রধান বিধান মাজি। তাঁর দাবি, ‘‘কারও কাছে কোনও চাপ ছিল না। যাঁরা অভিযোগ এনেছেন তাঁরা হয়তো লোভে পড়ে অন্য দলে যাচ্ছেন।’’ পঞ্চায়েত পরিচালনায় কোনও গলদ ছিল না বলেও তাঁর দাবি।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঘাসন পঞ্চায়েতটিও নিজেদের দখলে আনার চেষ্টা শুরু হয়ে গিয়েছে। মন্তেশ্বরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি তথা বিধায়ক সজল পাঁজা বলেন, ‘‘১৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে সবক’টিতেই তৃণমূল থাকবেন, সে দিন আর দূরে নয়।’’ যে সমস্ত পঞ্চায়েত সদস্য অনাস্থায় স্বাক্ষর করেছেন তারা তৃণমূলে যোগ দেবেন কি না জানতে চাইলে বিধায়কের জবাব, ‘‘তাঁরা দলে যোগ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। তবে আস্থা ভোটের পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy