অটোর গায়ে লেখা সিটি সেন্টার থেকে মুচিপাড়া। কিন্তু তাকে দেখা গেল দুর্গাপুরের এ-জোনের কনিষ্ক রোডে।
দৃশ্য দুই: প্রান্তিকা থেকে সিটি সেন্টার ভায়া ৫৪ ফুট রুটের অটো দাঁড়িয়ে রয়েছে দুর্গাপুর স্টেশনে।
—রুট নয়। মর্জি মতো এমন ভাবেই ছুটে চলেছে অটো। কখনও চালকের মর্জিমাফিক, কখনও বা আবার রিজার্ভ হয়ে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এমন অনিয়ম দেখার কেউ নেই। এর ফলে ভোগান্তিই দস্তুর শহরবাসীর কপালে।
প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, অতীতে রাজ্য সরকারি সংস্থা ‘দুর্গাপুর রাজ্য পরিবহণ সংস্থা’র উপরেই নির্ভর করত শহরের পরিবহণ ব্যবস্থা। কিন্তু তখন জনবসতি কম থাকায় সরকারি বড় বাসের সংখ্যা কমতে থাকে। চালু হয় বেসরকারি মিনিবাস পরিষেবা। নব্বইয়ের দশকের গোড়া থেকে শিল্প ও ব্যবসায় বিনিয়োগ আসতে শুরু করে দুর্গাপুরে। শহরে ভিড় করতে থাকেন ভিন্ রাজ্য ও জেলার বাসিন্দারাও। ২০০৮ সাল থেকে শহরে শুরু হয় সিএনজি অটো চলাচল।
বাসিন্দারা জানান, অটো চালু হওয়ার পরে আশা করা গিয়েছিল এ বার থেকে অনেক কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছনো সম্ভব হবে। রাতের দিকে শহরে মিনিবাসও তেমন চলে না। ফলে সেই সমস্যারও সমাধান হবে ভেবেছিলেন তাঁরা।
কিন্তু বাস্তবে সন্ধ্যা ৭টা বাজলেই রুটের অটো বন্ধ হয়ে যায় বলে জানান বাসিন্দারা। যদিও অটো চালকদের দাবি, যাত্রী না মেলার কারণেই রুটের অটো তুলে নেন তাঁরা। কিন্তু শহর ঘুরে দেখা গেল, চড়া দামে রিজার্ভ অটো চলছে রাতভর। আবার এমন অনেক রুট রয়েছে, যেখানে অটোই চলে না বা চললেও অনিয়মিত। শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, রুটের বদলে রিজার্ভে যেতেই বেশি উৎসাহ অটো চালকদের। আবার এক-এক জনের হাতে নিয়ম ভেঙে একাধিক অটো ও রুটের অনুমোদন রয়েছে বলেও অভিযোগ। প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরে বারোশোর বেশি অটো চলে। অধিকাংশই চলে শহরের ৫০টির বেশি রুটে। চড়া ভাড়ায় রিজার্ভ খাটানোর জন্যই একাধিক অটো রাখা হয় বলে জানা গিয়েছে। এ সব ছাড়াও বেশি যাত্রী তোলা, যাত্রীদের সঙ্গে দুব্যর্বহারের অভিযোগও উঠেছে অটো চালকদের একাংশের বিরুদ্ধে।
তবে মহকুমা প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, অটো চলাচলের বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করার জন্য পদক্ষেপ করা হয়েছে। সম্প্রতি অটো চালকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা। সেখানেই তিনি জানিয়ে দেন, শহরে নতুন করে আর অটোর পারমিট দেওয়া হবে না। কোন রুটে কতগুলি অটো চলছে তারও তালিকা তৈরি করা হবে। নির্দেষ্ট রুটের বদলে অন্য কোথাও গেলে বা যেখানে সেখানে অটো দাঁড়িয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট চালকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপও করা হবে বলে জানানো হয়েছে। অটো মালিক, প্রশাসন ও পুলিশকে নিয়ে একটি কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। সেই কমিটি স্ট্যান্ড বানানোর জন্য জায়গা দেখবে। শঙ্খবাবু বলেন, ‘‘এখন যে ভাবে অটো চলছে তা শহরের সঙ্গে মানানসই নয়। অটো চলাচলের নির্দিষ্ট নীতি তৈরি করা হবে।’’
আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত দুর্গাপুর সিএনজি অটো অপারেটর্স ইউনিয়নের তরফে সমীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেশ কিছু বিষয়ে অলোচনা হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy