Advertisement
০৪ মে ২০২৪

পুরভোটের স্মৃতি তাজা, আতঙ্ক ধ্রুবডাঙা, কাল্লায়

মাস সাতেক আগের সেই অভিজ্ঞতা এখন তাঁদের মনে টাটকা। তারই মধ্যে এসে গিয়েছে আরও একটি ভোট। কাল, সোমবার আবার তাঁরা বুথে যাবেন। কিন্তু আসানসোলে গত অক্টোবরে পুরভোটের দিন অশান্ত হয়ে ওঠা এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, এ বারও আতঙ্কেই থাকবেন তাঁরা। পুরভোটে আসানসোলের বেশ কিছু এলাকায় গোলমাল বেধেছিল।

আসানসোলের রাস্তায় টহল কেন্দ্রীয় বাহিনীর। নিজস্ব চিত্র।

আসানসোলের রাস্তায় টহল কেন্দ্রীয় বাহিনীর। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৫৪
Share: Save:

মাস সাতেক আগের সেই অভিজ্ঞতা এখন তাঁদের মনে টাটকা। তারই মধ্যে এসে গিয়েছে আরও একটি ভোট। কাল, সোমবার আবার তাঁরা বুথে যাবেন। কিন্তু আসানসোলে গত অক্টোবরে পুরভোটের দিন অশান্ত হয়ে ওঠা এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, এ বারও আতঙ্কেই থাকবেন তাঁরা।

পুরভোটে আসানসোলের বেশ কিছু এলাকায় গোলমাল বেধেছিল। কাল্লায় বুথের সামনে দুষ্কৃতীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে জখম হন নিরীহ ভোটার। বন্দুক উঁচিয়ে ভোটারদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বিসি কলেজে। ধ্রুবডাঙায় দুষ্কৃতীদের মারে মাথা ফেটেছিল ভোটারের। ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের আশঙ্কা, সেই সন্ত্রাস এ বারও না ফিরে আসে। তাঁরা জানান, ভোট ঘোষণার পরে মাঝে-মাঝে কেন্দ্রীয় বাহিনী টহল দিয়েছে এলাকায়। কিন্তু তারা ঘুরে গিয়েছে শুধু বড় রাস্তাতেই। পাড়ায় ঢোকেনি। তাই হুমকি, চোখরাঙানি থেকে ভোটের দিন কতটা রেহাই মিলবে, সংশয়ে রয়েছেন বাসিন্দাদের অনেকেই।

পুরভোটে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে কাল্লা প্রাথমিক স্কুলের বুথে দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম হন সুখলাল কর্মকার। ভোট দিয়ে বেরিয়েই আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। সে দিনের আতঙ্ক এখনও ভোলেননি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এ বার বুথে যাওয়ার ব্যাপারে ভরসা পাচ্ছি না। কিন্তু ভোট দেওয়াটাও তো জরুরি।’’ কিন্তু এ বার তো পাহারায় থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী? সুখলালবাবুর স্ত্রী মায়াদেবীর বক্তব্য, ‘‘প্রথম দফার ভোটে বাহিনীর যে ভূমিকার কথা শুনলাম, তাতে খুব একটা ভরসা পাচ্ছি না।’’

সে বার কাল্লার বুথে গুলির ঘটনায় জখম হয়েছিলেন জীবনে প্রথম বার ভোট দিতে যাওয়া রাহুল হেলা। বুথ পর্যন্ত পৌঁছনোর আগেই ডান পা ফুঁড়ে দেয় বুলেট। এ বার তিনি বলেন, ‘‘ভোট দিতে যাব ভেবেছি। কিন্তু ভয় হচ্ছে, আবার ও রকম হবে না তো!’’ একই আশঙ্কা ইসিএল আবাসন এলাকার বাসিন্দা প্রভাত চৌধুরী, অর্জুন প্রসাদদের। তাঁদের দাবি, এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দেখা গিয়েছে। তবে তারা বড় রাস্তা ধরে চলে গিয়েছে। তাঁরা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী সদর্থক ভূমিকা না নিলে কিন্তু পুরভোটের আতঙ্ক ফিরে আসতে পারে।’’

পুরভোটে অশান্তি হয়েছিল ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের ধ্রুবডাঙা এলাকাতেও। অভিযোগ, বুথ দখলে গিয়ে ভোটারদের প্রতিবাদের মুখে পড়ে এক দল দুষ্কৃতী। সে জন্য কয়েক জন ভোটারকে মারধর করা হয়। ভোট মেটার পরে আবার এলাকায় দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ। কার্যত পুরুষশূন্য হয়ে গিয়েছিল এলাকা। বেশ কিছু দিন আতঙ্কে ছিলেন মহিলারা। এলাকায় গিয়ে সেই আতঙ্ক টের পাওয়া গিয়েছে এ বারও। স্থানীয় বাসিন্দা অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিয়োগ, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘুরতে দেখেছি। কিন্তু মহল্লায় ঢুকছে না। দুষ্কৃতীরা তো আবার মহল্লাতেই ডেরা বাঁধে।’’

ভোটারদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই বলে মনে করেছেন আসানসোলের মহকুমাশাসক তথা মহকুমার রিটার্নিং অফিসার প্রলয় রায়চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘কমিশনের নির্দেশ মতো বুথে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে। এলাকাতেও টহল দেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panic municipal vote asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE