Advertisement
০২ জুন ২০২৪

ডাকঘরে হত্যে, মিলল না টাকা

দিদিকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হবে দিল্লিতে। তার জন্য রীতিমতো প্রেসক্রিপশন নিয়ে হত্যে দিচ্ছেন ভাই।

টাকার অপেক্ষায়। নিজস্ব চিত্র।

টাকার অপেক্ষায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

দিদিকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হবে দিল্লিতে। তার জন্য রীতিমতো প্রেসক্রিপশন নিয়ে হত্যে দিচ্ছেন ভাই।

চিত্র দুই: জিনিসপত্রের রসিদ হাতে দাঁড়িয়ে এক ব্যবসায়ী। সমানে আক্ষেপ করছেন তিনি, ‘এই সপ্তাহে আড়তদারের টাকা মেটাতে না পারলে ব্যবসা লাটে উঠবে।’— দু’টো ছবিই কাটোয়া মুখ্য ডাকঘরের। গ্রাহকদের অভিযোগ, বুধবার দিনভর এ ভাবে হত্যে দিয়েও টাকা মেলেনি।

গত দু’দিন ধরে দিদি জয়শ্রী মণ্ডলের চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে ডাকঘরে আসছেন সঞ্জয়বাবু। এ দিন ভ্যানে চাপিয়ে অসুস্থ দিদিকেও এনেছিলেন ডাকঘরে। চিকিৎসার জন্য প্রায় ২০ হাজার টাকা দরকার হলেও এ দিন হাজার চারেকের বেশি মেলেনি বলে জানান জয়শ্রীদেবী। সঞ্জয়বাবুর ক্ষোভ, ‘‘নিজের টাকা তুলতে পারছি না। কাজ কামাই হচ্ছে। এ বার তো দিদি বিনা চিকিৎসায় মারা যাবেন।’’

এ দিন সঞ্জয়বাবু ছাড়া আর কোনও গ্রাহকই টাকা পাননি বলে অভিযোগ। তেমনই কয়েক জন ব্যবসায়ী পানুহাটের কুমুদবিহারী দেবনাথ, মনসাপাড়ার সুনীল ঘোষ, মণ্ডলপাড়ার ব্রজেশকুমার শীলদের অভিযোগ, ‘‘আজ একেবারেই টাকা না মেলায় মাল কিনতে পারিনি। এ বার তো দোকানে ঝাঁপ ফেলতে হবে।’’ এ দিন মহিলা সমৃদ্ধি যোজনাতেও টাকা তোলা যায়নি বলে অভিযোগ প্রকল্পের এজেন্ট রামপ্রসাদ দাস, অশোক বন্দোপাধ্যায়, সীমা চক্রবর্তীরা।

তবে নোট-বাতিলের ঘোষণার প্রায় দেড় মাস পরেও এমন হাল কেন? মুখ্য ডাকঘর কর্তৃপক্ষের দাবি, ৯ ডিসেম্বর ১০ লাখ টাকা দেওয়ার পরে আর টাকা দিতে পারেনি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। অথচ ডাকঘরে দৈনিক প্রায় ৩০ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এখান থেকেই টাকা যায় ১৫টি উপ-ডাকঘরে। বুধবার পোস্টমাস্টার মিলন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েছি। টাকা চেয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক অফিসেও আবেদন করেছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।’’ তিনি আরও জানান, সেভিংস ও রেকারিংয়ে হাজার, বারোশো টাকা করে দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু বুধবার ভাঁড়ার একেবারে ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় তাও বন্ধ হয়ে যায়।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটির কর্তৃপক্ষের দাবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গত ১২ নভেম্বর ১০০ কোটি টাকা দিয়েছিল। সেখান থেকেই ব্যাঙ্কের আরও ন’টি শাখা, এটিএম, ডাকঘর প্রভৃতি জায়গায় টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে জোগানে ঘাটতি থাকায় সমস্যা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Demonetisation Postoffice
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE