মঞ্চের এক দিকে শিল্পীরা সমবেত গলায় গাইছেন, ‘যা কিছু পাই হারায়ে যায়, না পাই সান্ত্বনা।’ অন্য দিকে তখন কাগজে রঙতুলি বুলিয়ে গানের কথা শুনে তা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টায় একদল খুদে। শনিবারের দুপুরে জমে উঠল প্রথম আসানসোল সঙ্গীত মেলা। বার্নপুরের সম্প্রীতি প্রেক্ষাগৃহে শিল্পীদের এই মেলবন্ধন দেখতে হাজির ছিলেন কয়েকশো শ্রোতা-দর্শক।
আসানসোল পুরসভা এবং এডিডিএ-কে সঙ্গে নিয়ে শহরে এই প্রথম বাংলা সঙ্গীত মেলার আয়োজন করেছে আসানসোলের সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী ‘আলাপ’। বরাকর থেকে রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া থেকে সালানপুর পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা থেকে শিল্পীরা এসেছিলেন। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল কলকাতার নানা শিল্পীকেও। শুক্রবার সন্ধ্যায় শিল্পাঞ্চলের অনেক শিল্পীকে সম্মান জানিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। শনিবার রাত পর্যন্ত তা চলে। শ’দুয়েক শিল্পী গান করেন।
দু’দিনের এই উৎসবে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে শিল্পাঞ্চলের একাধিক স্কুলের উপস্থাপনা। শিল্পাঞ্চলে এরকম একটি উৎসবের আয়োজনে খুশি বাসিন্দারাও। বিদিশা মুখোপাধ্যায় নামে এক শ্রোতা বলেন, ‘‘বাংলা গানের কত সম্ভার, এমন অনুষ্ঠানে বোঝা যায়!’’ স্বর্ণালি মণ্ডল, উদয়ন চট্টোপাধ্যায়, তিমির বিশ্বাস, অলোক রায়চৌধুরী, আনন্দিতা রায়-সহ বেশ কয়েকজন শিল্পীর গান মন কেড়েছে বলে জানান শ্রোতারা। এমন একটি মঞ্চ পেয়ে খুশি আসানসোলের শিল্পীরাও। গিটার বাদক মলয় সরকার বলেন, ‘‘আগে কখনও শহরে এমন অনুষ্ঠান হয়নি। দু’দিনে প্রায় হাজারখানেক গান হয়েছে।’’
তবে অনুষ্ঠানের মাঝে বারবার বিদ্যুৎ বিভ্রাট হওয়ায় শিল্পীদের সমস্যা হয়েছে। বাইরে প্রবল বৃষ্টি। মঞ্চে অলোক রায়চৌধুরী গান ধরেছেন। হঠাৎ লোডশেডিং। দর্শকাসন থেকে মোবাইল ফোনের আলো জ্বলে ওঠে। খালি গলাতেই শিল্পী গান চালিয়ে যান, ‘মানুষ মানুষের জন্য।’