পাইপলাইন মেরামতি করে সকাল থেকেই অনেকটা স্বাভাবিক করা হবে জল সরবরাহ, রবিবার রাতে আশ্বাস দিয়েছিলেন ডিএসপি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, সোমবার সারা দিনও জলের সঙ্কট কাটল না ডিএসপি টাউনশিপে।
এর জেরে বিক্ষোভ, গোলমালও বাধল এলাকায়। দিনে এক বার জল সরবরাহ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। পুরসভা ডিএসপি হাসপাতাল-সহ টাউনশিপে ট্যাঙ্কারে করে জল পাঠায় পুরসভা। তৎপরতার সঙ্গে মেরামতি চললেও পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হবে, জানাতে পারেননি ডিএসপি কর্তৃপক্ষ।
সমস্যার শুরু শনিবার। গাঁধী মোড়ের কাছে ডিএসপি-র লাইনের প্রধান একটি পাইপে ফাটল ধরায় জল সরবরাহ ব্যাহত হয়। সে দিন সকালে অল্প জল দেওয়া হলেও বিকেল থেকে আর মেলেনি বলে অভিযোগ। প্রচণ্ড গরমে জলকষ্টে ভুগতে থাকেন টাউনশিপের হাজার-হাজার বাসিন্দা। ডিএসপি-র ট্যাঙ্কারে করে পাঠানো জল যথেষ্ট ছিল না। পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয় কি তা ঠিক করতে কর্মী সংগঠনগুলিকে নিয়ে বৈঠক করেন ডিএসপি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেখানে চড়াও হয়ে এক আধিকারিককে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধে।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, তাদের কাছে ডিএসপি আর্জি না জানালেও ট্যাঙ্কারে করে জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা পাইপ মেরামতি পরিদর্শনে যান। জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি দুর্গাপুর পুরসভা ও এডিডিএ-র সহযোগিতার প্রস্তাব দেন ডিএসপি কর্তৃপক্ষকে। তবে মেরামতির কাজ একাই চালিয়ে যায় ডিএসপি।
জোগাড়: দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপে জলের বন্দোবস্ত করে ফিরছেন এক বাসিন্দা। ছবি: বিকাশ মশান
সন্ধ্যায় সংস্থার তরফে জানানো হয়, সোমবার সকালের আগে জল সরবরাহ করা সম্ভব নয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত দিনে এক বার করে জল সরবরাহ করা হবে। এ দিন সকালে অবশ্য জল আসেনি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। ডিএসপি-র তরফে জলের দরকার হলে যোগাযোগের জন্য একটি নম্বর দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে ফোন করে সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
এ দিন সকালে তৃণমূলের নেতৃত্বে দ্রুত জল সরবরাহের দাবিতে ডিএসপি-র নগর প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। ১ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান মৃগেন পাল, কাউন্সিলর কৃষ্ণেন্দু আচার্য হাজির ছিলেন। পরিস্থিতি যাতে আয়ত্তের বাইরে না যায় সে জন্য প্রচুর সিআইএসএফ মোতায়েন করা হয়। সিআইএসএফের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক জুড়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। পরে মৃগেনবাবুর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন।
এ দিন ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন রবিবার ডিএসপি-র আধিকারিককে হেনস্থায় মূল অভিযুক্ত জয়ন্ত রক্ষিতও। মৃগেনবাবুর বক্তব্য, ‘‘তিনি ডিএসপি-র কর্মী হিসেবে ছিলেন। এক লক্ষ মানুষ জলের সমস্যায় ভুগছেন। রবিবার তিনি সে কথাই বলতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সহানুভূতির সঙ্গে বিষয়টি না দেখায় সমস্যার সূত্রপাত।’’
ডিএসপি কর্তৃপক্ষ অবশ্য সে কথা মানেননি।
বিকেলে এ-জোনের লাল ময়দানের কাছে কে আগে জল দেবে, সে নিয়ে বিজেপি-র কিছু কর্মীর সঙ্গে গোলমালে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূলের কয়েকজন। বিজেপি-র অভিযোগ, তাঁরা জল নিয়ে আগাম পৌঁছলে তৃণমূলের লোকজন বাধা দেন। প্রতিবাদ করায় তাঁদের পতাকা ছিঁড়়ে ফেলা হয়।
তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ মানেনি। ডিএসপি কর্তৃপক্ষ জানান, অস্থায়ী পাইপ বসিয়ে মঙ্গলবার থেকে এক বেলা করে জল দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy