বরাবর মাধ্যমিকে নজরকাড়া সাফল্য ধরে রেখেছে কাঁকসার রঘুনাথপুরের আবাসিক আদিবাসী একলব্য স্কুল। পড়াশোনার মাধ্যম ইংরেজি ঠিকই। কিন্তু, ইংরেজি ভাষায় পড়ুয়ারা তেমন সড়গড় নয়। সেই সমস্যা কাটাতে বুধবার থেকে ওই স্কুলে শুরু হল বিশেষ এক সফটওয়্যারের মাধ্যমে কাজের ইংরেজি শেখার কোর্স। প্রকল্পের উদ্বোধন করেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। এই প্রকল্পে ইংরেজিতে কথা বলা ও লেখা শেখানো হবে পড়ুয়াদের। কর্মজীবনে যাতে ইংরেজিতে দক্ষতার অভাবে হোঁচটা না খেতে হয়, সেই লক্ষ্যেই ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসাবে এই স্কুলে উদ্যোগ শুরু হল। পরে ধাপে ধাপে রাজ্যের বাকি ছ’টি একলব্য স্কুলেও তা ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
সরকারি খরচে আদিবাসীদের শিক্ষার সুযোগ করে দিতে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থে ২০০২ সালে একলব্য স্কুলগুলি গড়ে ওঠে। আদিবাসী পড়ুয়াদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা। ইংরেজি মাধ্যমে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পাঠ্যক্রম অনুসরণ করা পড়ানো হয়। রঘুনাথপুরের স্কুলটিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় চারশো। যার প্রায় অর্ধেক ছাত্রী। প্রতি বছর মাধ্যমিকে ভাল ফল করে স্কুলটি।
জেলাশাসক এ দিন জানিয়েছেন, একটি বেসরকারি সংস্থার সাহায্যে ‘বুসু’ (বিইউএসএসইউ) নামে সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইংরেজি শেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ইংরেজিতে লেখা-পড়া করলেও বলতে গেলে সমস্যা হয় পড়ুয়াদের অনেকের। অথচ প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে গেলে ইংরেজি ভাল বলতে ও লিখতে পারা জরুরি।’’ এ দিন জেলাশাসক নিজে ক্লাসও নেন। স্কুলের শিক্ষকেরা জানান, ভাল ফল করেও ইংরেজি বলতে না পারার জন্য হীনমন্যতায় ভুগতে হয় পড়ুয়াদের। স্কুলের কম্পিউটার শিক্ষক অয়ন ঘোষ বলেন, ‘‘এই কোর্স পড়ুয়াদের আত্মবিশ্বাস জোগাবে।’’
অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোর্সটির পুরোটাই হবে অনলাইনে মাধ্যমে। কানে হেডফোন লাগিয়ে শুনবে পড়ুয়ারা। একাদশ শ্রেণির বিশ্বজিৎ মুর্মু, প্রশান্ত মুর্মু, মল্লিকা মুর্মুরা জানায়, এ ভাবে আধুনিক পদ্ধতিতে ইংরেজি ভাষা শিখে ভাল লাগছে। ভবিষ্যতে কোথাও গিয়ে ইংরেজিতে কথা বলতে অসুবিধা হবে না। স্কুলে ১৫টি কম্পিউটার আছে। প্রতি ক্লাসে ১৫ জন করে শিখতে পারবে। জেলাশাসক আরও ১০টি কম্পিউটার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এদিন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক মির্দ্দা বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের পড়ুয়ারা পড়াশোনায় ভালো। এবার ইংরেজি বলা ও লেখায় পারদর্শী হয়ে গেলে চাকরির বাজারে তারা একধাপ এগিয়ে থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy