Advertisement
E-Paper

বৃষ্টিতে একাকার রাস্তা-নর্দমা, প্রশ্ন নিকাশি ব্যবস্থায়

এক দিন নিখোঁজ থাকার পরে এক পৌঢ়ার দেহ মিলল কালভার্টের নীচ থেকে। দুর্গাপুরে সিটি সেন্টারের কবিগুরু এলাকায়। বৃষ্টিতে জল উপচে রাস্তা ও নর্দমার মধ্যে ফারাক করতে না পেরে পা হড়কে নীচে পড়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৬ ০২:০৯
আঢাকা নর্দমায় মেলে দেহ।—নিজস্ব চিত্র।

আঢাকা নর্দমায় মেলে দেহ।—নিজস্ব চিত্র।

এক দিন নিখোঁজ থাকার পরে এক পৌঢ়ার দেহ মিলল কালভার্টের নীচ থেকে। দুর্গাপুরে সিটি সেন্টারের কবিগুরু এলাকায়। বৃষ্টিতে জল উপচে রাস্তা ও নর্দমার মধ্যে ফারাক করতে না পেরে পা হড়কে নীচে পড়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। বুধবার দেহ উদ্ধারের পরে শহরের নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার মানুষজন। খোলা নর্দমা ঢাকা দেওয়ার দাবিও তুলেছেন তাঁরা।

সিটি সেন্টারের সেল কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির ২৫ নম্বর বিনয়-বাদল-দীনেশ সরণির বাসিন্দা ছিলেন রেখা দেবরায় (৬১)। স্বামী নিখিলবাবু এবং মেয়ে সুকৃতীর সঙ্গে থাকতেন তিনি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে রেখাদেবী বাড়ি থেকে বাজার করতে বেরোন। বাজার সেরে বাসে‌ চেপে ফেরার সময়ে মেয়ের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়। জানান, বাড়ির কাছাকাছি এসে গিয়েছেন। মেয়ে তখন বাড়ির বাইরে ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর ১টা নাগাদ কবিগুরু সেকেন্ড বাসস্টপে নেমে পাশে একটি মিষ্টির দোকানে ঢোকেন রেখাদেবী। সেখান থেকে বেরিয়ে ফোন করেন স্বামী নিখিলবাবুকে। কিন্তু তার পরে আর বাড়ি ফেরেননি।

মেয়ে সুকৃতীদেবী জানান, বাসস্টপ থেকে বাড়ি হেঁটে মিনিট পাঁচেক সময় লাগে। সেখানে আধ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও মা বাড়ি না ফেরায় তাঁরা খোঁজ শুরু করেন। কিন্তু রেখাদেবীর মোবাইলে ফোন করেও লাভ হয়নি। ফোনে পাওয়া যায়নি। পুলিশকে দুপুরেই তাঁরা বিষয়টি জানান। কিন্তু পুলিশ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করেনি বলে অভিযোগ সুকৃতীদেবীর। বুধবার দুপুরে এলাকাবাসীর কাছে খবর পেয়ে সুকৃতীদেবী ওই কালভার্টের কাছে গিয়ে জলে মায়ের শাড়ির একাংশ দেখতে পান। তার পরেই লোকজন ডেকে রেখাদেবীর দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর ব্যাগটিও মেলে।

রেখাদেবীর দেহ মেলার পরেই এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন এলাকার মানুষজন। মঙ্গলবার শহরে ভাল বৃষ্টি হয়েছিল। জল জমে রাস্তা ও নর্দমা একাকার হয়ে যাওয়ায় বুঝতে না পেরে পড়ে গিয়ে রেখাদেবীর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ মনে করছেন। বাসিন্দারা জানান, সিটি সেন্টার, বেঙ্গল-অম্বুজা এলাকার তুলনায় কবিগুরু এলাকাটি ঢালু। ফলে, জলের তোড় অনেক বেশি থাকে। কিন্তু তা দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত নিকাশি ব্যবস্থা গড়া হয়নি বলে অভিযোগ। তাছাড়া নর্দমা সাফাই নিয়েও অভিযোগ রয়েছে বাসিন্দাদের। স্থানীয় বাসিন্দা চিন্ময়ী পালিত বলেন, ‘‘নর্দমা না ঢাকলে এমন দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।’’ সুকৃতীদেবী বলেন, ‘‘প্রবল বৃষ্টি হলে জল নামতে দেরি হয়। তখন আর নর্দমা আলাদা করা যায় না। ফলে, ফের বিপদ ঘটতেই পারে।’’ পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই দুর্ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। শহরে যত খোলা নর্দমা আছে, আমরা ধাপে-ধাপে সেগুলি ঢাকার ব্যবস্থা করছি। ওই সব এলাকার জল বয়ে গিয়ে ভগৎ সিংহ এলাকায় যে নর্দমায় পড়ে সেটি ডিএসপি-র অধীন। সেটি সংস্কারে আমরা ডিএসপি-র সঙ্গে কথা বলব।’’

তবে রেখাদেবী অন্য দিন যে রাস্তা ধরে যাতায়াত করেন, সেখান থেকে বেশ খানিকটা দূরে ওই কালভার্ট। কেন তিনি রাস্তা বদলালেন তা পরিষ্কার নয় পরিবারের কাছে। সুকৃতীদেবী বলেন, ‘‘কেন মা অন্য রাস্তা ধরে বাড়ির দিকে আসছিল, তা পরিষ্কার নয়। হয়তো অন্য দিনের রাস্তা দিয়ে এলে এমন ঘটত না।’’

distress drainage system
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy