লাফিয়ে বেড়ে গিয়েছে বীজ-আলুর দাম। তার জেরে সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা। তবে এর ফলে আলু চাষের এলাকা কমবে না বলেই আশা করছেন কৃষি আধিকারিকেরা। বরং, গত বছরের চেয়ে বেশি জমিতেই আলু চাষ হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। প্রগতিশীল আলু বীজ ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যদেরও একাংশের দাবি, মরসুমের শুরু থেকেই বীজ-আলু কেনার উৎসাহ রয়েছে চাষিদের।
চাষি ও ব্যবসায়ীদের অনেকে জানান, পুজোর পরে পোখরাজ জাতের পঞ্জাবের সার্টিফায়েড বা শংসিত বীজের দাম ছিল বস্তা প্রতি (৫০ কেজি) ১২০০-১৪০০ টাকা। এ বার সেখানে তা কিনতে হচ্ছে ৩৫০০-৪০০০ টাকায়। এখনও পঞ্জাবের জ্যোতি জাতের সার্টিফায়েড আলুর বীজ জেলায় আসেনি। ওই বীজ আসতে কয়েকদিন দেরি আছে। এর মধ্যেই অনেক চাষি প্রতি বস্তা ৪২০০ টাকা দরে আলুর বীজ কেনার জন্য ‘বুক’ করে রেখেছেন। গত বছর সার্টিফায়েড জ্যোতি আলুর বীজ বিক্রি শুরু হয়েছিল ১৪০০ টাকায়। শেষে দাম দাঁড়িয়েছিল ২৬০০ টাকা। এ ছাড়া, হিমঘরে বীজের জন্য রাখা আলুর দামও প্রতি বস্তা গড়ে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর ওই আলুই চাষি কিনেছিল ৭৫০-৮০০ টাকায়।
এ বছর বীজ-আলু দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণ কী? কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, পোখরাজ জাতের আলু জলদি জাত বলে গ্রাম বাংলায় পরিচিত। পূর্ব বর্ধমানে সাধারণত ৭২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। তার মধ্যে ৭-৮% জলদি জাতের আলু চাষ করা হয়। জ্যোতি আলু লাগানোর ফাঁকেই পোখরাজ আলু বাজারে চলে আসে। এ রাজ্যের চাষিরা পোখরাজ জাতের আলু হিমঘরে পাঠান না। ওই আলুর বীজ পুরোটাই পঞ্জাব থেকে আসে। কিন্তু এ বার বাজারে আলুর দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় চাষিদের একটি বড় অংশ পোখরাজ আলু চাষ করার দিকে ঝুঁকেছেন। ফলে জোগানে টান পড়ছে। সে কারণে পোখরাজ জাতের বীজের দাম বেড়ে গিয়েছে। মেমারির বাসিন্দা, প্রগতিশীল আলু বীজ ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য আশিস দাসের দাবি, “পঞ্জাবের পোখরাজ আলুর বীজ বাংলাতেই বেশিরভাগ আসত। এ বার বাংলার বদলে গুজরাতে চলে গিয়েছে। জ্যোতি আলুর বীজ আনতে প্রতি বস্তায় চার হাজার টাকার উপর খরচ পড়ে যাচ্ছে।’’