Advertisement
০২ মে ২০২৪

প্রসূতির মৃত্যু, ১০ ঘণ্টা ধরে চলল ক্ষোভ

প্রসবের পরে মহিলার মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে মৃতার পড়শি ও পরিবারের লোকজন ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ দেখালেন। শনিবার রাত ও রবিবার সকালে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ঘটনা।

কালনা মহকুমা হাসপাতালে শোকার্ত পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

কালনা মহকুমা হাসপাতালে শোকার্ত পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৮ ১৪:২১
Share: Save:

প্রসবের পরে মহিলার মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে মৃতার পড়শি ও পরিবারের লোকজন ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ দেখালেন। শনিবার রাত ও রবিবার সকালে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ঘটনা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রসব-যন্ত্রণা নিয়ে শনিবার সকালে ভর্তি করানো হয় কালনা পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বুল্টি মুখোপাধ্যায় (১৯) নামে এক প্রসূতি। পরিবারের লোকজন হাসপাতালে দাঁড়িয়ে জানান, রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বুল্টি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে (সিজারিয়ান ডেলিভারি) প্রসব করেন একটি কন্যাসন্তান। হাসপাতালের শয্যায় বুল্টিকে নিয়ে যাওয়ার পরেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় বলে পরিবারের দাবি। বুল্টির আত্মীয় লেবু মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘রাতে বার বার চিকিৎসককে ডাকতে বলা হলেও কর্তব্যরত নার্সেরা কান দেননি, উল্টে এক জন বুল্টির গালে চড় কষিয়ে দেন। যখন ডাক্তার আসেন, তখন অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। রাত আ়ড়াইটা নাগাদ মৃত্যু হয় বুল্টির।’’

এর পরেই শুরু হয় বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীরা দাবি জানাতে থাকেন, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই বধূর পরিবারের লোকজনকে তাঁর দেহ নেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েও লাভ হয়নি। রবিবার সকালে বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালে আসেন এলাকার তৃণমূল নেতারা। তাঁরাও দফায় দফায় আলোচনায় বসেন বধূর পরিবারের সঙ্গে। এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘এটা সরকারি হাসপাতাল। চিকিৎসকদের ভুল হয়েছে, এমনটা মনে হলে লিখিত অভিযোগ করতে হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেন ক্ষতিপূরণ দিতে যাবে। এ সব কথা বধূর পরিবারকে বোঝানো হয়।’’ শেষমেশ রবিবার বেলা ১২টা নাগাদ দেহ নিয়ে যান বুল্টির পরিবারের সদস্যরা।

যদিও গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করে হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘অস্ত্রোপচারের পরে ওই বধূর শ্বাসকষ্ট ও খিচুনির হচ্ছিল। রাতে চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করেন। বধূর পরিবারের লোকজন লিখিত অভিযোগ করলে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’’ বধূকে চড় মারার অভিযোগ প্রসঙ্গে সুপারের বক্তব্য, ‘‘অনেক সময়ে রোগীকে চনমনে করতে তাঁর শরীরের নানা জায়গায় ঝাঁকুনি দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও তেমনটা ঘটতে পারে।’’

তবে দীর্ঘক্ষণ দেহ হাসপাতালে রাখার ঘটনায় চিকিৎসকদের একাংশ ক্ষুব্ধ। তাঁদের কথায়, হাসপাতালে অন্য রোগীরাও এসেছেন। এমন ঘটনায় তাঁরা অসুবিধায় পড়েন। এক রোগীর আত্মীয় পরিমল করের ক্ষোভ, ‘‘দীর্ঘ সময় ধরে হাসপাতালে গিজ গিজ করেছে অসংখ্য মানুষ। প্রশাসনের এ বিষয়ে আরও কড়া হওয়া দরকার ছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Pregnant Negligence Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE