Advertisement
E-Paper

জামুড়িয়ায় মেগা শিল্পতালুক গড়ার প্রস্তাব শিল্প-বৈঠকে

পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি মিলছে বারবার। কিন্তু এখনও তেমন কাজ কিছু হয়নি। শিল্পোদ্যোগীর দখল হয়ে যাওয়া জমি পুনরুদ্ধারে আদালত সাহায্য করার নির্দেশ দিলেও প্রশাসন তা দিচ্ছে না। শিল্পপতিদের উৎসাহ দিতে তৈরি জেলা কমিটির বৈঠকে ফের উঠল এমনই নানা অভিযোগ।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৫ ০১:০৯

পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি মিলছে বারবার। কিন্তু এখনও তেমন কাজ কিছু হয়নি। শিল্পোদ্যোগীর দখল হয়ে যাওয়া জমি পুনরুদ্ধারে আদালত সাহায্য করার নির্দেশ দিলেও প্রশাসন তা দিচ্ছে না। শিল্পপতিদের উৎসাহ দিতে তৈরি জেলা কমিটির বৈঠকে ফের উঠল এমনই নানা অভিযোগ।

সম্প্রতি আসানসোলে এডিডিএ-র অতিথি নিবাসে শিল্পাঞ্চলের বেশ কিছু ব্যবসায়ী ও শিল্পপতির সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রশাসনের কর্তারা। ছিলেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন, পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ, আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস এবং এডিডিএ-র আধিকারিকেরা। ব্যবসায়ীদের নানা দাবি-দাওয়া শুনে তাঁদের আশ্বস্ত করেন কর্তারা। বেশ কিছু কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলেও তাঁরা জানান।

বৈঠকে হাজির থাকা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, নিয়মিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও গত চার বছরে এই অঞ্চলের শিল্পতালুকগুলির হাল ফেরাতে কাজ শুরু হল না কেন, বৈঠকের শুরুতেই এই প্রশ্ন তোলা হয়। এডিডিএ-র এক কর্তা জানান, জামুড়িয়া শিল্পতালুকের পরিকাঠা উন্নয়ন কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। বাকি সব শিল্পতালুকগুলিতেও শীঘ্র এই কাজ শুরু হবে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে কাজের দরপত্র ডাকার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানান তিনি।

বরাকরের এক ক্ষুদ্র শিল্পপতি বৈঠকে জানান, শিল্প গড়ার জন্য তিনি এক সময়ে ২২ বিঘা জমি কিনেছিলেন। সেই জমির পাশেই এক বড় ব্যবসায়ীর প্রায় একশো বিঘা জমি রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, ওই বড় শিল্পপতি তাঁর নিজের জমি পাঁচিল দিয়ে ঘেরার সময়ে তাঁর ২২ বিঘা জমিও ঘিরে ফেলেছেন। প্রতিকারের আবেদন জানিয়ে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আদালত প্রশাসনকে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। ওই ব্যবসায়ীর দাবি, এর পরে জমি পুনরুদ্ধারের জন্য বারবার আবেদন জানালেও প্রশাসন তাঁর সঙ্গে সহযোগিতা করেনি। বৈঠকে অন্য শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরাও এমন সমস্যা মেটাতে উদ্যোগের আর্জি জানালে আবার পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, কবে তা কার্যকর হবে, তার কোনও সদুত্তর মেলেনি।

বৈঠকে শিল্পপতিরা চন্দ্রচূড় শিবমন্দির ও বরাকরের বেগুনিয়া থেকে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক পর্যন্ত কংক্রিটের রাস্তা তৈরির প্রস্তাব দেন। তা বৈঠকে অনুমোদিত হয়। সব শেষে জামুড়িয়া শিল্পতালুকের প্রথম উদ্যোগপতি অশোক সান্থালিয়া জানান, জামুড়িয়ার তপসিতে তাঁর ১৭ একর জমি আছে। সেখানে তিনি ফ্যাটি অ্যাসিড ও গ্লিসারিন তৈরির কারখানা তৈরি করতে চান। অশোকবাবু বলেন, “ওই কারখানাকে কেন্দ্র করে সাবান, ডিটারজেন্টের মতো কুড়িটি সহায়ক শিল্প কারখানা গড়ে উঠতে পারে। আমার প্রস্তাব, এখানে মেগা শিল্পতালুক গড়ার উদ্যোগ হোক।’’ তাঁর দাবি, পূর্ব ভারতে ফ্যাটি অ্যাসিড ও গ্লিসারিনে চাহিদা যেমন প্রচুর, তেমনই সহায়ক শিল্পগুলির দাবিও সব এলাকায় বাড়ছে। এ নিয়ে আলোচনার প্রতিশ্রুতি দেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা।

বৈঠকের পরে শিল্পপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান বলেন, “এই কমিটির থেকে এখনও পর্যন্ত শুধু প্রতিশ্রুতি মিলেছে। এ বার জামুড়িয়ার উদাহরণ দেওয়া হল। আদতে পুরনো শিল্পতালুকগুলির পরিকাঠামোর উন্নয়ন না হওয়ায় অন্য ক্ষেত্রের ব্যবসায়ীরা শিল্পস্থাপনে উৎসাহ দেখিয়েও শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছেন। পুঁজি, জমি ও শ্রমিকের অভাব না থাকলেও নতুন শিল্প হচ্ছে না।”

জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, ‘‘কমিটির এক্তিয়ার অনুযায়ী দাবি মেটানোর চেষ্টা হবে। শিল্পক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য এই কমিটি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই তার সুফল মিলবে।’’

Jamuria Proposal Industrial hub Asansol
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy