Advertisement
০৬ মে ২০২৪

বড়দিনের আবহে গির্জা সংস্কারের দাবি

গির্জার বয়স দুই শতাব্দী। রয়েছে ইউরোপীয় স্থাপত্যের বহু নিদর্শন। বড়দিন উপলক্ষে রবিবার বর্ধমানের কার্জন গেট লাগোয়া ‘ক্রাইস্ট চার্চে’ বিভিন্ন অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।

বর্ধমানের ‘ক্রাইস্ট চার্চ’। নিজস্ব চিত্র।

বর্ধমানের ‘ক্রাইস্ট চার্চ’। নিজস্ব চিত্র।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:২১
Share: Save:

গির্জার বয়স দুই শতাব্দী। রয়েছে ইউরোপীয় স্থাপত্যের বহু নিদর্শন। বড়দিন উপলক্ষে রবিবার বর্ধমানের কার্জন গেট লাগোয়া ‘ক্রাইস্ট চার্চে’ বিভিন্ন অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। কিন্তু এ সব অনুষ্ঠানের মাঝেই ঘুণ ধরা কাঠের কাজগুলো কোথাও যেন মনখারাপ করানো। গির্জা কর্তৃপক্ষ এবং শহরের বিশিষ্ট জনেরা গির্জা সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।

শহরের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ১৮১৬ সালে ক্যাপ্টেন জেমস স্টুয়ার্টের উদ্যোগে বাসিন্দাদের চাঁদায় তৈরি হয় গির্জাটি। ১৯১০ সালে প্রকাশিত ‘বর্ধমান গেজেটিয়ারে’ জেমস পিটারসন গির্জা তৈরির বিষয়ে লিখেছিলেন। ওই গির্জা তৈরিতে বর্ধমানের রাজাদেরও অবদান রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ইংরেজ শাসকেরাও গির্জার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বছরে সাড়ে ১২ টাকা আর্থিক অনুদান বরাদ্দ করে। তবে অনেকের দাবি, ১৮৩৬ থেকে ১৮৫২ সালের মধ্যে জার্মান পাদ্রি রেভারেন্ট জেমস্ ওয়াইট ব্রেখটের হাতে গির্জাটি তৈরি হয়।

রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের বই ‘ঐতিহ্যে’র প্রথম বর্ষের প্রথম সংখ্যায় গির্জাটি সম্পর্কে লেখা হয়, ‘‘সাধারণত প্রার্থনা হলের দু’পাশে সমান্তরাল ভাবে দু’টি খিলেন পথ থাকে। এখানে সে রকম কিছু নেই। খিলেন পথবিহীন বিরল চার্চকে একক-হল চার্চ বলা হয়।’’ ১৮৯৩ সালের উরসেস্টারের বিশপ জন স্টুয়ার্ট, নরওয়ের আর্চডিকন টমাস টমসন, কেম্ব্রিজের একটি কলেজের শিক্ষক এডওয়ার্ড হেনরি ওই গির্জার ভিতরে একটি বেদী তৈরি করেন।

এমন বহু ঐতিহ্যের সাক্ষী গির্জাটির শিল্পকলা সম্পর্কে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কিউরেটর সভাপতি রঙ্গন জানা বলেন, “এই গির্জার ভিতরে থাকা চালকাঠামোর স্থাপত্যের উদাহরণ আমাদের দেশে প্রাক-ঔপনিবেশিক যুগে নেই।”

বছর দশেক আগে রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের দেওয়া টাকায় ওই গির্জার সংস্কার করে বর্ধমান পুরসভা। কিন্তু তার পরেও ওই গির্জার দেওয়াল নোনা ধরে নষ্ট হতে বসেছে। ভিতরে থাকা কাঠের কাজগুলিতেও ঘুণ ধরেছে। গির্জাটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে ‘ক্রাইস্ট চার্চ’ কর্তৃপক্ষ রাজ্য হেরিটেজ কমিশনে চিঠি পাঠান। মাস ছ’য়েক আগে বর্ধমান হেরিটেজ অ্যাসোসিয়েশনও ওই গির্জা পরিদর্শন করে সংস্কারের দাবি জানিয়ে ভিডিও ফুটেজ পাঠায় কমিশনকে। তবে ফের ফের টাকা মিলবে কি না, সে বিষয়ে কমিশনের সদস্যরা ঐক্যমতে পৌঁছননি বলে দাবি হেরিটেজ অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সর্বজিৎ যশের।

তবে এই সব দাবির মধ্যেই বড়দিন উপলক্ষে উৎসবের মেজাজ গির্জায়। আলো আর ‘খ্রিস্টমাস ট্রি’-তে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে গির্জাকে। ‘ক্রাইস্ট চার্চে’র সম্পাদক রাহুল মইলি বলেন, “চার্চের দ্বিশতবর্ষে বছরভর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Christ Church Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE