Advertisement
E-Paper

শিশু পাচারে জড়িত রৌশনারা, জেরা করে দাবি কর্তাদের

সন্দেহ ছিলই। এ বার শিশু বিক্রিতে ধৃত আয়া রৌশনারার সঙ্গে শিশু পাচারের যোগও খুঁজে পেলেন সিআইডির কর্তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:২৪
রৌশনারা বেগম। নিজস্ব চিত্র।

রৌশনারা বেগম। নিজস্ব চিত্র।

সন্দেহ ছিলই। এ বার শিশু বিক্রিতে ধৃত আয়া রৌশনারার সঙ্গে শিশু পাচারের যোগও খুঁজে পেলেন সিআইডির কর্তারা।

গোয়েন্দাদের দাবি, এর আগে রৌশনারা শিশু পাচার করলেও তা কাকপক্ষীতেও টের পায়নি। কিন্তু নিজের পাড়ায় বসে শিশু বিক্রি করতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে যান তিনি।

সরকারি ভাবে দায়িত্ব না নিলেও মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সিআইডি-র আধিকারিকরা বেশ কয়েকবার ধৃত দুই আয়া রৌশানারা বেগম ও সন্ধ্যা মিত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। আর এক ধৃত নার্সিংহোম মালিককেও টানা জেরা করেন গোয়েন্দারা। ওই জিজ্ঞাসাবাদের পরেই রৌশানারাকে নিয়ে সন্দেহ শুরু হয় গোয়েন্দাদের। নানা সূত্র ধরে রৌশানারা সম্পর্কে খোঁজ নিতে শুরু করেন তাঁরা। গোয়েন্দাদের দাবি, সেই সূত্র ধরে জানা গিয়েছে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে কোনও মহিলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বা অন্য কোনও নার্সিংহোমে শিশুর জন্ম দিচ্ছেন এমন খবর নিজস্ব নেটওয়ার্কে জানতে পারত রৌশানারা। এরপরেই ওই প্রসূতি ও প্রসূতির বাড়ির লোকেদের কাছে ‘বন্ধু’ হয়ে পরামর্শ দিত সে। শিশু জন্মানো থেকে সদ্যোজাতকে ‘পাচার’ করার দায়িত্বও নিয়ে নিত সহজে। সে জন্য তাঁর ‘প্যাকেজ’ ছিল, ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা।

গোয়েন্দারা আরও জানতে পেরেছেন, এ বছরের মে মাসে শহরের একটি নার্সিংহোম থেকে প্রথম একটি শিশু পাচার করে রৌশনারা। এ ছাড়া আরও দুটি শিশু পাচারে সে যুক্ত। সিআইডি-র এক কর্তার কথায়, “তিনটি শিশুর দুটির হদিশ মিলেছে। একটি রয়েছে বাংলার বাইরে, আরেকটি রয়েছে উত্তর চব্বিশ পরগনায়। ধর্মের কল বাতাসে নড়েছে! সে জন্যই ঘরের মাঠে খেলতে গিয়ে ধরা পড়ে গেল রৌশানারা।’’ গোয়েন্দাদের দাবি, ওই আয়ার নেটওয়ার্কে বেশ কয়েকজন পুরুষ সঙ্গী রয়েছেন। যাঁদের মোটরবাইকে চেপে দিনভর সে যাতায়াত করত। সিআইডি তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে রিপোর্টও পাঠিয়ে দিয়েছেন কর্তারা। তবে সরকারি ভাবে মামলার দায়িত্বে থাকা জেলা পুলিশ এ ব্যাপারে নিশ্চুপ। তাঁদের শুধু দাবি, রৌশানার গতিবিধি নিয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে।

রবিবার রাতে বর্ধমান শহরের বাহির সর্বমঙ্গলা এলাকায় পশ্চিমপাড়ায় একটি বাড়িতে শিশু বিক্রির ছক চলাকালীনই কেঁদে ওঠে সদ্যোজাতটি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে রৌশনারা, পরে আরেক আয়া ও নার্সিংহোম মালিককে পুলিশ ধরে ফেলে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া সদ্যোজাত শিশুটি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এসএনসিইউতে ভর্তি রয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দিকে শিশুটির শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলেও এখন সুস্থ রয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় এই শিশুকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার চিঠিও করেছেন।

এ দিন জেলা কংগ্রেস গ্রামীণ এবং বর্ধমান– দুর্গাপুর জেলা যুব কংগ্রেসের তরফে বর্ধমানে শিশু পাচারের ঘটনা ও নার্সিংহোমগুলিতে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ, রক্তের ব্যবহার বন্ধের দাবি তোলা হয়। অতিরিক্ত জেলাশাসকের কাছে বৃহস্পতিবার একটি অভিযোগপত্র জমা দেন তাঁরা। কংগ্রেসের দাবি, অবিলম্বে এই বিষয়ে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে প্রশাসনকে। সভায় ছিলেন কংগ্রেসের জেলা গ্রামীণের সভাপতি আভাস ভট্টাচার্য, দলের সাধারণ সম্পাদক কাশীনাথ গাঙ্গুলি, বর্ধমান-দূর্গাপুর লোকসভার যুব সভাপতি অভিজিৎ ভট্টাচার্য প্রমুখ।

Trafficking
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy