Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

খেলবে ছাত্রীরা, জমি দান ধাত্রীগ্রামে

১৯৫৯ সালে ধাত্রীগ্রামে তৈরি হয় এই স্কুলটি। এখন দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এই স্কুলে ছাত্রীর সংখ্যা দেড় হাজারেরও বেশি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষার ভাল ফলের পাশাপাশি খোখো, ফুটবল, সাঁতারে সাফল্য পায় স্কুলটি।

নাচে-গানে: মিলেছে মাঠ, অনুষ্ঠান হল স্কুলে। —নিজস্ব চিত্র।

নাচে-গানে: মিলেছে মাঠ, অনুষ্ঠান হল স্কুলে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৭ ০০:৩৮
Share: Save:

ক্রীড়াক্ষেত্রে নজর কাড়ছিল স্কুলের মেয়েরা। কিন্তু স্কুলের নিজস্ব কোনও খেলার মাঠই ছিল না। কালনার ধাত্রীগ্রাম বালিকা বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ গড়তে স্কুলকে জমি দিতে এগিয়ে এলেন এলাকারই কিছু বাসিন্দা। ‘সবুজসাথী ক্রীড়াঙ্গন’ নামে নতুন মাঠের শনিবার উদ্বোধন করলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।

১৯৫৯ সালে ধাত্রীগ্রামে তৈরি হয় এই স্কুলটি। এখন দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এই স্কুলে ছাত্রীর সংখ্যা দেড় হাজারেরও বেশি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষার ভাল ফলের পাশাপাশি খোখো, ফুটবল, সাঁতারে সাফল্য পায় স্কুলটি। এই স্কুলেরই ছাত্রী শ্রেয়া ভট্টাচার্য বেশ কয়েক বার প্যারাঅলিম্পিকে পদক জিতেছে। কিন্তু স্কুলের নিজেদের কোনও মাঠ না থাকায় ছাত্রীদের অনুশীলন করতে যেতে হতো দূরের মাঠে। বেশি দামের কারণে বড় জমি কিনে ওঠা সম্ভব হয়নি স্কুলের পক্ষে।

এই পরিস্থিতিতে মুশকিল আসানে এগিয়ে আসেন এলাকার কয়েক জন। স্কুল লাগোয়া ২৩ শতক একটি নিচু জমি ছিল, যেটির মালিক কুণাল চট্টোপাধ্যায়, মিহিরকুমার চট্টোপাধ্যায়, ধ্রুবজ্যতি বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবাশিষ চট্টোপাধ্যায় ও পুলককুমার চট্টোপাধ্যায়। স্কুল পরিচালন সমিতির তরফে তাঁদের কাছে ওই জমিটি দান করার জন্য আবেদন জানানো হয়। তাঁরা রাজি হয়ে যান। তার পরে দু’বছর ধরে মাটি ফেলে খেলার উপযোগী করে তোলা হয় মাঠটি।

এ দিন মাঠের উদ্বোধনে এসে স্বপনবাবু জমিদাতাদের সংবর্ধনা দেন। তিনি বলেন, ‘‘ফুটবল, খোখো-সহ নানা খেলায় ভাল সাফাল্য পেয়েছি স্কুলটি। খেলার মাঠটির যা পরিকাঠামো তাতে একটি ভাল কবাডি দলও গড়তে পারে স্কুল। যাঁরা জমি দান করলেন তাঁদের অবদান স্কুল মনে রাখবে।’’ ধাত্রীগ্রাম বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি শিবুপদ কোলে নিজে সমুদ্রগড় উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। মাঠের সৌন্দর্যায়নের জন্য এ দিন তিনি নিজের এক মাসের বেতন স্কুলের হাতে তুলে দেন। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েদের জন্য খেলার মাঠের স্বপ্ন আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেখছিলাম। তা সার্থক হয়েছে।’’ তিনি জানান, মাঠটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় আট লক্ষ টাকা।

জমিদাতাদের অন্যতম কুণাল চট্টোপাধ্যায় জানান, তাঁর প্রয়াত বাবা-মা রোহিতকুমার চট্টোপাধ্যায় ও অঞ্জলি চট্টোপাধ্যায় স্কুলটি তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। তাঁর দাদু দুর্গাশঙ্করবাবু স্কুল গড়ার জন্য ১০ কাঠা জমি দান করেন। তাই স্কুলটি নিয়ে পরিবারের আবেগ রয়েছে। তাই মাঠের জন্য জমি দিতে এগিয়ে এসেছেন। এ দিন অনুষ্ঠান ছাত্রীরা নানা অনুষ্ঠান করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE