বর্ষার রাতে ভেঙে যায় মাটির বাড়ি। কয়েকদিন মেয়ে, মেয়ের নাতনিতে নিয়ে খোলা আকাশের নীচে দিন কাটাতে হয় ৭৫ বছরের মদন ঘোষকে। শেষমেশ ভাতারের কুলনগরের দলীয় কার্যালয়টি ওই পরিবারের জন্য খুলে দেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। তার পরে পাঁচ মাস সেখানেই বাস মদনবাবুদের। তৃণমূলকর্মীদের মানবিকতা প্রশংসনীয় হলেও এই উদাহরণকে সামনে রেখে বিরোধীরা ‘কাটমানি’ না দিলে বাড়ি মেলে না বলে অভিযোগ করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুলনগর গ্রামে রাস্তার ধারে পুকুরপাড়ে মাটির দেওয়াল ও খড়ের ছাউনি দেওয়া ঘরে থাকতেন মদনবাবু। বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ। তাঁর মেয়ে সান্ত্বনাদেবী কয়েকটি বাড়িতে রান্না করে মাসে হাজার দু’য়েক টাকা আয় করেন। তাঁর নাতনি স্থানীয় একটি প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়া। সান্ত্বনাদেবীর কথায়, “তৃণমূলের ছেলেরা যে ভাবে থাকার জায়গা করে দিয়েছে, তাতে আমরা কৃতজ্ঞ।’’ তবে, কার্যালয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই মিললেও শৌচকর্মের জন্য ভরসা খোলা মাঠই, জানান মদনবাবু। এই পরিস্থিতিতে সান্ত্বনাদেবীর আর্জি, ‘‘আমরা চাই, সরকারি প্রকল্পে ঘর দেওয়া হোক।’’
এই ঘর দেওয়া নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। বিজেপির মণ্ডল সভাপতি রাজকুমার হাজরার কটাক্ষ, “কেন্দ্রীয় সরকার সবার জন্য বাড়ি তৈরির টাকা দিচ্ছে। ভাতার নির্মল ব্লক বলেও ঘোষিত। কিন্তু মদনবাবুদের দেখে বোঝা যাচ্ছে প্রকল্পগুলি এখানে কী অবস্থায় চলছে। আসলে কাটমানি ছাড়া কোনও কাজ হয় না।’’ ঘটনাচক্রে ভাতারের নানা পঞ্চায়েতে ‘কাটমানি’ ফেরতের দাবিতে বিজেপি আন্দোলন করেছিল। বহু উপভোক্তা পঞ্চায়েতে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, কাকে কত টাকা ‘কাটমানি’ দিয়ে ঘর মিলেছিল। সিপিএমের নেতা নজরুল হকেরও অভিযোগ, ‘‘ওই পরিবার কাটমানি দিতে পারেনি। তাই ঘরও মেলেনি।’’