Advertisement
০৭ মে ২০২৪
পথবাতির দেখভাল অন্য সংস্থাকে দিতে চায় পুরসভা

ত্রিফলার মতো হবে না তো, প্রশ্ন শহরে

রাতের পথে চলতে গিয়ে প্রায়ই হোঁচট খেতে হয় শহরবাসীকে। অথচ রাস্তায় পথবাতির অভাব নেই।শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ধমানের পথবাতিগুলির অধিকাংশই নিয়মিত জ্বলে না। সেভাবে রক্ষনাবেক্ষনও হয় না।

বাতির এক দিকে জ্বলছে আলো, এক দিক অন্ধকার। বর্ধমান শহরে জিটি রোডে তোলা নিজস্ব চিত্র।

বাতির এক দিকে জ্বলছে আলো, এক দিক অন্ধকার। বর্ধমান শহরে জিটি রোডে তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৬ ০১:৪৩
Share: Save:

রাতের পথে চলতে গিয়ে প্রায়ই হোঁচট খেতে হয় শহরবাসীকে। অথচ রাস্তায় পথবাতির অভাব নেই।

শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ধমানের পথবাতিগুলির অধিকাংশই নিয়মিত জ্বলে না। সেভাবে রক্ষনাবেক্ষনও হয় না। সমস্যা সমাধানে এ বার তাই বেসরকারি সংস্থাকে পথবাতিগুলি দেখভালের দায়িত্ব দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করেছে বর্ধমান পুরসভা।

শহর জুড়ে প্রায় সতেরো হাজার বিদ্যুতের খুঁটিতে পথবাতি লাগানো রয়েছে। কোথাও বালব্, টিউবলাইট, কোথাও বা সিএফএল। কিন্তু তার পরেও সন্ধ্যা নামলেই শহরের বিভিন্ন এলাকা ডোবে অন্ধকারে। শহরবাসীর অভিযোগ, খারাপ হয়ে যাওয়া পথবাতিগুলি মেরামত করতে বেশ কিছু দিন সময় লেগে যায়। সমস্যায় পড়তে হয় পথচারীদের। গাড়ির ধাক্কা, ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটে। যদিও পুরসভার দাবি, পর্যাপ্ত কর্মী না থাকায় বাতিগুলির রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা মেটাতে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে বলেও পুরসভার দাবি। পথবাতি সংরক্ষণের দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। তৈরি হচ্ছে নির্দিষ্ট গাইডলাইনও। বর্ধমানের পুর পারিষদ সদস্য (আলো) শেখ সাহাবুদ্দিন জানান, পুরসভায় একটা প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। এরপরে পুরবোর্ডে বিষয়টি নিয়ে অনুমতি নেওয়া হবে। পুজোর আগেই সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করে বেসরকারি সংস্থার হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া যাবে বলে আশা তাঁর।

তবে সমস্যা মেটাতে পুরসভার এই পদক্ষেপ কতটা কার্যকরী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বেশ কয়েক বছর আগে শহরের জিটি রোডের দু’পাশে কয়েক লক্ষ টাকা খরচে ত্রিফলা আলো লাগায় পুরসভা। পরে তা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পায় একটি বেসরকারি সংস্থা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ত্রিফলাবাতির অধিকাংশই ভেঙে পড়েছে। যেগুলো আছে তাও কালেভদ্রে জ্বলে। একই অভিযোগ ঘোড়দৌড় চটি থেকে উল্লাস মোড় পর্যন্ত লাগানো ত্রিফলা আলোগুলি নিয়েও। শহরবাসীর আশঙ্কা, এ বার যে সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, তারাও যদি একই ভাবে কাজ করে, তা হলে শহর জুড়ে অন্ধকার নেমে আসবে। যদিও শেখ শাহাবুদ্দিনের দাবি, “আমরা ব্যাপারটি মাথায় রাখছি। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে, আমরা বড় রকমের জরিমানা আদায় করতে পারি, চুক্তিতে তার ব্যবস্থা রাখা হবে।”

ত্রিফলা ছাড়াও বর্ধমান শহরের জিটি রোডের ডিভাইডারের উপর সারি দিয়ে যে বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে, সেখানেও বেশির ভাগ সময় আলো জ্বলে না বলে অভিযোগ। একই অবস্থা বিসি রোডেও। তবে এ নিয়ে আবার পুর পারিষদ সদস্য শেখ শাহাবুদ্দিন আঙুল তুলেছেন আগের পুরবোর্ডের দিকে। তাঁর দাবি, ওই সব আলোর দায়িত্ব বিভিন্ন বিজ্ঞাপন সংস্থার উপরে দেওয়া রয়েছে। আগের পুরবোর্ড ২০১৯ সাল পর্যন্ত চুক্তি করে গিয়েছে। ফলে বর্তমান পুরবোর্ডের তরফে ওই সংস্থাগুলিকে চাপ দেওয়া ছাড়া আর কিছু করা সম্ভব নয়।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি মাসে শুধুমাত্র ওয়ার্ডগুলির আলো জ্বালাতে বিল বাবদ প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা খরচ হয়। পুর-পারিষদ সদস্য (পূর্ত) খোকন দাস জানান, বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হলে পুরসভার এই টাকা লাগবে না। ওই সংস্থায় বিদ্যুতের বিল মেটাবে, নিয়মিত আলো জ্বালা ও নেভানোর কাজ করবে, রক্ষণাবেক্ষণও করবে। পুরসভাকে আলো জ্বালানো বা নেভানোর জন্য কোনও লোক নিয়োগ করতে হবে না। এ ছাড়া শহরের সর্বত্র এলইডি আলো লাগানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে বলে পুরসভার দাবি। শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে সিসি ক্যামেরা লাগানোর ব্যাপারেও ওই সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করা হবে বলে দাবি পুরসভার। কিন্তু তার জন্য সংস্থাকে কত টাকা দিতে হবে?

পুরসভার সচিব জয়দেব সেন জানান, এই ব্যবস্থায় পুরসভার কত টাকা লাভ হবে, ‘এনার্জি অডিটর’ নিয়োগ করে তার হিসেব করা হবে। লাভের একটা অংশ চুক্তিবদ্ধ সংস্থাকে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Passenger Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE