Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Memari

জিটি রোডের দুধারে থাকা একাধিক শিরিষ গাছের মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রশ্ন

বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবিতে স্বোচ্চার হয়েছেন পরিবেশ কর্মী এবং বৃক্ষ প্রেমীরা ।

নিজস্ব ছবি।

নিজস্ব ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:০৩
Share: Save:

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কোনও ঘটনা হালফিলে ঘটেনি। উইপোকার উপদ্রবও দেখা যাচ্ছে না। তা সত্ত্বেও মেমারির হাটপুকুর থেকে দেবীপুর পর্যন্ত জিটি রোড়ের দুধারে ধাকা গোটা পঞ্চাশ প্রকাণ্ড শিরিষ গাছ শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে। একই এলাকায় থাকা বাকি অন্য সব গাছ অবশ্য দিব্যি তরতাজাই রয়েছে । এই ঘটনাই বৃক্ষপ্রেমী, পরিবেশ কর্মী ও মেমারির বাসিন্দাদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। তাঁরা আশঙ্কা করছেন, ব্যক্তিগত স্বার্থ সিদ্ধির জন্য এখনকার ‘আধুনিক কালিদাসরা’ হয়তো রাতের অন্ধকারে বিষাক্ত কিছু প্রয়োগ করে মূল্যবান শিরিষ গাছগুলিকে হত্যা করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবিতে স্বোচ্চার হয়েছেন পরিবেশ কর্মী এবং বৃক্ষ প্রেমীরা ।

মেমারির হাটপুকুর থেকে দেবীপুর হয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার সীমানা পর্যন্ত জিটি রোডের দৈর্ঘ্য প্রায় ৭ কিলোমিটার। এলাকার বাসিন্দারা বহুকাল আগে থেকেই এই সড়ক পথের দুধারে নানা ধরনের গাছ দেখে আসছেন । ওইসব গাছগুলির মধ্যে কিছু শিরিষ গাছের বয়স ৫০ বছর। আবার অনেক শিরিষ গাছের বয়স ৭০ বছরেরও বেশি। স্থানীয়দের দাবি, হাটপুকুর থেকে দেবীপুর পর্যন্ত রাস্তার দুধারে কম বেশি ৫০-৬০টি শিরিষ গাছ রয়েছে। মোটা গুঁড়ির ওই সব গাছের এক একটির মূল্য লাখ টাকার বেশি। গত তিন-চার মাসের মধ্যে আশ্চর্যজনক ভাবে জিটি রোডের দুই ধারে ধাকা প্রকাণ্ড গাছগুলি শুধুমাত্র শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে। যা নিয়ে উদাসীন বন দফতর। আর তারই সুযোগ নিয়ে এলাকার লোকজন শুকিয়ে যাওয়া ওইসব গাছের ছালও কেটে নিয়ে চলে গিয়েছে। তবে একই এলাকায় থাকা বাকি অন্য সব গাছের কিছুই হয়নি।

মেমারিতে রেল ওভারব্রিজ হবে এমন ঘোষণা হওয়ার পর মেমারির চেকপোস্ট এলাকায় থাকা ১০-১৫ টি পুরনো গাছ দ্রুত কেটে ফেলা হয়। যদিও আজ অবধি রেল ওভারব্রিজ তৈরির প্রাথমিক কাজও শুরু হয়নি। সেই বৃক্ষ নিধনের রেশ কাটতে না কাটতেই জিটি রোডের দুই ধারে থাকা অসংখ্য শিরিষ গাছ শুকিয়ে মরে যাওয়ার ঘটনা অবাক করেছে মেমারি ও দেবীপুরের বাসিন্দাদের। তাঁদের আশঙ্কা, ঘটনার পিছনে ‘আধুনিক কালিদাসদের’ ষড়যন্ত্র রয়েছে। মেমারির বৃক্ষ প্রেমীরা মনে করছেন, এইসব ঝক্কি এড়িয়ে সহজে ফায়দা নেওয়ার জন্য ‘আধুনিক কালিদাসরা’ রাতের অন্ধকারে শুধুমাত্র বেছে বেছে মূল্যবান শিরিষ গাছগুলির গোড়ায় বিষাক্ত কিছু প্রয়োগ করে দিয়ে থাকতে পারে। সে জন্যই হয়তো মূল্যবান শিরিষ গাছগুলি শুকিয়ে মরে গিয়েছে। ঘটনার তদন্তের দাবি করেছেন বৃক্ষ প্রেমীরা।

যদিও বিষাক্ত কিছুর প্রয়োগে গাছগুলির মৃত্যু হয়েছে এমন দাবি মানতে চাননি মেমারির বন দফতরের কর্মী ভবেশ সর্দার। তিনি বলে, “জলস্তর নেমে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জলের ঘাটতি এবং অত্যধিক বয়স হয়ে যাওয়াই এর কারণ।’’ স্থানীয় দুর্গাপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নিতাই ঘোষও একই কথা জানিয়েছেন। তবে এইসব যুক্তির সঙ্গে একমত হতে পারেননি মেমারি ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন, “প্রয়োজনীয় জল ঘাটতি যদি মৃত্যুর কারণ হয়, তাহলে একই জায়গায় থাকা অন্য বয়স্ক গাছগুলি বেঁচে রয়েছে কী করে?” কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না, তা প্রশাসনের গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Memari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE