জটলা। মেমারিতে। নিজস্ব চিত্র
মেমারির স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল বর্ধমান সদর (দক্ষিণ) মহকুমা প্রশাসন। প্রধান শিক্ষিকার বদলে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে প্রবীণ কোনও শিক্ষিকাকে মেমারির রসিকলাল স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য স্কুল পরিচালন সমিতি, ডিআই ও অতিরিক্ত জেলাশাসককে (শিক্ষা) জানিয়েছেন এসডিও অনির্বাণ কোলে।
বুধবার বিকেলে মেমারি ১ বিডিও দফতরে সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক ডাকেন মহকুমাশাসক। বেশ কয়েক মাস ধরে স্কুল পরিচালন সমিতি ও প্রধান শিক্ষিকা নীলিমা ভট্টাচার্যের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে পড়াশোনা শিকেয় উঠেছিল, মিড-ডে মিল থেকে সরস্বতী পুজোর খাওয়া-অনুষ্ঠানও বন্ধ ছিল। মঙ্গলবার ক্লাস চলাকালীন কিছু ছাত্রী সে সব নিয়ে প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে দেখা করতে যায়। অভিযোগ, তাদের কথায় কান না দিয়ে প্রধান শিক্ষিকা মারধর করে ক্লাসে পাঠিয়ে দেয়। খবর পেয়ে কিছু অভিভাবক স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষিকার কাছে মেয়েদের মারধর করা হল কেন কৈফিয়ৎ চান। প্রধান শিক্ষিকার অভিযোগ ছিল, তাঁকে মারধর করে স্কুলের ঘরে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। প্রধান শিক্ষিকা ও ছাত্রীরা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করে।
সূত্রের খবর, এ দিন বৈঠক চলাকালীন পরিচালন সমিতি-অভিভাবকদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান প্রধান শিক্ষিকা। ছাত্রী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষিকার জন্য স্কুলের ক্লাস প্রায় বন্ধ। মিড-ডে মিল প্রায় সময়ই বন্ধ থাকে। এমন কী অনেক ছাত্রীর কন্যাশ্রী থেকে স্কলারশিপও বন্ধ পড়ে রয়েছে। ভিতরে বৈঠক চলাকালীন বিডিও দফতরের বাইরে প্রচুর ছাত্রী ও অভিভাবক জড়ো হয়ে প্রধান শিক্ষিকার অপসারণের দাবি জানাতে থাকেন। তাঁদের সঙ্গে পুলিশের বচসাও হয়। আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হচ্ছে দেখে মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে এসে বলেন, “ওই শিক্ষিকার বদলে প্রবীণ কোনও শিক্ষিকাকে আপাতত প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হচ্ছে।” এরপরেই ছাত্রী, অভিভাবকরা শান্ত হন। বৈঠক শেষে অনির্বাণবাবু বলেন, “স্কুলটিকে বাঁচাতে গেলে এ ছাড়া অন্য কোনও উপায় ছিল না। প্রধান শিক্ষিকার উপর ছাত্রী-অভিভাবকরা খুবই অসন্তুষ্ট। প্রতিদিন আইনশৃঙ্খলা সমস্যা নিয়ে স্কুল চালানো অসম্ভব। সে জন্যই প্রধান শিক্ষিকা ছুটিতে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
প্রশাসনের সিদ্ধান্তে হতাশ প্রধান শিক্ষিকা। তিনি বলেন, “১৫ বছর ধরে তিল তিল করে স্কুলটিকে গড়ে তুললাম। সেখানে পরিকল্পিত ভাবে অপমানিত করা হল।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy