Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Mid Day Meal

এত বছরেও মিড-ডে মিলের ঘর নেই

বছরের পর বছর পড়ুয়াদের এই কষ্ট দেখে শিক্ষিকা থেকে শুরু করে শিক্ষাকর্মী, অভিভাবকেরা ক্ষুব্ধ। স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বহু বার প্রশাসনের নানা মহলে লিখিত ভাবে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি।

কৈচরের স্কুলে খোলা জায়গায় মিড-ডে মিল খাচ্ছে পড়ুয়ারা।

কৈচরের স্কুলে খোলা জায়গায় মিড-ডে মিল খাচ্ছে পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:০১
Share: Save:

স্কুলের বয়স ষাট। ছাত্রী সংখ্যা সাড়ে তিনশোর কিছুটা বেশি। কিন্তু আজও কৈচর ষোড়শীবালা বালিকা বিদ্যামন্দিরে পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল খাওয়ার কোনও ঘর নেই। নিদেন পক্ষে বসে খাওয়ার জন্যও কোনও শেড নেই। রান্নাঘরের অবস্থা তথৈবচ। ফলে শীত, গীষ্ম, বর্ষা বারো মাসই খোলা আকাশের নীচে অথবা গাছতলায় ইতিউতি বসে মিড-ডে মিল খেতে হয় ছাত্রীদের। বৃহস্পতিবার কনকনে ঠান্ডাতেও ছাত্রীরা খোলা জায়গায় বসে মিড-ডে মিল খায়। বৃষ্টি হলে ভাতের থালা নিয়ে ছুটতে হয় স্কুলের বারান্দা অথবা ক্লাসরুমে।

বছরের পর বছর পড়ুয়াদের এই কষ্ট দেখে শিক্ষিকা থেকে শুরু করে শিক্ষাকর্মী, অভিভাবকেরা ক্ষুব্ধ। স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বহু বার প্রশাসনের নানা মহলে লিখিত ভাবে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। মিড-ডে মিলের ঘরের দাবিতে ওই স্কুলের এক শিক্ষিকা সমাজমাধ্যমে সরব হয়েছেন। যদিও কৈচর গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, শুধু সরকারের উপরে নির্ভরশীল না থেকে স্কুলের শিক্ষিকারাও বেতন থেকে কিছু কিছু করে টাকা দান করে মিড-ডে মিল খাওয়ার ঘর তৈরি করতে পারতেন।

বর্ধিষ্ণু গ্রাম কৈচরে ১৯৬৪ সালে কয়েক জন শিক্ষানুরাগীর হাত ধরে গড়ে ওঠে কৈচর ষোড়শীবালা বালিকা বিদ্যামন্দির। শুধু কৈচরই নয় ক্ষীরগ্রাম, কানাইডাঙা-সহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের ছাত্রীরা ওই স্কুলে পড়াশোনা করতে আসে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ক্লাসঘরের অভাব নেই। তবে মিড-ডে মিল খাওয়ার একটা বড় ঘর খুবই জরুরি। টিফিনের ঘণ্টা বাজলেই ছাত্রীরা থালা হাতে রান্নাঘরের দিকে ছোটে। গরম ভাতের সঙ্গে ডাল ও সয়াবিনের তরকারি অথবা ডিম নিয়ে ফাঁকা জায়গায় বসে খায় তারা।

সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মহুয়া বন্ধু, অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী দেবপ্রিয়া গোস্বামীদের কথায়, “সেই পঞ্চম শ্রেণি থেকে আমরা খোলা জায়গায় বসে মিড-ডে মিল খাই। বর্ষাকাল ও প্রখর রোদে খুবই কষ্ট হয়। বসে খাওয়ার জন্য একটা ঘর থাকলে খুবই ভাল হয়।”

স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা গার্গী সামন্ত বলেন, “আমাদের স্কুলে বেশির ভাগ গরিব ঘরের মেয়েরা পড়াশোনা করে। তাদের মিড-ডে মিল খাওয়ার জন্য অনেক আবেদন নিবেদন করেও ঘর পেলাম না। ব্লক অফিস থেকে মাত্র ১০ হাজার টাকা মিলেছিল। তা দিয়ে কোনও রকমে রান্নাঘর সংস্কার করা হয়েছে।’’ মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী বলেন, “ওই স্কুলে পাঁচিল ও দু’টি ঘর আগেই করে দেওয়া হয়েছে। মিড-ডে মিলের ঘর তৈরি করে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো রয়েছে। আশা করি শীঘ্রই সমস্যা মিটে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE