কলকাতা থেকে কালনাপুরভোটের আগে ভাঙন অব্যাহত কংগ্রেসে। সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলর মালা রায় সদলবলে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। শনিবার কালনা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান-সহ তিন কংগ্রেস কাউন্সিলর যোগ দিলেন তৃণমূলে। গত পুর নির্বাচনে কংগ্রেস কালনা পুরসভায় ৫টি আসনে জিতেছিল। মাস কয়েক আগে তাদের মধ্যে ২ জন তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। বাকি ৩ জন দলবদল করায় বর্তমানে কালনা পুরসভার মধ্যে কংগ্রেসের অস্তিত্বই রইল না।
গত পুরভোটে ১৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূল-কংগ্রেস জোট ১২টি পেয়েছিল। কংগ্রেসের ৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সুনীল চৌধুরী ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের দেবপ্রসাদ বাগ আগেই তৃণমূলে গিয়েছিলেন। শনিবার যোগ দিলেন আনন্দ দত্ত, বিশ্বজিত্ সেন ও পরিতোষ মণ্ডল। এদের মধ্যে বিশ্বজিত্বাবু ছিলেন কালনা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান। তৃণমূল সূত্রের খবর, এই দলবদলে মূখ্য ভূমিকা নিয়েছেন কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান ও কালনার বিধায়ক বিশ্বজিত্ কুণ্ডু। দিন দশেক আগে থেকেই দলত্যাগী তিন কাউন্সিলরের সঙ্গে তিনি কথাবার্তা শুরু করেছিলেন। সম্প্রতি বিষয়টি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সিকে জানানো হয়। তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব ওই কংগ্রেস কাউন্সিলরদের দলে নেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি দেয়।
যদিও দল ছাড়ার বিষয়টি নিয়ে একদমই চুপচাপ ছিলেন বিশ্বজিত্বাবুরা। তিন কাউন্সিলরদের মধ্যে এক জনকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত কংগ্রেসের স্থানীয় পার্টি অফিসে দেখা গিয়েছিল। শনিবার বর্ধমানে তৃনমূলের জেলা কার্যালয়ে গিয়ে তাঁরা তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁদের সঙ্গেই মেমারির প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক নবকুমার চট্টোপাধ্যায় ও প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সদস্য স্বপন নায়েক তৃণমূলে যোগ দেন। তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিত্বাবু বলেন, “কালনায় দলের শক্তি অনেকটাই বেড়ে গেল।”
কিন্তু পুরভোটের মুখে এই দলবদল নিয়ে কালনা শহরে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। গত দু’বারের মতো এ বার কালনা পুর নির্বাচনে কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের সম্ভবনা খুব কম। কালনা শহরে কংগ্রেসের সংগঠন থাকলেও একা লড়ে তারা কত আসন পাবে সেই নিয়ে দলীয় নেতাদের মধ্যেই সংশয় রয়েছে। সেই কারণেই কি নিজেদের কাউন্সিলর পদ টিকিয়ে রাখতে তৃণমূলে যোগ দিলেন বিশ্বজিত্বাবুরা? মুখে অবশ্য সে কথা মানছেন না তাঁরা। দলত্যাগী কাউন্সিলর আনন্দ দত্ত দাবি করেন, “আমরা কর্মী হিসাবেই তৃণমূলে যোগ দিলাম। রাজ্যে সিপিএম এবং সাম্প্রদায়িক শক্তিকে হটাতে মুখ্যমন্ত্রীর বিকল্প নেই।” জেলা তৃণমূল (গ্রামীণ) সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, “সদ্য দলত্যাগীরা পুরভোটে টিকিট পাবেন কি না সেই নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।”
দলের সব কাউন্সিলার তৃণমূলে চলে গেলেও পুরভোটে তার কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই দাবি করেছে কংগ্রেস। কংেগ্রেসের এআইসিসি সদস্য সেলিম মোল্লার দাবি, যাঁরা দল ছেড়েছেন তাঁরা সম্প্রতি দলের কোনও কাজ করছিলেন না। রবিবার কালনা শহর কংগ্রেসের নেতা লক্ষণ রায় বলেন, “কাউকে তো জোর করে আটকে রাখা যায় না। তবে এ শহরে দীর্ঘ দিন ধরে কংগ্রেসের ভোট ব্যাঙ্ক রয়েছে। তাই নেতা চলে গেলেও ভোটাররা আমাদের সঙ্গেই থাকবে। নির্বাচনে ১৮ আসনেই প্রার্থী দেবে দল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy