Advertisement
E-Paper

তিন নতুন মুখে কোন্দল রোখার চাল

এক দিকে দলের মধ্যে কোন্দল কমানোর চেষ্টা, অন্য দিকে হিন্দিভাষী ভোটারদের নিজেদের দিকে টেনে আনা— লোকসভায় বিজেপির কাছে হারানো জমি পুরভোটে ফিরে পাওয়ার পরে মেয়র বাছাইয়ের সময়ে এই দু’দিকে নজর দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৬ ০১:৪৬
শুরু ভোট প্রচার। শনিবার জামুড়িয়ায়।নিজস্ব চিত্র।

শুরু ভোট প্রচার। শনিবার জামুড়িয়ায়।নিজস্ব চিত্র।

এক দিকে দলের মধ্যে কোন্দল কমানোর চেষ্টা, অন্য দিকে হিন্দিভাষী ভোটারদের নিজেদের দিকে টেনে আনা— লোকসভায় বিজেপির কাছে হারানো জমি পুরভোটে ফিরে পাওয়ার পরে মেয়র বাছাইয়ের সময়ে এই দু’দিকে নজর দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বিধানসভা ভোটে পাণ্ডবেশ্বরের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের সময়েও এই দুই কারণ মাথায় রেখেই বেছে নেওয়া হল জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে। জামুড়িয়া ও রানিগঞ্জের ক্ষেত্রেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মাথায় রেখেই প্রার্থী নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।

পাণ্ডবেশ্বরের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে গত কয়েক মাসে দলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়, ব্লক সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর নাম উঠে আসে দলীয় আলোচনায়। দলের এক শ্রমিক নেতার নামও শোনা গিয়েছে। শেষমেশ জিতেন্দ্রবাবুকে বাছার কারণ কী? তৃণমূল সূত্রের খবর, বিমানবন্দরে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ গ্রেফতার হওয়ার পরেই নরেনবাবু দৌড় থেকে পিছিয়ে পড়েন। আবার, উত্তমবাবু ও নরেনবাবুর শিবির দলের অন্দরে বিরোধী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত। সেখানে যে কোনও এক জনকে প্রার্থী করলে অন্য পক্ষের ময়দানে নামা নিয়ে সংশয় থাকত। যে শ্রমিক নেতার নাম উঠছিল তাঁর ভাবমূর্তি নিয়ে আবার প্রশ্ন তোলে দলের একাংশ।

তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা যায়, এ সব কারণে এই আসনে এলাকার বাইরের কাউকেই প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে দিক থেকে জিতেন্দ্রবাবুকে যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে মনে করা হয়েছে। কারণ, আসানসোলে মেয়র হওয়ার পর থেকে তিনি নানা পক্ষকে এক সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে পেরেছেন বলে মনে করছে দল। আবার পাণ্ডবেশ্বরের বাসিন্দা না হলেও এই এলাকা সম্পর্কে তিনি যথেষ্ট অবগত। এই অঞ্চলে যে হিন্দিভাষী মানুষ বাস করেন, অবাঙালি মুখ হিসেবে তাঁদের বড় অংশের ভোট জিতেন্দ্রবাবু তৃণমূলের দিকে আনতে পারবেন বলেও মনে করছে তাঁর দল। এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে শিল্পাঞ্চলে এসে দলনেত্রী হিন্দিভাষীদের ‘অতিথি’ বলে উল্লেখ করেন, যা মানুষ ভাল ভাবে নেননি। তার প্রভাব ভোটবাক্সেও পড়েছিল বলে ধারণা।’’ জিতেন্দ্রবাবু শুধু বলেন, ‘‘সকলকে এক সঙ্গে নিয়েই লড়ব।’’

জিতেন্দ্র তিওয়ারি ভি শিবদাসন নার্গিস বানো

রেলের লোহা চুরির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরেই ফের টিকিট পাওয়ার লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়েছিলেন রানিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সোহরাব আলি। কিন্তু তাঁর প্রভাব যে অস্বীকার করা সম্ভব নয়, তা তাঁর স্ত্রী নার্গিস বানোকে টিকিট দিয়েই দল বুঝিয়ে দিয়েছে বলে মনে করছে তৃণমূলের একাংশ। আসানসোল পুরভোটের মুখে ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে সোহরাবকে প্রার্থী করেনি দল। তাঁর জায়গায় নির্দল প্রার্থী হিসেবে জেতার পরে তৃণমূলে যোগ দেন তাঁর স্ত্রী নার্গিস। নার্গিস নিজের ওয়ার্ডে এখনও পর্যন্ত যা কাজ করেছেন বা বোর্ডের বৈঠকে যে ভাবে যোগ দিয়েছেন, তাতে দল খুশি। রানিগঞ্জ ও বার্নপুর এলাকায় আসানসোল পুরসভার যে ১৪টি ওয়ার্ড রয়েছে সেখানেও সোহরাবের ভাল প্রভাব রয়েছে। সে সব মাথায় রেখেই নার্গিসকে প্রার্থী করা হয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। নার্গিস বলেন, ‘‘দল দায়িত্ব দিয়েছে। আমি খুশি।’’ সোহরাবের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দলীয় নির্দেশই শেষ কথা।’’

তৃণমূল সূত্রের খবর, জামুড়িয়ায় দলের নানা গোষ্ঠী। নানা সময়ে গোলমাল-মারপিটও বেধেছে। সব পক্ষকে নিয়ে চলতে পারেন, এমন কোনও মুখ সেখানে না মেলায় দলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসনকে প্রার্থী করা হয়েছে। গত পুরভোটে দলের তরফে জামুড়িয়ার দায়িত্বে ছিলেন শিবদাসনই। ১৩টি ওয়ার্ডের ১১টিতে জেতে তৃণমূল। তার পরেই তাঁকে প্রার্থী করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় বলে দাবি। ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘সমস্ত খতিয়ে দেখে দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’

TMC candidate assambly election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy