আসানসোলে মহিশীলার মণ্ডপ। নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুজো, কালীপুজোর পরে থিমের জোয়ার খনি-শিল্পাঞ্চলের জগদ্ধাত্রী পুজোতেও। কোথাও গড়ে ওঠে গ্রাম্য দোতলা বাড়ি, কোথাও স্টিলের বাসনপত্র দিয়ে সেজে ওঠেছে মণ্ডপ। কেউ আবার দর্শক টানতে ভরসা রাখছেন প্রতিমার নতুনত্বে। সঙ্গে রয়েছে আলোর সাজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সন্ধ্যে নামতেও বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে ভিড় জমাচ্ছেন দর্শকরা।
দুর্গাপুরের ধাণ্ডাবাগ সুকান্ত স্মৃতি সঙ্ঘের পুজো এ বার ২৬ বছরে পা দিল। ক্লাবের তরফে গোপাল দত্ত জানান, এ বার ৩৫ ফুটের প্রতিমা তৈরি হয়েছে। যা শহরের সবচেয়ে বড় জগদ্ধাত্রীর প্রতিমা বলে দাবি তাঁর। কাল্পনিক মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। সঙ্গে মানানসই আলো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ইস্পাতনগরীর জয়দেব অ্যাভিনিউর জাগরণী ক্লাবের পুজো ১২ বছরের পুরনো। এই পুজোর মণ্ডপ তৈরিতে স্টিলের চামচ, থালা, বাচ্চাদের খাওয়ানোর বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সাজানো হয়েছে। আতসবাজী প্রদর্শনী এই পুজোর অন্যতম বড় আকর্ষণ বলে জানান উদ্যোক্তারা।
ডিটিপিএস স্পোর্টিং ক্লাবের পুজো ছ’বছরে পড়ল। তাদের মণ্ডপ তৈরি হয়েছে পাটের বস্তা দিয়ে। সঙ্গে স্বচ্ছ ভারত অভিযান নিয়ে নানা প্রচার। নন কোম্পানি জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি এ বার ৫ বছরে পা দিল। এ বারের পুজোর থিম ‘আয়লার মাঝে প্রাণের উৎস’। মণ্ডপের ভিতরে নানা দৃশ্য এঁকে আয়লা ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি দেখানো হয়েছে। আয়োজকদের তরফে জয় দত্ত জানান, কাশ্মীরের উরিতে জঙ্গী হানায় শহিদ ভারতীয় সেনাদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য একটি আলাদা জায়গা করা হয়েছে, যেখানে দর্শনার্থীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন।
দুর্গাপুরে জয়দেব অ্যাভিনিউয়ের মণ্ডপে প্রতিমা।
পিছিয়ে নেই আসানসোল, রানিগঞ্জও। আসানসোলের ধর্মপল্লি সর্বজনীনের পুজো ১১ বছরে পা দিল। এ বার তাঁদের মণ্ডপ তৈরি হয়েছে কাল্পনিক মন্দিরের আদলে। আয়োজকদের তরফে সুজিত বল জানান, এ বছর তাঁদের প্রতিমার উচ্চতা প্রায় ১২ ফুট। তা দেখতে প্রথম দিন থেকেই প্রচুর মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। এক বছর আগে পুজো শুরু হয়েছে দক্ষিণ ধাদকায়। আয়োজক নবীন সঙ্ঘের সম্পাদক অভিজিৎ রায় জানান, এলাকার মানুষের কথাতেই তাঁরা জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন। তবে গত বার যেখানে পুজো হয়েছিল, এ বার সেখানে পুজোর অনুমতি মেলেনি। জায়গা কম থাকায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যায়নি বলে জানান তিনি। তবে একাদশীতে বিসর্জনের শোভাযাত্রায় মানুষের ঢল নামবে বলে আশা তাঁর।
আসানসোলের গৌরমণ্ডল রোডের পুজোর বয়স ২৩ বছর। পুজো কমিটির সদস্য শ্যামল বসু জানান, এখানে নবমীর দিন পুজো শুরু হয়। দশমীর দিন ভক্তিমূলক গানের আসর, একাদশীর দিন পংক্তিভোজ ও দ্বাদশীতে পুরুলিয়ার ছৌ পরিবেশিত হবে। গ্রামের দোতালা বাড়ির আদলে চট দিয়ে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে বলে জানান তিনি। সঙ্গে থাকছে সাবেক প্রতিমা। শ্যামলবাবু জানান, তাঁরা স্থানীয় কয়েক জন মিলে এই পুজো শুরু করেছিলেন। পরে তাতে এলাকার মানুষজন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। উখড়া একতা ক্লাবের পুজো ২৬ বছরে, রানিগঞ্জ বড়বাজার এলাকার এবিসিডি ক্লাবের পুজো ৩২ বছর, বার্নপুর টাউন পুজো কমিটির পুজো ২০ বছরে, বার্নপুর সুভাষপল্লির রায়বাড়ির পুজো ৬ বছরে পা দিল। গৌরাঙ্গ সেন সরণিতে রামকৃষ্ণ পূর্ণানন্দ আশ্রমের পুজো ৪০ বছর পা দিল। আশ্রমের তরফে জানানো হয়েছে, এখানে নবমী থেকে পুজো শুরু হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy