Advertisement
E-Paper

রক্ষীরা দর্শক, ফের রাতে স্কুলের চত্বরে তাণ্ডব

রাতে ফের স্কুলে তাণ্ডব। রানাঘাটের পরে এ বার আসানসোলে। বৃহস্পতিবার রাতে পাঁচিল টপকে আসানসোলের কাছে দিল্লি পাবলিক স্কুলে ঢুকে আটটি গাড়ি ভাঙচুর ও অফিসঘর তছনছ করে জনা চল্লিশেক লোক। রানাঘাটের মতো ধর্ষণ বা লুঠের ঘটনা না ঘটলেও এই ঘটনায় স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৫ ০২:৪৯

রাতে ফের স্কুলে তাণ্ডব। রানাঘাটের পরে এ বার আসানসোলে।

বৃহস্পতিবার রাতে পাঁচিল টপকে আসানসোলের কাছে দিল্লি পাবলিক স্কুলে ঢুকে আটটি গাড়ি ভাঙচুর ও অফিসঘর তছনছ করে জনা চল্লিশেক লোক। রানাঘাটের মতো ধর্ষণ বা লুঠের ঘটনা না ঘটলেও এই ঘটনায় স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

রানাঘাট কাণ্ডের তদন্তে অন্যতম সূত্র সিসিটিভি ফুটেজ। কিন্তু স্কুলটিতে সেই ব্যবস্থাও ছিল না। ফলে কারও ছবি পাওয়া যায়নি। কেন এই হামলা, স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তার কোনও ব্যাখ্যাও নেই। তবে এর আগেও এলাকার কিছু লোকজন এসে ঝামেলা পাকিয়েছেন বলে স্কুল সূত্রের খবর। কিন্তু এ বারের ঘটনায় কারা জড়িত, শুক্রবার রাত পর্যন্ত তার সূত্র পায়নি পুলিশ। কাউকে ধরাও যায়নি।

বছর দুয়েক আগে আসানসোলের সালানপুরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে তৈরি হয় স্কুলটি। পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় আড়াইশো। এ দিন পরীক্ষার ফলপ্রকাশ ছিল। কিন্তু গাড়ি ভাঙচুর হওয়ার খবর পেয়ে অভিভাবকদেরই ছেলেময়েদের স্কুলে নিয়ে আসতে হয়। স্কুলের কর্ণধার প্রতীক গোয়েনকা বলেন, “এই এলাকায় একটি ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে এসেছি। কিন্তু এই রকম আক্রমণ হলে স্কুল গুটিয়ে চলে যেতে হবে।”

পুলিশ ও স্কুল সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১২টা নাগাদ জনা চল্লিশ লোক পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকে। ওই সময়ে পাহারায় থাকা চার নিরাপত্তারক্ষী পুলিশকে জানিয়েছেন, বহিরাগতেরা রড আর পাথর নিয়েই ঢুকেছিল। কিছু বোঝার আগেই তারা ভাঙচুর শুরু করে দেয়। প্রথমে স্কুলের মাঠে রাখা পড়ুয়াদের যাতায়াতের আটটি গাড়ির কাচ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর হয় অফিস ও সহ-অধ্যক্ষের ঘরের দরজা-জানালা। ইট-পাটকেল ছুড়ে আসবাব নষ্ট করা হয়। মিনিট পঁয়তাল্লিশ তাণ্ডবের পরে হামলাকারীরা পাঁচিল টপকেই চলে যায়। চার নিরাপত্তারক্ষী জানান, গোটা সময়টা তাঁরা এতটা তটস্থ হয়ে ছিলেন যে বাধা তো দিতে পারেনইনি, স্কুল কর্তৃপক্ষ বা পুলিশকে ফোনও করতে পারেননি। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পরে তাঁরা কর্তৃপক্ষকে ফোন করেন। তবে কোনও জিনিস খোয়া যায়নি বা রক্ষীদের কারও গায়ে হাত পড়েনি বলে কর্তৃপক্ষ জানান।

স্কুলের একটি সূত্রে পুলিশ জেনেছে, কিছু দিন ধরেই এলাকার কিছু লোকজন স্কুলে এসে নানা রকম ঝামেলা পাকানোর চেষ্টা করছেন। মাস পাঁচেক আগে কয়েক জন এসে দাবি করেন, স্কুল চত্বরে একটি পুকুর ছিল। সেটি বেআইনি ভাবে বুজিয়ে ফেলা হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, তাঁরা যখন জমিটি কেনেন, সেখানে পুকুর ছিল না। এই নিয়ে কথা কাটাকাটির পরে তাঁরা চলে যান। মাসখানেক পরে কয়েক জন এসে অভিযোগ করেন, তাঁদের জমি অন্যায় ভাবে ঘিরে ফেলা হয়েছে। বিক্ষোভও হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ জমির নথিপত্র দেখালে ওই লোকেরা ফিরে যান।

স্কুলের একটি সূত্রের খবর, কিছু দিন আগে নলকূপ তৈরির জন্য স্কুল চত্বরে জমি খোঁড়া শুরু হতেই কয়েক জন এসে বাধা দিয়েছিলেন। স্কুলের এক কর্মীকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। মোটরবাইক নিয়ে স্কুলে আসার সময়ে এক কর্মী স্থানীয় এক জনকে ধাক্কা দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে ক’দিন আগেই শাসিয়ে যায় কয়েক জন। স্কুলের প্রজেক্ট ম্যানেজার অরবিন্দ দত্তের দাবি, পরে খোঁজ নিয়ে তাঁরা জানেন, ওই অভিযোগ ঠিক নয়। তবে ঝামেলায় এড়াতে তাঁরা কোনও ঘটনাতেই পুলিশের দ্বারস্থ হননি।

তবে এ বার কর্তৃপক্ষ তো বটেই, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে কর্মী সকলেই আতঙ্কিত। সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে আসানসোল-দুর্গাপুরের এসিপি (পশ্চিম) অভিষেক রায়ও বলেন, “বিষয়টি উদ্বেগের। কেন এই ঘটনা, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছি।” তিনি জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষকে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর এবং আরও বেশি নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্কুলের সামনে নিয়মিত টহলদারিরও ব্যবস্থা হয়েছে।

Ranaghat Asansol police CCTV security durgapur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy