আলো-আঁধার: আসানসোল শহরে ঢোকার মুখে এই প্রবেশদ্বারের আলো নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র
এই শহরে এসেই নতুন জেলা হিসেবে পশ্চিম বর্ধমানের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ, সেই আসানসোলে ঢোকার মুখেই বেশ কয়েক দিন ধরে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি-সহ আসানসোলের প্রবেশদ্বারের একাংশ আলোহীন। শহরবাসীর প্রশ্ন, বর্ধমান শহরের ‘কার্জন গেট’-এ যখন দীর্ঘ টালবাহানার পরে আলো জ্বলেছে, তখন দক্ষিণবঙ্গ তথা রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর আসানসোলের প্রবেশদ্বারে এমন আলো-আঁধারি কেন।
কী অবস্থা ওই প্রবেশদ্বারটির? এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, প্রবেশদ্বারে লেখা ‘ওয়েলকাম টু আসানসোল’। তার তলায় লেখা ‘দ্য সিটি অফ ব্রাদারহুড’। অথচ, সন্ধ্যা নামলেই লেখার প্রথম অংশে আলো জ্বলে ওঠে। কিন্তু দ্বিতীয় অংশে ‘ব্রাদারহুড’ শব্দের বেশির ভাগ অংশই অন্ধকারে ঢাকা। শুধু তাই নয়, প্রবেশদ্বারের দু’দিকে থাকা মুখমন্ত্রীর ছবির একটিতে আলো জ্বলেনি।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ৯০-এর দশকে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের পরে আসানসোলে ঢোকার মুখে কালীপাহাড়িতে এই প্রবেশদ্বারটি তৈরি হয়। ৯০-এর দশকে এই প্রবেশদ্বার তৈরির সময়ে এর দেখভালের দায়িত্বে ছিল একটি বেসরকারি বিজ্ঞাপন সংস্থা। পরে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এই প্রবেশদ্বার দেখভালের দায়িত্ব নেয়।— সেই প্রবেশদ্বারের দিকে তাকিয়েই স্থানীয় এক ব্যক্তির আক্ষেপ, ‘‘ওরকম আলো-আঁধারি তো মাসখানেক ধরেই চলছে। খুবই খারাপ লাগে।’’
নব কলেবরে আসানসোল পুরসভার আত্মপ্রকাশ ও নতুন জেলা তৈরির পরে দেখা গিয়েছে শহর সাজাতে বিশেষ পদক্ষেপ করছে প্রশাসন। এলাকার একাধিক পর্যটনকেন্দ্রকে সাজিয়ে তুলতেও উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা। শুধু তাই নয়, এ বারই রাজ্যহস্তশিল্প মেলার জাঁকজমক জেলা তো বটেই রাজ্যেরও নানা প্রান্তে আলোচিত হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা যায়। দিন কয়েক পরে আসানসোলেই আয়োজিত হবে, দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম বড় বইমেলা। ফলে শহর ছাড়াও নানা এলাকা থেকে বাসিন্দারা আসানসোলে আসছেন প্রতি দিনই। কিন্তু শহরে ঢোকার মুখে প্রবেশদ্বারের এই হাল মোটেও মানানসই নয় বলে দাবি আসানসোলবাসীর।
তা ছাড়া জাতীয় সড়ক ধরে ফি দিন রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে তো বটেই, ভিন্-রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকেও বাস, গাড়িতে চড়ে এই প্রবেশদ্বার পেরিয়েই যাতায়াত করেন। কিন্তু প্রবেশদ্বারের এমন ‘আলো-আঁধারি’ আসানসোলের ‘উন্নয়ন’ সম্পর্কেই ভুল ধারণা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা শহরবাসীর। তাঁদের দাবি, দ্রুত সারাই করা হোক প্রবেশদ্বারের আলোর।
বিষয়টি নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না শহরের বিরোধী নেতৃত্ব। বিজেপি নেতা প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রবেশদ্বারের এই হালই বলে দিচ্ছে শহর তথা রাজ্যের অবস্থা।’’ বিষয়টি তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি জানতাম না। পুরসভার কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানাচ্ছি।’’
যদিও পুরসভার সুপারিন্টিন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার সুকোমল মণ্ডলের দাবি, ‘‘আমি খবর পেয়ছি। দ্রুত সারাই হবে। এ ছা়ড়া জুবিলি পার্ক, ঝাড়খণ্ড থেকে জেলায় ঢোকার মুখে বরাকরেও তোরণ তৈরি হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy