Advertisement
E-Paper

অটোর সঙ্গে টেক্কায় বাস দাঁড়াচ্ছে যত্রতত্র, যানজট

দাঁড়ানোর কথা ১২ জায়গায়। কিন্তু বাস দাঁড়ায় তার তিন গুণ জায়গায়। যাত্রী হাত দেখালেই রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে বাস। ফলে, যানজট বাড়ছে আসানসোলে। বাসমালিকদের অবশ্য দাবি, বেআইনি অটোর সঙ্গে পাল্লা দিতেই বেশি জায়গায় বাস দাঁড় করাতে বাধ্য হন তাঁরা।

নীলোত্‌পল রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৪ ০০:৫১
হাত দেখালেই দাঁড়িয়ে যায় বাস।—নিজস্ব চিত্র।

হাত দেখালেই দাঁড়িয়ে যায় বাস।—নিজস্ব চিত্র।

দাঁড়ানোর কথা ১২ জায়গায়। কিন্তু বাস দাঁড়ায় তার তিন গুণ জায়গায়। যাত্রী হাত দেখালেই রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে বাস। ফলে, যানজট বাড়ছে আসানসোলে। বাসমালিকদের অবশ্য দাবি, বেআইনি অটোর সঙ্গে পাল্লা দিতেই বেশি জায়গায় বাস দাঁড় করাতে বাধ্য হন তাঁরা।

আসানসোল থেকে বার্নপুরের দূরত্ব ৬ কিলোমিটার। বাসমালিক সংগঠন সূত্রে জানা যায়, আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ড থেকে বিএনআর মোড়, কোর্ট হয়ে বার্নপুর পর্যন্ত স্টপের সংখ্যা ১২। কিন্তু নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, এখন স্টপের সংখ্যা প্রায় ৩৬-এ গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আসানসোলের কল্যাণপুরের শিবানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, বার্নপুরের নবঘণ্টির গৌতম সরকারদের কথায়, “এর ফলে গন্তব্যে পৌঁছতে অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে। সব থেকে বেশি বিপাকে পড়ছে স্কুল-কলেজের পড়ুয়া ও অফিস যাত্রীরা।” বাসমালিক সংগঠনের হিসেব অনুযায়ী, আসানসোল থেকে বার্নপুর পৌঁছতে মাত্র ১৭ মিনিট সময় লাগার কথা। কিন্তু নিউ আপার চেলিডাঙার দীপক চট্টোপাধ্যায়, ডিহিকার জ্যোত্‌স্না গুপ্তদের দাবি, “এর থেকে অনেক বেশি সময় লাগছে। হাত দেখালেই বাস দাঁড়িয়ে পড়ার ফলে এমন অবস্থা।” তাঁদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট দফতরে বারবার জানিয়েও প্রতিকার মেলেনি।

আসানসোল মিনিবাস মালিকদের সংগঠনের সম্পাদক সুদীপ রায় এর জন্য প্রশাসনকে দায়ী করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “পুরুলিয়া ও ঝাড়খণ্ড থেকে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে এসে হাজার তিনেক অটো এই শিল্পাঞ্চলে চলাচলের অনুমতি ছাড়াই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রশাসনের এই সমস্যা মেটানোর কোনও তাগিদ রয়েছে বলে মনে হয় না। ওই সব অটোর উপরে প্রশাসনের কোনও নিয়ন্ত্রণই নেই।” তিনি জানান, প্রতিটি বাসস্টপেই এই সব বেআইনি অটোর দেখা মেলে। অতিরিক্ত যাত্রী তুলে যাতায়াত করে সেগুলি। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রয়োজনে এই সব অটোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে হয়েছে বাসগুলিকে।

মিনিবাস মালিকদের আরও অভিযোগ, আসানসোল থেকে আদালত হয়ে বার্নপুর যাওয়ার রাস্তায় বিএনআর মোড় থেকে আদালত মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার অংশ শুধু বাস-মিনিবাসের জন্য ‘ওয়ানওয়ে’, কিন্তু অন্য সব যানের জন্য তা নয়। সেই সুযোগে অটোর রমরমা বাড়ছে বলে তাঁদের দাবি। আবার ঘুরপথের রাস্তাতেও কোনও বাসস্টপ প্রশাসন নির্দিষ্ট করে ঘোষণা করেনি। এ ছাড়াও রয়েছে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি। তাই যাত্রীরা হাত দেখালেই বাসকর্মীরা বাস দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন। মিনিবাস মালিকদের আশঙ্কা, প্রশাসন আদতে শহরের পরিবহণ ব্যবস্থায় বাস-মিনিবাস তুলে দিয়ে অটো চালাতে চাইছে। সুদীপবাবু বলেন, “প্রশাসনকে এ ব্যাপারে আবেদন জানানো হলে তাঁরা শুধু দেখার আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন।”

আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত আসানসোল মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কাস ইউনিয়নের সম্পাদক রাজু অহলুয়ালিয়ার দাবি, অটোগুলিকে প্রয়োজনে আসানসোলে চলার অনুমোদন দিয়ে যে সব রুটে বাস চলে না, সেখানে চালানো হোক। পুরো বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা হওয়া উচিত বলে দাবি করেন তিনি।

আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ট্রাফিক বিভাগের এক কর্তা আবার বেআইনি অটো চলাচল রুখতে না পারার জন্য পুরসভাকো দোষারোপ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “পুরসভা বেআইনি অটো শনাক্ত করেনি। অটো স্টপও চিহ্নিত করা হয়নি। যে সব অটো বেআইনি ভাবে চলছে বলা হচ্ছে, সেগুলি কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের প্রশয়ে হচ্ছে।” তবে কমিশনারেটের এসিপি (ট্রাফিক) অভিষেক রায় বলেন, “আমরা ট্রাফিক ব্যবস্থার অনেক উন্নতি করেছি। এই বিষয়টিও সমাধানের জন্য সব পক্ষকে নিয়ে বসব।” আসানসোল পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা মনে করি, বারবার আলোচনার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধানসূত্র বের করা সম্ভব।”

auto bus traffic jam asansol nilotpal roychoudhury
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy