Advertisement
E-Paper

অনিচ্ছুকদের বুথে টেনে রায়নায় জয় চায় তৃণমূল

রায়নায় দলের ‘হাল বদলাতে’ অনিচ্ছুক ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট দেওয়ার আর্জি জানাচ্ছে তৃণমূল। রায়না ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ সাঁইয়ের দাবি, সম্প্রতি জেলা তৃণমূল দফতরে ব্লক স্তরের নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠকে এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “এই বিধানসভা এলাকায় দীর্ঘদিন সন্ত্রাস চালিয়েছে সিপিএম। ফলে আমাদের সমর্থকেরা ভোট দিতে পারেননি। একমাত্র ২০০৯-র লোকসভা ও ২০১১-র বিধানসভায় আমরা এই সন্ত্রাসের মোকাবিলা করি। তবে সে বারও অনেক বুথে এজেন্ট বসানো সম্ভব হয়নি।”

রানা সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৪ ০২:০০

রায়নায় দলের ‘হাল বদলাতে’ অনিচ্ছুক ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট দেওয়ার আর্জি জানাচ্ছে তৃণমূল।

রায়না ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ সাঁইয়ের দাবি, সম্প্রতি জেলা তৃণমূল দফতরে ব্লক স্তরের নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠকে এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “এই বিধানসভা এলাকায় দীর্ঘদিন সন্ত্রাস চালিয়েছে সিপিএম। ফলে আমাদের সমর্থকেরা ভোট দিতে পারেননি। একমাত্র ২০০৯-র লোকসভা ও ২০১১-র বিধানসভায় আমরা এই সন্ত্রাসের মোকাবিলা করি। তবে সে বারও অনেক বুথে এজেন্ট বসানো সম্ভব হয়নি।”

গত লোকসভা ভোটে তৃণমূল রায়না বিধানসভা কেন্দ্রে ৩৯,৪৭২ ভোটের ব্যবধানে সিপিএমের কাছে হারে। সিপিএম সে বার ২৮৬টি বুথের মধ্যে ৪০টিতে এজেন্ট দিতে পারেনি বলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল। পরে ২০১১-র বিধানসভায় পরিবর্তনের হাওয়া সত্ত্বেও তৃণমূল এই কেন্দ্রে জিততে পারেনি। সে বার ১০০-র বেশি বুথে সিপিএমের এজেন্টদের বসতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল। তবুও এই কেন্দ্রে সিপিএমের প্রার্থী বাসুদেব খাঁ ৯৮,৮৮৯ ভোট পেয়ে ১২,২২১ ভোটের ব্যবধানে পরাস্ত করেন তৃণমূলের নেপাল ঘড়ুইকে। শুক্রবার শ্যামসুন্দরের সভায় খোদ মুকুল রায় স্বীকার করেন, “গতবার ১২৩টি বুথে আমরা এজেন্ট বসাতে পারিনি। এ বার যাতে ওই ঘটনা না ঘটে সেটা দেখতে হবে।” এ বারের লোকসভা ভোটে রায়না বিধানসভা তাই রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে তৃণমূলের নেতাদের। মুকুলবাবুর কথায়, “এই বিধানসভায় জেতা আমাদের কাছে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ। এখানে জিতেই আমাদের প্রমাণ করতে হবে এতদিন সিপিএমের সন্ত্রাসে কারণেই আমরা জিততে পারিনি রায়নায়।”

শৈলেন্দ্রবাবু বলেন, “আমরা হিসেব করে দেখেছি, এই কেন্দ্রের অনেক বুথে ঝামেলা হতে পারে ভেবে ভোট দিতে যান না প্রচুর মানুষ। অনুপস্থিতদের ভোট এত দিন ‘প্রক্সি’ দিয়ে কেল্লাফতে করেছে সিপিএম। তবে এ বার ওই ভোটারদের অন্তত শতকরা ৫ ভাগকে আমাদের বুথে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। দলের তরফে চিঠি দিয়ে এই কাজই করতে বলা হয়েছে।”

তাহলে শুধু কি ভোটারদের আসার আবেদন জানিয়েই ক্ষান্ত থাকবে তৃণমূল, নাকি অন্য ব্যবস্থাও নেবে? বিশেষ করে রায়না ২ ব্লকে? সিপিএম থেকে তৃণমূলে আসা এক নেতা প্রথমে বলেন, “একটাও বুথে যাতে সিপিএম এজেন্ট বসাতে না পারে তার চেষ্টা করব।” পরে এলাকার ডাকসাইটে নেতা বামদেব মণ্ডল বলেন, “আমরা এ বার কাউকে বুথে বসার ব্যাপারে জোর করব না। জোর আমরা কোনও দিনই করি না। ওদের অনেক এজেন্টই আসলে ভয় পেয়ে আসে না।”

তবুও গতবার লোকসভায় ১২৩টি বুথে এজেন্ট দিতে না পারার ঘটনা মাথায় রেখেই প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃণমূল। রায়না বিধানসভা বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। সেখানের তৃণমূল প্রার্থী সুনীল মণ্ডলের নির্বাচনি এজেন্ট উত্তম সেনগুপ্তের কথায়, “অনেক আগে থেকেই সমস্ত বুথের এজেন্টদের তালিকা তৈরি করে রেখেছি। তাঁদের নাম, ছবি সমস্ত প্রশাসনের কাছে জমাও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করি, ওই বিধানসভার একটা বুথেও তৃণমূলের এজেন্ট বসেনি, এ বার এমনটা ঘটনা ঘটবে না।” তবে এ নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ প্রার্থী নিজে। সুনীলবাবুর দাবি, “আরে, সিপিএমের আর আছেটা কী? এই তো সেদিন রায়নার একটা হোটেলে খেতে ঢুকে দেখি সিপিএমের দুজন লোকাল কমিটির সদস্য বসে রয়েছেন। আমাকে দেখে তাঁরা বললেন, ‘আমরা আপনার সঙ্গে রয়েছি। আপনাকে ভোট দেব।’ এই কেন্দ্রে ওদের উড়িয়ে দিয়ে আমরাই জিতছি।” তবে এত সহজে নিজেদের ‘উড়ে যাওয়া’ মানতে পারছেন না সিপিএমের বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক অমল হালদার। অমলবাবু জানান, সিপিএম এখন জেলার প্রায় সমস্ত বুথ এলাকাতেই প্রতিরোধে নেমেছে। তাঁর দাবি, “হয়তো তীব্র সন্ত্রাস হবে। রায়নায় দু-একটা বুথে এ বারও আমরা এজেন্ট দিতে পারব না। তবে এ বার তৃণমূলের যে হতোদ্যম অবস্থা, তাতে আমাদের এজেন্ট দেওয়ার ব্যাপারে বাধা আসবে না বলেই মনে হয়।”

rana sengupta raina tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy