দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড।—নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য সরকারের বিদ্যুত্ উত্পাদন সংস্থা ‘দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড’ (ডিপিএল)-এর অষ্টম ইউনিটটি চালু হয়ে গেল বুধবার। এ দিন বর্ধমানে এক অনুষ্ঠানে রিমোটের সাহায্যে ইউনিটটির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন ধরে উত্পাদন নিয়ে নানা অনিশ্চয়তা চলার পরে নতুন ইউনিটটি চালু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে ডিপিএলে।
ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন ইউনিটটির উত্পাদন ক্ষমতা আড়াইশো মেগাওয়াট। নির্মাণের দায়িত্বে ছিল ‘ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেড’। খরচ হয়েছে প্রায় সতেরোশো কোটি টাকা। দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন শিল্প কারখানা ও গৃহস্থালীর বিদ্যুত্ সরবরাহের লক্ষ্যে ১৯৬০ সালে ৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি ইউনিট চালুর মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে ডিপিএল। ১৯৬৪ সালে যোগ হয় ৭৭ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন আরও দু’টি ইউনিট। দু’বছর পরে গড়ে ওঠে ৭৭ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পঞ্চম ইউনিট। ১৯৮৭ সালে ১১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ষষ্ঠ ইউনিটটি গড়ে ওঠে। ২০০৮ সালের মে মাসে যোগ হয় ৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সপ্তম ইউনিটি।
বয়স ও কারিগরি সংক্রান্ত কারণে প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে বহু দিন আগেই। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম ইউনিট বন্ধের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে। এত দিন ভরসা ছিল ষষ্ঠ ও সপ্তম ইউনিট দু’টি। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে সেই ইউনিট দু’টিও নানা কারণে অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। ফলে, গ্রিড থেকে বিদ্যুত্ কিনে সরবরাহ প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে হচ্ছিল ডিপিএল-কে। তবে বুধবার থেকে অষ্টম ইউনিটটি চালু হয়ে যাওয়ার পরে পরিস্থিতি বদলাবে বলে মনে করছেন ডিপিএল কর্তৃপক্ষ।
সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, “উত্পাদন না করে বিদ্যুত্ কিনে সরবরাহ করায় সংস্থার ভবিষ্যত্ নিয়ে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। নতুন ইউনিটটি চালু হওয়ায় সংস্থা ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছি।”
ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্থার পরবর্তী লক্ষ্য, তিনশো মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন আরও একটি ইউনিট গড়ে তোলা। রাজ্যের বিদ্যুত্মন্ত্রী মণীশ গুপ্ত আগেই জানিয়েছিলেন, এসার অয়েলের কাছ থেকে কোলবেড মিথেন নিয়ে তা দিয়ে বিদ্যুত্ উত্পাদন করা হবে নতুন ইউনিটটিতে। ডিপিএলের এক আধিকারিক জানান, প্রাকৃতিক গ্যাসচালিত ইউনিট চালু করা মাত্রই উত্পাদন শুরু করে দেয়। তাপবিদ্যুত্-এর ইউনিটের মতো উত্পাদন শুরুর জন্য কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার দরকার হয় না। ডিপিএলের দূষণ নিয়ে একাধিক বার প্রশ্ন তুলেছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। জরিমানা করা হয়েছে। এমনকী আদালতে মামলাও চলছে। গ্যাসচালিত ইউনিটের ফলে পরিবেশ দূষণ যেমন হবে না, তেমনই নিয়মমাফিক সংস্থার রোজগারও হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy