Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

আমানত ফেরায়নি লগ্নি সংস্থা, নালিশ দুর্গাপুরে

একটি বেসরকারি লগ্নি সংস্থায় টাকা রেখে বিপাকে পড়েছেন দুর্গাপুরের বেশ কিছু আমানতকারী। তাঁদের অভিযোগ, বেশ কয়েক মাস আগে মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও আমানত ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। বারবার আবেদন করেও কোনও ফল হয়নি। আলোচনায় বসে মীমাংসা করার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা সংস্থা পালন করেনি বলে তাঁদের দাবি। শেষ পর্যন্ত তাঁরা মহকুমা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানান। মহকুমা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিলে পুলিশ সংস্থার দুই কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। ‘সিল’ করে দিয়েছে সংস্থার দুর্গাপুরের অফিস।

দুর্গাপুর সিটিসেন্টার এলাকায় বন্ধ লগ্নি সংস্থার অফিস। —নিজস্ব চিত্র।

দুর্গাপুর সিটিসেন্টার এলাকায় বন্ধ লগ্নি সংস্থার অফিস। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৪ ০০:৪৭
Share: Save:

একটি বেসরকারি লগ্নি সংস্থায় টাকা রেখে বিপাকে পড়েছেন দুর্গাপুরের বেশ কিছু আমানতকারী। তাঁদের অভিযোগ, বেশ কয়েক মাস আগে মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও আমানত ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। বারবার আবেদন করেও কোনও ফল হয়নি। আলোচনায় বসে মীমাংসা করার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা সংস্থা পালন করেনি বলে তাঁদের দাবি। শেষ পর্যন্ত তাঁরা মহকুমা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানান। মহকুমা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিলে পুলিশ সংস্থার দুই কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। ‘সিল’ করে দিয়েছে সংস্থার দুর্গাপুরের অফিস।

ওই আমানতকারীরার জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে সংস্থাটি এই শহরে আমানত সংগ্রহ করছে। খবরের কাগজ ও টেলিভিশনে বিজ্ঞাপনে তাঁরা দেখেছেন, ফলের চাষ এবং বিভিন্ন কৃষিজাত পণ্য প্রস্তুত করে থাকে সংস্থাটি। ওই সংস্থার ফিক্সড ডিপোজিট, এমআইএস এবং রেকারিং ডিপোজিটে তাঁরা লগ্নি করেছিলেন। আগে মেয়াদ শেষে অর্থ ফেরত পেতে কোনও সমস্যা হত না। কিন্তু শেষ পাঁচ-ছয় মাস ধরে টাকা ফেরতের বিষয়টি অনিয়মিত হয়ে গিয়েছে বলে বেশ কয়েক জন আমানতকারীর অভিযোগ। তাঁরা অনেকেই টাকা ফেরত পাননি। সিটি সেন্টারের বেঙ্গল অম্বুজা এলাকায় সংস্থার অফিসে গিয়ে তাঁরা বারবার দরবার করেছেন। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

আমানতকারী কৌশিক রায়চৌধুরী, মিহিরকুমার ঘোষ, গৌতম চট্টোপাধ্যায়েরা অভিযোগ করেন, তাঁদের চাপাচাপিতে শেষ পর্যন্ত গত ১১ মার্চ আমানতকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন সংস্থার কিছু এজেন্ট এবং আধিকারিক। সেখানে তাঁরা প্রতিশ্রুতি দেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তাঁরা আলোচনার জন্য ডেকে পাঠাবেন। ওই আমানতকারীদের অভিযোগ, “সে দিন দিনভর অপেক্ষা করেও কেউ আসেননি। পরের দিকে এজেন্টরাও অনেকে আমাদের এড়িয়ে যেতে শুরু করলেন। শেষ পর্যন্ত আমরা বাধ্য হয়ে মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করি।” তাঁরা জানান, আমানতকারীদের অনেকেই বেশ দুঃস্থ। অনেক কষ্টে রোজগার করে তাঁরা লগ্নি করেছিলেন এই সংস্থায়। এখন টাকা ফেরত না পেয়ে মাথায় হাত। তাঁদের কথায়, “পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ওই সংস্থার বহু কৃষিজমি রয়েছে। সেখানে আম, আনারস ইত্যাদি ফলের চাষ হয়। সংস্থার তৈরি জ্যাম, জেলি, আচার বাজারে বিক্রিও হয়। এ সব দেখেই আমরা ওই সংস্থায় লগ্নি করেছিলাম। কিন্তু এখন হা-হুতাশ করছি।”

বৃহস্পতিবার দুপুরে সিটি সেন্টারে সংস্থার অফিসে গিয়ে দেখা গেল, বাইরে থেকে তালা ঝুলছে। আশপাশের বাসিন্দারা জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই অফিসটি বন্ধ রয়েছে। তার আগে মাঝে-মাঝেই আমানতকারীরা টাকা ফেরতের দাবিতে হইচই করতেন। তার পরে অফিসটিই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রায় ৫০ জন আমানতকারীর সই করা অভিযোগপত্র পাওয়ার পরে পুলিশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, ইতিমধ্যেই সংস্থার অফিসে অভিযান চালানো হয়েছে। অফিসটি ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে দুই কর্মীকে। বাকিরা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

investigation cheat fund durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE