জমা জল বের করতে কাটা হয়েছে লেনিন সরণি।—নিজস্ব চিত্র।
কোথাও মাটির তলা দিয়ে কেবল তার পার করতে, কোথাও বা বাড়ির সামনের জল নিকাশির জন্য পুরসভার অনুমতি না নিয়েই রাস্তা কাটা হচ্ছে দুর্গাপুর শহর জুড়ে। পুরসভার নজরদারির অভাবেই এমনটা হচ্ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের বড় অংশের অভিযোগ।
দুর্গাপুর পুরসভার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে, লেনিন সরণির এক জায়গায় একদল বাসিন্দা বাড়ির সামনের জমা জল বের করতে, বছর তিনেক আগে রাস্তা কাটেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেল। এলাকার একটি বেসরকারি কারখানার কর্মী ছোটন কর্মকারের অভিযোগ, “কাটা অংশটির পুরো সংস্কার হয় নি। মাঝেমধ্যে গর্ত ভরাট করা হলেও দিন কয়েকের মধ্যেই আবার রাস্তাটি বড় নালার আকার নেয়।” গর্ত বাড়তে থাকার ফলে রাস্তার পিচও নষ্ট হতে শুরু করেছে। এর জেরে যান চলাচলও সমস্যায় পড়ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান। লেনিন সরণী দিয়েই মোটরবাইকে যাতায়াত করেন দুর্গাপুর স্টেশন বাজার এলাকার বাসিন্দা দেবাশিস রায়। তাঁর আশঙ্কা, “রাতের অন্ধকারে গর্তটি বোঝা না যাওয়ায় যে কোনও দিন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।” একই অবস্থা ভগৎ সিংহ ক্রীড়াঙ্গন থেকে জওহরলাল নেহেরু রোডে যাওয়ার রাস্তাটিরও। ওই রাস্তাটিও ঠিকভাবে ভরাট না করায় গোটা রাস্তাটিঅ ভাঙতে শুরু করেছে।
তবে শুধু নিকাশির জন্যই নয়, বেশকিছু বেসরকারি সংস্থা কেবল তার পার করতেও রাস্তা কাটে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। গ্যামনব্রিজ সংলগ্ন দুর্গাপুর স্টেশন যাওয়ার রাস্তায় একটি বেসরকারি সংস্থার কেবল পার করার জন্য রাস্তার একাংশ কাটে। পরে সাময়িকভাবে জোড়াতালি দিতে সিমেন্ট দিয়ে গর্ত ভরাট করা হয়। কিন্তু ওই রাস্তায় অনবরত গাড়ি যাতায়াতের ফলে ফের গর্ত তৈরি হতে শুরু করে। গ্যামনব্রিজ এলাকার বাসিন্দা বিধান মজুমদার জানান, “সাময়িকভাবে সংস্কার করতে পুরসভার টাকা নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে যাতায়াতেরও অসুবিধা হচ্ছে। পুরসভার নজরদারি জোরদার না হওয়াতেই এমনটা চলছে।” একই অবস্থা দুর্গাপুরের বিধাননগর, সিটি সেন্টার এলাকার রাস্তাগুলিও। পুরসভার অন্তর্গত বীরভানপুর, রাতুড়িয়া, আমরাই মতো গ্রামগুলিতেও রাস্তার হাল কম-বেশি একই রকম।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি সুর চড়িয়েছে বিজেপি-ও। বিজেপি-র দাবি, মাস দু’য়েক আগে দুর্গাপুর স্টেশন বাজার এলাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানি রাস্তা কেটে কেবল তার বসাতে যায়। তখন রাজনৈতিকভাবে বিজেপি-র তরফে বাধা দেওয়া হলে তখনকার মতো রাস্তা কাটা বন্ধ হয়। বিষয়টি পুলিশের নজরে আনা হয়। বিজেপি-র দুর্গাপুর সাংগঠনিক জেলার ৩ নম্বর ব্লক সভাপতি কল্যাণ দুবে বলেন, “আমরা এলাকার বাসিন্দারা নিজেদের মতো করে নজরদারি চালায়। পুরসভারও উচিত নজরদারির ব্যবস্থা আরও জোরদার করা।” যদিও বাসিন্দাদের একাংশ রাস্তা কাটা বন্ধ রাখতে জোর দিতে চান নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধির উপর।
গোটা বিষয়টি নিয়ে পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। অমিতাভবাবু বলেন, “অনেক ক্ষেত্রেই রাস্তা কাটতে পুরসভার অনুমতি নেওয়া হচ্ছে না। এ ধরনের কাজ নজরে এলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy