বেনিয়মের অভিযোগকে কেন্দ্র করে ইসিএলে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগে স্থগিতাদেশ জারি করেছিল আদালত। এই মামলায় সিবিআইয়ের কাছে তদন্ত রিপোর্ট চাইল হাইকোর্ট। এই রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য হাইকোর্টের কাছে গত ৭ মার্চ দু’সপ্তাহ সময় চেয়েছে সিবিআই, জানিয়েছেন বেনিয়মের অভিযোগকারী দুই নিয়োগপ্রার্থীর আইনজীবী পার্থ ঘোষ।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের জুনে ২১৫ জন নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। তার ভিত্তিতে ২৫০৮ জন আবেদন করেছেন জানিয়ে প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয় সে মাসেই। কিন্তু তার কিছু দিন পরেই সংস্থার তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, প্রচণ্ড গরমের জন্য দৌড় পরীক্ষার দিন পিছিয়ে দেওয়া হল। আবেদনকারীদের জানানো হয়, যেন ইসিএলের ওয়েবসাইটে নজর রাখেন তাঁরা। সেখানেই পরবর্তী দিন ঘোষণা করা হবে। এর পরে সে বছর জুলাইয়ে ৫ কিলোমিটার দৌড়ের পরীক্ষার দিন ঘোষণা করা হয়।
দুই আবেদনকারী বিশ্বজিৎ মাজি ও কান্তি বাউরি অভিযোগ করেন, এ ক্ষেত্রে আবার আবেদন প্রার্থীদের একটি নতুন তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকায় দেখা গেল, ২৫০৮ জনেরই নাম রয়েছে। অথচ, সেখানে নতুন ১১ জনের নাম যোগ হয়েছে। বিশ্বজিৎবাবু, কান্তিবাবুদের অভিযোগ, “তালিকা খতিয়ে দেখলাম, আগের তালিকায় ১১ জনের নাম দু’বার করে লেখা ছিল। ওই কারচুপি করে রাখা জায়গায় নতুন ১১ জনের নাম ঢুকিয়ে পরের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।” তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, এর পরে ৫ কিলোমিটার দৌড়ের পরে ফের বিঞ্জপ্তি জারি করে জানানো হয়, এই দৌড়ে বেশির ভাগ প্রার্থীই নির্দিষ্ট লক্ষে পৌঁছতে পারেননি। যাঁরা পারেননি, তাঁদের জন্য আবার ১৬০০ মিটার দৌড়ের পরীক্ষা নেওয়া হল।
কান্তিবাবুদের অভিযোগ, “এর পরে লিখিত পরীক্ষার আগে ইসিএল সদর দফতরের এক আধিকারিক এক লক্ষ টাকা করে দিলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। আমরা তা দিতে অস্বীকার করি।” তাঁরা দু’জন ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর হাইকোর্টে নিয়োগে অনিয়ম ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। আদালত সে মাসের ২৪ তারিখ ইসিএলের এই নিয়োগে স্থগিতাদেশ জারি করে জানিয়ে দেয়, এই মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগ বৈধ গণ্য করা হবে না।
কান্তিবাবু ও বিশ্বজিৎবাবু চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সিবিআইয়ের কাছে এ বিষয়ে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান। বিশ্বজিৎবাবুদের দাবি, “আমরা ঘুষ চাওয়ার কথপোকথন রেকর্ড করে রেখেছি। আদালত এবং সিবিআইকে আমরা তা জমা দিয়েছি।” তাঁদের আইনজীবী পার্থবাবু জানান, আদালত ৭ মার্চ সিবিআইকে এক সপ্তাহের মধ্যে এ নিয়ে তাদের তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সিবিআইয়ের তরফে দু’সপ্তাহ সময় চেয়ে নেওয়া হয়েছে। ইসিএলের তরফে জানানো হয়, বিষয়টি বিচারাধীন। আদালত যেমন বলবে তেমন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy