দুর্ঘটনার পরে রাতারাতি সব হুকিং খুলে ফেললেন মামরা বাজারের ব্যবসায়ীদের একাংশ। যে সব দোকানে বেআইনি ভাবে হুকিং করে বিদ্যুৎ নেওয়ার ঘটনা চোখে পড়েছিল আগের দিন, সেগুলি বৃহস্পতিবার খুলে নেওয়া হয়েছে।
বিশ্বকর্মা পুজোর দিন সপরিবারে মামরা বাজারে গিয়েছিলেন বিধাননগরের শিল্পকাননের বাসিন্দা, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউআইটি-র ‘ট্রেনিং অ্যান্ড প্লেসমেন্ট’ অফিসার সত্যজিৎ মুখোপাধ্যায়। তাঁর ছেলে শুভায়ুকে সঙ্গে নিয়ে একটি বাসনের দোকানে যান র্যাক কিনতে। ওই দোকানের মালিক রাস্তার উল্টো দিকে গুদামে দোকানের এক কর্মীর সঙ্গে সত্যজিৎবাবুকে পাঠান র্যাক দেখতে। সেখানে র্যাক দেখার সময়ে তড়িদাহত হন সত্যজিৎবাবু। তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার পরে গিয়ে ডিপিএলের চার আধিকারিক ওই দোকানে তদন্তে যান। তাঁরা জানিয়েছিলেন, ওই গুদামে হুকিং করে বিদ্যুৎ নেওয়া হয়েছিল। দোকানের দুই মালিকই পলাতক। বৃহস্পতিবারও তাঁদের খোঁজ মেলেনি।
সে দিনই বিকেলে ওই বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছিল, ডিপিএলের প্রধান লাইন থেকে তার টেনে অনেক জায়গাতেই হুকিং করে বিদ্যুৎ নেওয়া হয়েছে। বাজারের ব্যবসায়ীদের একাংশও স্বীকার করেছিলেন, কিছু ব্যবসায়ী এ ভাবে বিদ্যুৎ নেন। তার জেরে তাঁরাও আতঙ্কে থাকেন। ক্রেতাদের অভিযোগ, উপযুক্ত নজরদারির অভাবেই এমন ঘটেছে।
ঘটনার পরপরই ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে ওই দোকানে তালা লাগিয়ে দোকানটি অনির্দিষ্ট কাল বন্ধ রাখার কথা জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি সাঁটিয়ে দেওয়া হয়। ডিপিএলের আধিকারিকেরা পুলিশকে জানান, বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হবে। কিন্তু নিউটাউনশিপ থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ডিপিএলের তরফে কোনও লিখিত অভিযোগ কেউ দায়ের করেননি। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গুদাম মালিকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, সরাসরি লাইন থেকে হুকিং নজরে আসেনি। গুদামের মালিক সরে পড়ার আগে হুকিং খুলে গিয়েছেন।
ডিপিএলের এক আধিকারিক বলেন, “প্রত্যক্ষ ভাবে হুকিং নজরে আসেনি। তাই আইনি জটিলতায় অভিযোগ জানানো হয়নি।” তবে তিনি জানান, এ দিন সগড়ভাঙা, গোপীনাথপুর ইত্যাদি এলাকায় বেশ কিছু বেআইনি বিদুৎ সংযোগ ছিন্ন করা হয়েছে। বাজার এলাকাতেও আরও অভিযান চালানো হবে বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এ দিনও মামরা বাজারের কয়েক জন ব্যবসায়ী বলেন, “লুকিয়ে-চুরিয়ে বিদ্যুৎ অনেকেই নেন। কালকের ঘটনার পরে বিপদ বুঝে অনেকে তার খুলে রেখেছেন। বাজার সমিতির পক্ষে সব সময় নজরদারি চালানো সম্ভব হয় না। তাই প্রশাসনেরই আরও বেশি উদ্যোগী হওয়া উচিত।” ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশিস ঘোষ বলেন, “আমরা একটি বৈঠক করেছি। তাতে ঠিক হয়েছে, ডিপিএলকে চিঠি দিয়ে অভিযান চালিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy