Advertisement
E-Paper

চড়েছে বাজারদর, তবু লক্ষীপুজোর বাজার সরগরম

শারদীয় পুজোর আমেজের মাঝেই ফের জমে উঠেছে শিল্পাঞ্চলের সব্জি ও ফলের বাজার। উপলক্ষ লক্ষ্মীপুজো। সব্জি, ফলের দাম বেশ চড়া হলেও সোমবার আসানসোলের বড় বাজার, বার্নপুরের ডেইলি মার্কেট বা দুর্গাপুরের চণ্ডীদাস, বেনাচিতি, মামরা, সিটি সেন্টার, স্টেশন বাজার সর্বত্রই উপচে পড়ছে ভিড়। বাজার ঘুরতে ঘুরতে দেখা গেল, পুজো উপলক্ষে আলু থেকে বেগুন, কুমড়ো সব সব্জির দরই বেশ চড়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৩৭
জমেছে বাজার। নিজস্ব চিত্র।

জমেছে বাজার। নিজস্ব চিত্র।

শারদীয় পুজোর আমেজের মাঝেই ফের জমে উঠেছে শিল্পাঞ্চলের সব্জি ও ফলের বাজার। উপলক্ষ লক্ষ্মীপুজো। সব্জি, ফলের দাম বেশ চড়া হলেও সোমবার আসানসোলের বড় বাজার, বার্নপুরের ডেইলি মার্কেট বা দুর্গাপুরের চণ্ডীদাস, বেনাচিতি, মামরা, সিটি সেন্টার, স্টেশন বাজার সর্বত্রই উপচে পড়ছে ভিড়।

বাজার ঘুরতে ঘুরতে দেখা গেল, পুজো উপলক্ষে আলু থেকে বেগুন, কুমড়ো সব সব্জির দরই বেশ চড়া। ফলের বাজারে গিয়ে নারকেলের দাম শুনে চমকে উঠলেন সিটি সেন্টারের বাসিন্দা মিলন দত্ত। তিনি জানান, এমনিতে নারকেল বিক্রি হয় ১৫-২০ টাকায়। সোমবার তা বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৪০ টাকায়। দুর্গাপুরের স্টেশন বাজার থেকেই প্রায় সব বড় বাজারে পাইকারি হারে সব্জি সরবরাহ করা হয়। সেখানে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, গত বছর বৃষ্টির জন্য সব্জির জোগানে ঘাটতি থাকায় লক্ষ্মীপুজোয় বাজারদর বেশি ছিল। কিন্তু এ বার পর্যাপ্ত যোগান থাকলেও দাম বাড়ার কারণ কী? ক্রেতাদের অভিযোগ, অবস্থা বুঝেই ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে রেখেছেন। সিটি সেন্টারের ডেইলি মার্কেটে বাজার সারতে এসে নন- কোম্পানি এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা বিমলেন্দু সরকারেরা ক্ষোভ উগরে দেন, “যার যেমন ইচ্ছে সে তাই দাম করছে। দেখার কেউ নেই।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আড়তদারও বলেন, “পুজোর বাজারে সবাই বেশি লাভ করতে চায়। আমরাও তাই করছি।” বেনাচিতি বাজারের খুচরো ব্যবসায়ী বিনোদ সাউ বলেন, “আমরা আড়তদারদের কাছে যে দামে কিনেছি সেই হারেই বিক্রি করছি।” পুজোর বাজারে বেশ ভালই লাভ হচ্ছে বলে স্থানীয় ব্যবসা।ীরা জানালেন। পুজো উপলক্ষে লক্ষ্মীর প্রতিমা ও পটও বেশ ভালই বিকোচ্ছে বলে জানান বিক্রেতা ষষ্ঠী পাল। আসানসোল শহরে কেনাকাটা চলে প্রধানত বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বড় বাজার এলাকায়। অস্থায়ী ফুলের বাজারের একপাশে পদ্মফুল থেকে ধানের শিস, দূর্বা, আমপল্লব প্রভৃতি পুজোর উপাচার সাজিয়ে বসেছেন হৈম কাড়ার। তিনি বলেন, “লক্ষ্মী পুজো সব বাড়িতেই হওয়ায় অন্য দিনের তুলনায় আজ বিক্রি অনেক বেশি হয়। লাভও বেশি হচ্ছে অন্যদিনের তুলনায়।’’ কৃষি বিপনন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “পুজো উপলক্ষে টানা ছুটি থাকে। তার পরেই লক্ষ্মীপুজো এসে যায়। ফলে বাজারে নজরদারি করার জন্য লোকজন মেলে না।”

বাজারদর চড়া হলেও শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দারা কোজাগরীর আরাধনায় কার্পণ্য করছেন না। ব্যাগ হাতে সব্জি বাছতে বাছতেই আসানসোলের কল্যাণ সেনগুপ্ত জানালেন, ঠাকুর পুজোয় অন্নভোগ দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তাই সব্জির দাম বেশি হলেও কিনতে হচ্ছে। ইস্পাতনগরীর বাসিন্দা তরুণ রায় সস্ত্রীক বেনাচিতি বাজারে এসেছিলেন কেনাকাটা করতে। তিনি বলেন, “বাড়িতে বরাবর লক্ষ্মী পুজো হয়। দাম যতই হোক কিছু করার নেই!” চণ্ডীদাস বাজারে সব্জি কিনতে এসে সোমনাথ দত্ত বলেন, “পুজোর ভোগ ও তরকারির জন্য সবজি কিনতে এসেছি। ফুলকপি, পটল, বেগুন, আলু, মুলো, বরবটি ছাড়া ভোগ রান্না হয় না। চড়া দাম। তাই পরিমাণে কিছু কম কিনছি।” বাজারে গিয়ে ভিড়কেও তোয়াক্কা করছেন না ক্রেতারা। সুভাষ রায়ের মতো অনেকেই দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলেন দশকর্মার দোকানের লাইনে। সুভাষবাবু বলেন, “এ বার ভিড়টা একটু বেশিই মনে হচ্ছে। তবুও পুজো থাকায় কিনতে তো হবেই।”

শিল্পাঞ্চলের পুজোর জমক মূলত নির্ভর করে কারখানাগুলির অবস্থার উপর। ইস্কো কারখানার আধুনিকীকরণের কাজ প্রায় শেষ। কর্মীদের বোনাসও হয়ে যাওয়ায় বার্নপুরের ডেইলি মার্কেটে সোমবারের কেনাকাটার মোজাজ তুঙ্গে ছিল। কিন্তু অন্যদিকে প্রায় ১১ বছর ধরে আসানসোলের রূপনারায়ণপুরের হিন্দুস্তান কেবলস কারখানার উৎপাদন বন্ধ। বেশ কয়েক মাসের বেতনও বকেয়া রয়েছে শ্রমিক কর্মীদের। একই অবস্থা দুর্গাপুরের এমএএমসি কারখানারও। তবুও বন্ধ কারখানার শ্রমিকেরাও সুদিন ফেরার আশায় যোগ দিয়েছেন পুজোয়। মামরা বাজারে সব্জি কিনতে এসেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা সৌরভ রায়। তিনি বলেন, “আবার যদি কারখানা খোলে তখন হয়তো আবার পরিস্থিতি বদলাবে।”

lakshmi puja puja shopping asansol durgapur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy